জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপ

১৮ দল অংশ না নিলেও প্রভাব পড়বে না ভোটে : ইসি

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আরিফুল ইসলাম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানালেও অংশ নিয়েছে আওয়ামী লীগসহ ২৬টি দল। এসব দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। অবশিষ্ট ১৮টি দল অংশ নেয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এসব দল সংলাপে অংশ না নিয়ে তারা তাদের দেউলিয়াত্বের পরিচয় দিয়েছে। যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা নিবন্ধিত সেই প্রতিষ্ঠানের আহ্বানে সংলাপে সাড়া না দেয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ।

ইসি সূত্র জানায়, বর্তমানে ৪৪ দল ইসির নিবন্ধিত। তাদের সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু তাদের মধ্যে বিএনপিসহ ১৮ দল আসেনি। তবে ইসি বলেছে, এসব দল সংলাপে না এলেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। যথাসময়ে বিধিমোতাবেক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাচন কমিশনার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, সংলাপে আমরা সবাইকে অমন্ত্রণ জানিয়েছি। এখন কে এলো কে এলো না, এটা দেখার বিষয় না। আমরা আইন অনুযায়ী সময় মতো নির্বাচন করব। ভোটের পরিবেশ অনুকূলে আছে। কিছু দল সংলাপে না এলে ভোটে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে এলে আরো ভালো হতো। এ কমিশনার আরো বলেন, নভেম্বরের ১৩ অথবা ১৪ তারিখ তপশিল দেয়া হবে। ভোটগ্রহণ ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুযারি শুরুতে হবে। তবে কমিশন সভায় তারিখ চূড়ান্ত হবে। নির্বাচন সম্পর্কিত বিশেজ্ঞরা বলেছেন, বিএনপিসহ যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না। তারা আবারও নির্বাচনি ট্রেন মিস করবে এবং তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে থাকবে। তারা মনে করছেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর এই ১৮ দলের মধ্যে অনেক দল নির্বাচনে আসতে পারে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা সবার সঙ্গে মতবিনিময় করতে চাই। তাই যারা সংলাপে অংশ নেয়নি, তারা ইচ্ছা পোষণ করলে তাদের কথাও শোনার চেষ্টা করব। সিইসি বলেন, আমরা কম সময় নিয়ে সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। সময়ের দ্রুততার কারণে কোনো দল আমাদের সংলাপে অংশগ্রহণ নাও করতে পারে। তবে তারা যদি ইচ্ছা পোষণ করেন, কমিশন তাদের কথা শোনার চেষ্টা করবে। কেন না আমাদের ইচ্ছে আমরা সবার সঙ্গে মতবিনিময় করতে চাই।

বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) সভাপতি এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইসির অধীনে নির্বাচন হবে, সরকারের অধীনে নয়। নির্বাচনের পরিবেশ ঠিক করতে কমিশনকে বলা হয়েছে। আমরা নির্বাচনে অংশ নেব।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক হয়, অবাধ ও সুষ্ঠু হয় এবং এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ যাতে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে ব্যাপারে কমিশনকে দায়িত্ব নিতে হবে। তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার জানিয়েছেন, নির্বাচনে জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য কমিশনকে আরো কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি আইভি আহমেদ বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিকে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি রয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনে পুরোপুরি অনুকূল পরিবেশ তেমন নেই। তবে সবসময় সম্পূর্ণ অনুকূল পরিবেশে নির্বাচন করা সেটিও সম্ভব নয়। তারপরও অনুকূল পরিবেশ না থাকলেও তার মধ্যদিয়ে আমাদের নির্বাচন করে যেতে হবে। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ইসির ওপর তাদের আস্থা রয়েছে। তরিকত ফেডারেশনের মুখপাত্র মোহাম্মদ আলী ফারুকী বলেন, সংবিধান যে ক্ষমতা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে তা প্রয়োগ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, এর আগে ১১টা নির্বাচন হয়েছে। সব নির্বাচনে ছোটোখাটো ভুল ছিল। আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে আগামী নির্বাচনে যেন কোনো ভুলত্রুটি না হয়। আইনের শাসন আমরা চাই। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে একটি অর্থবহ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।