ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচন নিয়ে উজ্জীবিত ইসি

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচন নিয়ে উজ্জীবিত ইসি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সঙ্গে বৈঠক করে উজ্জীবিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলগুলো নানা সংকটের কথা বললেও বৈঠকের পর সব অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে পুরো দেশ মাতোয়ারা হয়ে আছে। পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিদিন বক্তব্য হচ্ছে। একটা ডাইমেনশনও পেয়ে গেছে। তিনি জানান, ভোট পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন দেশও আসছে। পুরো জাতি তাকিয়ে রয়েছে জাতীয় নির্বাচনের দিকে।

বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের একটা কাজ হচ্ছে নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে যতদূর সম্ভব দৃশ্যমান করে তোলা, স্বচ্ছতা সৃষ্টি করা। স্বচ্ছতা সৃষ্টি করলে সম্ভাব্য অপপ্রচার ঢাকা পড়ে যাবে। স্বচ্ছতা মানে সত্যের স্বচ্ছতা, মিথ্যের স্বচ্ছতা। যদি অনাচার হয়, তুলে ধরতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা কমিশন থেকে দেখতে চাই-এমনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন আপনাদের প্রজ্ঞা দিয়ে যাতে সত্যিকার অর্থে নির্বাচনটা অবাধ নিরপেক্ষ হয়। আমাদের মেসেজটা হচ্ছে নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল করতে হবে। সুশৃঙ্খলা আমি একা করাতে পারব না, আপনাদের করতে হবে। ভোটের মূল কাজ নিয়ে সিইসি জানান, ভোটের মূল কাজটা ডিসি ও পুলিশ সুপারদের বের করতে হবে। সমন্বয় করে নির্বাচনটা তুলে আনতে হবে। ক্ষমতা শক্তি নয়, দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজটা করতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি ক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন হয়, তাহলে তা করতে হবে। আমাদের মূল কাজ হচ্ছে, জনগণের ভোটাধিকারের স্বাধীনতা যেন ব্যাহত না হয়। সবাই যেন ভোট দিতে পারে। ভোটের দিনের চিত্র পুরো জাতি দেখবে, পরিবেশ গণমাধ্যম তুলে ধরবে। ভোটার লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু ভোট কক্ষের ভেতরে যদি কেউ সিল মারতে থাকে, তাহলে আমাদের নিরপেক্ষতা ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যেতে পারে, কেন এটা হলো।

সিইসি জানান, জেলা প্রশাসকের রিটার্নিং কর্মকর্তা হলে তিনি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যেতে পারবেন, অন্যরা ভেতরে পরিবেশ ঠিক রয়েছে কিনা পর্যবেক্ষণ করবেন।

এদিকে নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। বৈঠক থেকে এসে ভোটের চূড়ন্ত প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে ইসি। চলতি সপ্তাহে কমিশন সভা ডেকে তপশিল দেয়া হবে।

আগামী ১৩ অথবা ১৪ তারিখ কমিশন সভা দিয়ে ওই দিন তপশিল ঘোষণা করা হতে পারে। আর ভোটগ্রহণ করা হবে ডিসেম্বর শেষে অথবা জানুয়ারির শুরুতে।

বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সাংবিধানিক রীতিনীতি ও বিধিবিধান অনুসরণ করে কমিশনকে সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন নির্বাহী বিভাগসহ জনগণের সক্রিয় সহযোগিতা।

রাষ্ট্রপ্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে এ লক্ষ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসঙ্গে চলে। নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের মতামতের প্রতিফলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন এবং প্রতিনিধির মাধ্যমেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়।মো. সাহাবুদ্দিন আশা করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সরকার নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা করবে। সাক্ষাৎকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।

বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সুশৃঙ্খলভাবে হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়ে তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই নির্বাচন যথাসময়ে হবে।

সিইসি বলেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতির কথা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি। তিনি সব শুনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এখন আমরা কমিশনে বসে চূড়ান্ত তালিকা ঠিক করে তপশিল ঘোষণা করব খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে।

জানা যায়, এরই মধ্যে নির্বাচনি দিন গণনা শুরু হয়েছে। আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে ভোট করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বর্তমান সরকারের অধিনে এবারও সুষ্ঠু ভোট করার প্রস্তুতি নিয়েছে ইসি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত