ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘মমতাময়ী মা’ শেখ হাসিনা তোমাকে অভিবাদন

আবারও তুলে ধরলে গাজার শিশু ও নারীর করুণ চিত্র

আবারও তুলে ধরলে গাজার শিশু ও নারীর করুণ চিত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দেশে কিংবা বিদেশে যেখানে যে অবস্থায় নিষ্পাপ শিশু ও নিরাপরাধ নারী দুর্বিসহ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে, তিনি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি দেশে-বিদেশে যেখানে হোক, যে কোনো ফোরামেই হোক, বিপন্ন নারী ও অসহায় শিশুর কথা তুলে ধরতে ভুলে যাননি। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস হামলা চালানোর পর ইসরাইলি বিমান বাহিনীর হামলায় গাজায় প্রতিদিন অকাতরে নারী ও শিশু মারা যাচ্ছে।

ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। শিশুদের নিয়ে নারীরা জাতিসংঘ পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা পাচ্ছেন না। ইসরাইলি বিমান হামলায় তারা মারা যাচ্ছে। বিদ্যুৎব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নবজাতকদের অবস্থা আরো শোচনীয়। এসব হৃদয়বিদারক মর্মান্তিক খরবে প্রধানমন্ত্রীও মর্মাহত। ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়ে সেখানে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ত্রাণসামগ্রী গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় মিশরে রয়েছে। ইসরাইলি সৈন্যরা অবরুগ্ধ করে রাখায় গাজায় বাংলাদেশের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো যাচ্ছে না। গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলা শুরুর পর প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে যোগ দিতে বেলজিয়াম সফর করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ২৫ ও ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের বৈঠকে দেয়া ভাষণে ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজার নারী ও শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। তিনি গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বিশ্বের প্রথম কোনো নেতা হিসেবে তিনিই প্রথম গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলার নিন্দা জানিয়ে এই হামলা বন্ধে এগিয়ে আসতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদেও ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস করান। প্রধানমন্ত্রী গত সোমবার সউদি আরবে ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালেও গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নারী ও শিশুর প্রাণহানির নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ-বিরতি ও অঞ্চলটিতে অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন ‘গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও অবিলম্বে যুদ্ধ-বিরতির জন্য আমি সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই। এই ভয়াবহ যুদ্ধ, নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। তিনি তার ভাষণে আবারও গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর ইসরাইলি নৃশংসতার নিন্দা জানান।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাজার এ নৃশংসতা, ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অমানবিক নির্যাতনের শিকার ২ লাখ নারীর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এ নৃশংস ঘটনাগুলো আমাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মা এবং নারী ও শিশুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এটি মিয়ানমারের হাজার হাজার নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর নির্যাতনের দৃশ্যকেই ফুটিয়ে তোলে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা ফিলিস্তিনে অবিলম্বে সংঘাতের অবসান এবং সেখানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ- বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর অপরাধের বিচার অনুষ্ঠানের দাবি জানান। ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ শিশু ও ২ হাজার ৬৪১ নারী। আর আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার।

ইসরাইল হামাস শাসিত গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংসতা বেড়েছে। ক্যান্সার সেন্টার ও বিশেষায়িত শিশুকেন্দ্রও ইসরাইলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৯২ মেডিকেল-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। ৩২টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে। আর সবশেষ খবর অনুসারে গাজায় ১৬টি হাসপাতাল বন্ধ রয়েছে। খাবার সংকট তৈরি করতে বেকারিগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতাকে ইসরাইল সবুজ সংকেত হিসেবে মনে করে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান বাহিনীর বোমা বর্ষণে প্রতি ১০ মিনিটে একজন নিহত ও আহত হচ্ছে আরো ২ জন। ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজা উপত্যকায় বসবাস করেন প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত এই ভূখণ্ডের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ মানুষ জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। হামলার কারণে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমও ভেঙে পড়েছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৫৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার সংঘাত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, হাসপাতালগুলোতে আহতদের জায়গা সংকুলান হচ্ছে না, ত্রাণ বিতরণের সাথে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি প্রয়োজনের আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।

ইসরাইলি বিমান বাহিনীর হামলায় গত এক মাসে গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ১৫ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘ এরই মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতির সোচ্চার আহ্বান জানিয়েছে।

গাজা শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে জানানোর পর গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। সেই সাথে পরিস্থিতি বিবেচনায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর আরো জোর দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। গুতেরেস বলেন, গাজা শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে। প্রতিদিন হতাহতের ঘটনা ঘটছে। নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার ৮৯ জন রয়েছেন। জাতিসংঘের ১৮টি সংস্থা এক মাস আগে, দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও আগ্রাসন বন্ধ হয়নি। ইসরাইলি সেনারা বেসামরিক নাগরিক, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ ও গির্জাসহ আশ্রয়কেন্দ্রেও ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে, কেউ নিরাপদ নয়। ইসরাইল এবং হামাস যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপকেও প্রত্যাখ্যান করেছে।

ইসরাইল অবশ্য দাবি করেছে, গত ২৭ অক্টোবর গাজায় সম্প্রসারিত স্থলে অভিযান শুরু করার পর থেকে ৩১ সেনা নিহত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী সউদি আরবে তার ভাষণে সব অপরাধ, সহিংসতা, বৈষম্য ও নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ইসলামোফোবিয়াকে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন- এসডিজি-৫ পূরণের লক্ষ্যে লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারীদের ক্ষমতায়নের দিকে যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে। মুসলিম নারীরা যেন ইচ্ছামতো স্বাধীনভাবে জনসমক্ষে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। নারী ক্ষমতায়ন ও মূল স্রোতে নারীদের ভূমিকার উজ্জ্বল উদাহরণ বাংলাদেশ, বন্ধুপ্রতীম মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সাথে এ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা বিনিময়ে করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন তিনি।

ইসলামকে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, মহানবী হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লামের আহ্বানে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ছিলেন একজন নারী- বিবি খাদিজা। পবিত্র কোরআনের সূরা আন-নিসা’র আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন- ‘আর আল্লাহকে ভয় করো, যার নামে তোমরা পরস্পরের এবং রক্ত সম্পর্কের অধিকার চাও। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বদাই তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশে নারীর অধিকার ও লিঙ্গ সমতা রক্ষায় তাদের গর্বিত ঐতিহ্য রয়েছে। ইংরেজিতে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর, অর্ধেক তা করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নারী ও শিশুদের কল্যাণের প্রতি অধিকতার মনোযোগী। নারী ও শিশুদের কল্যাণে তিনি তার পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুসরণ করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমমর্যাদা নিশ্চিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে নারীদের জন্য ১৫টি সংরক্ষিত আসনের বিধান করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তার মেয়ে হয়ে নারী ক্ষমতায়নের এ কাজটি অব্যাহত রেখেছেন। তিনি নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫০টিতে উন্নীত করেছেন। জাতীয় সংসদে এখন ৭৩ নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। ফলে আমাদের দেশের নারীরা সব সময়ই আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক সংস্কার ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রথম সারিতে রয়েছেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা ও ক্ষমতাসীন দলের উপনেতা সবাই নারী। এছাড়া স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত রয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সব বাধা দূর করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রশাসন, বিচার বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্য সংস্থায় আমাদের নারীরা শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মেয়েরা পাবলিক পরীক্ষা, প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ ও জাতীয় পর্যায়ের খেলায় অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে নারীদের জন্য সুবিধাসহ সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নির্মাণ করছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিও আমাদের নারীদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের প্রমাণ বহন করছে। ‘আমাদের আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির প্রায় ৪৬ শতাংশ নারী কর্মী। নারী উদ্যোক্তারা কুটির, ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র শিল্পে বড় ধরনের অবদান রাখছেন। আইটি ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স এবং স্টার্ট-আপে রয়েছে নারীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। বর্তমান সরকার অর্থ, বাজার, ধারণা ও প্রশিক্ষণে নারীদের প্রবেশাধিকার বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।’ সরকারি ক্ষেত্রে ছয় মাসের বেতনের মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করা হয়। সরকারের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র, বিধবা, পরিত্যক্ত, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক নারীরা উপকৃত হচ্ছে। সরকার বিনামূল্যের আবাসন ও আশ্রায়ণ প্রকল্পে স্বামী ও স্ত্রী উভয়কে যৌথ মালিকানা দিচ্ছে, যাতে বিচ্ছেদ হলে সেটি স্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। যৌতুক, বাল্যবিবাহ ও সাইবার হয়রানির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হচ্ছে।

বাংলাদেশে এখন আইন অনুসারে সকল জাতীয় পরিচয়পত্রে মায়ের নাম ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষীরা গর্বের সাথে আফ্রিকায় জাতিসংঘের মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। এত গেল নারীর অগ্রগতি ও কল্যাণে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত রূপ। শিশুদের জন্যও বর্তমান সরকার অত্যন্ত সংবেদনশীল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে বর্তমানকে উৎসর্গ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সব শিশুর সমঅধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিশুর প্রতি সহিংস আচরণ এবং সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে সরকারের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বেসরকারি সংগঠনগুলোও কাজ করছে।

জাতীয় শিশু দিবসে ‘মুজিববর্ষে সোনার বাংলা, ছড়ায় নতুন স্বপ্নাবেশ; শিশুর হাসি আনবে বয়ে, আলোর পরিবেশ।’ এ ধরনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করার মধ্যদিয়ে শিশু ও তাদের অভিভাবকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নয় শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুরও ছিল অপরিসীম মমতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। বর্তমান সরকার উন্নয়ন ও সুরক্ষার বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে জাতীয় শিশু নীতি-২০১১, শিশু আইন-২০১৩, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ প্রণয়ন করেছে। ‘আওয়ামী লীগ সরকার প্রিয় মাতৃভূমিকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাস ভূমিতে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর। শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হচ্ছে।’ ‘শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করে তাদের ব্যক্তিত্ব গঠন, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং খেলাধুলার বিভিন্ন শাখায় শিশুদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।’ তবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ১৮ বছরের কম বয়সি শিশুদের কাজে নিয়োগ। আর এসব কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ একজন মমতাময়ী, মানবতার মা হিসেবে দেশ-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তোমাকে অভিবাদন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত