চট্টগ্রামেও দাম আকাশছোঁয়া

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  তামীম রহমান, চট্টগ্রাম

বিএনপি-জমায়াতের অবরোধ কর্মসূচির কারণে স্থানীয় পর্যায়ে যোগাযোগ স্বাভাবিক থাকলেও এলোমেলো হয়ে গেছে দূরপাল্লার যোগাযোগ। ফলে সবজিসহ নিত্যপণ্যের সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চট্টগ্রামের কাঁচাবাজার ও ভোগ্যপণ্যের আড়তে দাম এখন অনেক বেশি। পাইকারি ও খুচরা- দুই পর্যায়ে দাম বেড়েছে। এতে ক্রেতারা দুর্ভোগে পড়েছেন। পাইকারি পর্যায়ে সবজিভেদে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। কোনো কোনো পণ্য পাইকারিতে কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। আবার খুচরা পর্যায়েও দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিবহণের খরচ বৃদ্ধির কারণে পাইকারিতে দাম বেড়েছে। এর ফলে খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। বিক্রেতারা দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে একটিই বলছেন, তা হচ্ছে অবরোধের কারণে পণ্য পরিবহণে খরচ বেড়ে গেছে। চট্টগ্রাম নগরীর সবজির পাইকারি আড়ত রিয়াজউদ্দিন বাজারে দেখা যায় দাম চড়া। প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। বহদ্দারহাট, চকবাজারসহ আশপাশের কাঁচাবাজারগুলোতে প্রতি কেজি সবজি দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। অর্থাৎ, অবরোধের আগে যে সবজি প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হয়, তা এখন ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, সড়কে গাড়ি ভাঙচুর ও আগুনের ভয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রামে আসতে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া নিয়েছে পরিবহণগুলো। এই পরিবহণ ভাড়ার কারণেই বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম।

রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদাররা জানান, শীতের সময়ে আগাম সবজি নিয়ে অন্তত প্রতিদিন ২০টি ট্রাক বাজারে আসে। তবে অবরোধের কারণে কুষ্টিয়া, যশোর, নওগাঁ, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রামের দিকে ট্রাক আসতে পারেনি। অল্প পরিমাণ এলেও ট্রাকপ্রতি ভাড়া বেড়েছে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তার প্রভাব পড়েছে সবজির দামে। সব ধরনের সবজির দাম এখন আকাশছোঁয়া।

নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, কামাল বাজার ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সবজিভেদে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বরবটি, শিম, বেগুন, পটোল, মুলা, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, করলা ইত্যাদি সবজির দাম বেড়েছে।

খুচরাপর্যায়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। মাসের শুরুতে ক্রেতার আনাগোনা না থাকায় কিছুটা উদ্বিগ্ন বিক্রেতারাও। চকবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, খুচরা বাজারে দাম বেশি। আবার সরবরাহ কম। কাঁচা সবজি রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে এনেই বিক্রি করা হয়। সেখানে দাম বাড়লে খুচরাতেও এর প্রভাব পড়ে। বাজারে হঠাৎ দাম বাড়লে ক্রেতারা অল্প পরিমাণে সবজি কেনেন। যেহেতু সবজি পচনশীল পণ্য, তাই বিক্রি না হলে লোকসান গুনতে হয় ব্যবসায়ীদের।

নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় কাঁচাবাজার করতে আসেন জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, সবজি নয়; চাল, ডাল, তেলসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। রাজনৈতিক দলের আন্দোলন কর্মসূচির কারণে ক্রেতারা নাভিশ্বাস অবস্থায় আছেন। এই অবস্থা থেকে সহসা মুক্তি মিলবে বলে মনে হয় না। আমরা সাধারণ মানুষ অনেক বিপদের মধ্যে আছি।

একই বাজারের মুদি দোকানি ওমর ফারুক বলেন, অবরোধে স্থানীয় পর্যায়ে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু দূরপাল্লার ট্রাক চলেনি। তাই অন্য জেলার পণ্য সরবরাহ আড়তে তেমন ছিল না। এতে বাজারে দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়েই দাম বেশি রাখছি। এছাড়া উপায় নেই।