আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের

বিএনপি কাপুরুষের দল তাদের রাজনীতি করা শোভা পায় না

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি ভীরু-কাপুরুষের দল। তাদের তো রাজনীতি করা শোভা পায় না। বিএনপির লাফালাফি কই গেল? তারা এখন কোথায়? বাড়াবাড়ি কই গেল?

গতকাল বিকালে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি আজ প্রশ্ন রাখতে চাই, ৭ নভেম্বর কার দিন? বিএনপির...কী দিবস? জাতীয় দিবস? তাদের জাতীয় দিবসের কর্মসূচিও স্থগিত করে দেয় এ দল। আমি মিথ্যা বলছি? তাদের দিন, তাদের জাতীয় দিবস, তাদের বিপ্লব ও সংহতি দিবস। তারা তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেও সাহস পায় না। এ কাপুরুষদের রাজনীতি করা কি মানায়? তাদের আন্দোলন করার সাহস তো এখানেই বোঝা গেল!

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরিরা আজ কোথায়? তারা হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে চেপে বসেছে। জিয়াউর রহমান রাতের খাবার খেতে খেতে ফাঁসির আদেশ দিতেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর চলে গেল। আ-হা-রে কত স্বপ্ন, আমীর খসরু ২৮ তারিখে কর্ণফুলীতে ফেলে দেবেন, সেই ২৮ তারিখেই শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে যাওয়া টানেল উদ্বোধন করেছেন। এখন কোথায়? সব পালিয়েছে। নয়াপল্টনে দাঁড়িয়ে তারা বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি পালাচ্ছে, শেখ হাসিনা পালাচ্ছে। আপনারা কে, কোথায়? কেন আজ কারাগারে? যারা কারাগারে, তারা দায় অস্বীকার করতে পারবেন না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুলিশের সঙ্গে মারামারি বাধালেন, একজন পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। সেই সময় মির্জা ফখরুল ভাবলেন, আরে ঘটনা তো খারাপ। তখনই মির্জা ফখরুল সাহেব লাফ দিয়ে নিচে নেমে গেলেন। এদিকে তাকান, ওদিকে তাকান; গয়েশ্বর বাবু নাই। ওদিকে তাকান, আমীর খসরু নাই। গেটের ভেতর যত নেতা, নোমান সাহেবও নাই। বেচারা দিশাহারা হয়ে দৌড় যে দিছে, ডেমরার সালাউদ্দিনের দৌড়ের চেয়েও দ্রুত।

তিনি বলেন, হ্যান্ড মাইকে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন, তখন পুরো স্টেজ ফাঁকা। ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার পতন ডাকলেন, আর আপনাদের স্টেজেরই পতন হয়ে গেল। খবর নাই, পালায় অলিগলিতে, ঢাকা শহরের কোনো গলি দিয়ে ঢোকা যায় না, তারা যেভাবে পালাচ্ছে। এখানে পালায়, ওখানে পালায়, যার ঘরে গিয়ে পালায় সে বলে আমি তো আওয়ামী লীগ করি। এ রকম ঘটনা অনেক ঘটেছে।

তিনি আরো বলেন, একটি বাস পোড়াতে পারলে তিন হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। আগুন দিয়ে ফোন দিলেই মোবাইলে তিন হাজার টাকা চলে যাবে। এখন আবার সেটা ডাবল হয়েছে। কারণ, বেশকিছু গাড়ি পুড়িয়েছে আবার ধরাও পড়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা করতে তাদের নেতারাই শিখিয়ে দিয়েছে।

নিরীহ লোককে হয়রানি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি নিজেই বলেছেন যে, আমি খেয়াল রাখব। অপরাধী ছাড়া কোনো নিরীহ লোক যাতে ধরা না পড়ে। এতে বদনাম হয়। এ বদনাম আমরা ঘাড়ে নেব কেন? অপরাধী যারা তাদের শায়েস্তা করতে হবে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোন ইউনিয়ন, কোন দেশ বিবৃতি দিল তাতে কিছু আসে যায় না। আমার দেশের আইনে, আমার দেশের অপরাধীকে আমি বিচার করতে পারব না, এটা কোন গণতন্ত্র? কোথা থেকে এলো এ আদেশ? আমার দেশের অপরাধী, আমার দেশের খুনি অথচ বিচার করতে পারব না, তাকে জেলে পাঠাতে পারব না...। আদালত আছে, সে নিরাপরাধ হলে আদালত থেকে মুক্তি নেবে। আমাদের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা আছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭ নভেম্বর বিএনপির নাম্বার ওয়ান জাতীয় দিবস। এটা হলো তাদের উত্থান দিবস। সেই দিবস পালন করতে যাদের এত ভয়, তারা নাকি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করবে? তারা (বিএনপি) নিজেরাই যথেষ্ট নিজেদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য। এখানে আওয়ামী লীগকে লাগবে না। কর্মসূচি কোথায় তাদের? রাত্রে আবাসিক প্রতিনিধি ঘোষণা দিল যে, কর্মসূচি হবে না। এটাও বলল, জিয়াউর রহমানের কবরে যাওয়া হবে না। এ দলের কী করা উচিত? আওয়ামী লীগের এখনো ভয় দেখানোর সময় আসেনি, সবে শুরু হয়েছে। আমারও তো শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছি। এতেই ৭ নভেম্বর বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকা শহরে কয়েকটা মিছিল হচ্ছে দেখে ভয়ে নিজেদের কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছে। এরা কোন দল? এরা আন্দোলন করতে পারবে? এদের আন্দোলন ভুয়া। শেখ হাসিনাকে হটাতে গেলে আপনারাই হটে যাবেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।