ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘ব্রিগেড ৭১’ আয়োজিত সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী

শেষ সন্ত্রাসী নির্মূল হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে

শেষ সন্ত্রাসী নির্মূল হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শেষ সন্ত্রাসী নির্মূূল হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। তিনি বলেন, ‘অবরোধ-হরতাল-কর্মসূচির নামে যারা গাড়ি-ঘোড়া পোড়ায়, মানুষের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করে তারা দেশ, জাতি ও সমাজের শত্রু। আমরা এদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। শেষ সন্ত্রাসী নির্মূল হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

মন্ত্রী গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ব্রিগেড ৭১’ আয়োজিত ‘ধর্মান্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী দলগুলোর রাজনীতি এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ব্রিগেড ৭১’ সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

‘একাত্তর সালে বঙ্গবন্ধু যেভাবে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি করার আহ্বান জানিয়েছিলেন, এখন আবার এই আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে’- উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘গর্তের মধ্যে যারা ঢুকেছে তাদের গর্ত থেকে বের করে এনে শায়েস্তা করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের পর মায়াকান্না করে, এতো গ্রেপ্তার কেন হচ্ছে- সেই কথা বলে। তাদের কাছে প্রশ্ন যে, কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি কি গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হতে পারে! গাড়ির মধ্যে হেলপার শুয়ে আছে গাড়ি চলছে না, সেই গাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। ২৮ অক্টোবর তারা পুলিশ হত্যা করল, পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালাল, ১৯টি অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিল, শতাধিক পুলিশ আহত হলো এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা পরিচালনা করল, ৩২ জন সাংবাদিক আহত হয়েছে। এগুলো যারা করে তারা তো জঘন্য সন্ত্রাসী, হিংস্র হায়ানার চেয়েও হিংস্র এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জনগণের দায়িত্ব এবং সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব¡। ‘ব্রিগেড ৭১’-কে অনুরোধ জানাব যে, আপনারা জনগণকে আরো সচেতন করে তুলুন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সবসময় সহযোগিতা করে এসেছে। সারা দেশে তারা সমাবেশ করেছে, সরকার নিরাপত্তা দিয়েছে। মাঝেমধ্যে নিজেরা মারামারি করেছে এর বাইরে গত ১৫ বছরে তাদের মিটিংয়ে একটা পটকাও ফোটেনি। অথচ আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুড়ে আওয়ামী লীগের ২২ জনকে হত্যা, ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছিল। আমার শরীরে এখনো ৪০-৪২টি স্পিøন্টার। অনেকের শরীরে শত শত স্পিøন্টার, কেউ কেউ পঙ্গু হয়েছে। বিএনপির তারা প্রকাশ্য জনসভায় হামলা চালিয়ে শাহ এসএম কিবরিয়াকে হত্যা, আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করেছে। শেখ হেলাল এমপি, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এমপির জনসভায় হামলা করে অনেক মানুষকে হতাহত করেছিল, কোটালিপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। এখনো তারা সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে, সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সাংবাদিক মোস্তফা হোসেইন উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধভিত্তিক আলোচনায় অংশ নিয়ে সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোশিয়েনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল নুর দুলাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ‘ব্রিগেড ৭১’ এর যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম রাজু, ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরদার, নৌ কমান্ডো মোশাররফ হোসেন, আতাউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল্লাহ ও সাংবাদিক শামীম আক্তার চৌধুরী প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির রূপরেখার ওপর আলোকপাত করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত