ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে সরকারের পতন সম্ভব নয় : শেখ হাসিনা

অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান
চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে সরকারের পতন সম্ভব নয় : শেখ হাসিনা

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দেশবাসীকে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র সরকারকে ব্যর্থ করতে নেমেছে। তারা কীভাবে সরকারকে পতন করবে? গোপন হামলার মাধ্যমে? চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে সরকারের পতন করা সম্ভব হবে না।

গতকাল বিকালে নরসিংদীর নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন উপলক্ষ্যে মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সমাবেশের আগে নরসিংদীবাসীর জন্য উপহার উল্লেখ করে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আপনারা যুগ যুগ ধরে দেখেছেন, কীভাবে মানুষের ওপর তারা অত্যাচার করে। ২০১৩ ও ১৪ সালে করেছে নির্বাচন বানচালের জন্য, এখন আবার একই উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে। মানুষজন হাট-বাজার দোকানপাট যানবাহন ব্যক্তিগত সম্পত্তি কোনো কিছুই রেহাই পাচ্ছে না।

অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসী যাকে যেখানে পাবেন, তাকে আগে ধরেন। কেউ যদি অগ্নিসন্ত্রাস করতে যায়, বাসে আগুন দিতে যায়, ওইগুলোকে ধরে ওই আগুনেই ফেলে দেবেন। তাহলে যদি ওদের শিক্ষা হয়, তাছাড়া ওদের শিক্ষা হবে না। বিএনপি-জামায়াত পুলিশের ওপর হামলা ও পিটিয়ে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও নির্যাতন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে এবং পুলিশ, হাসপাতালে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে, যা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দেখেছেন- ইসরাইলিরা প্যালেস্টাইনিদের ওপর কীভাবে আক্রমণ করছে। হাসপাতালে, মা বাচ্চাদের নিয়ে গেছে, যে মনে করেছে- হাসপাতালে কেউ আক্রমণ করবে না। ওই ইসরাইলের সেই হাসপাতালে বোমা মেরে নারী শিশুহত্যা করেছে। আর খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া চ্যালাপ্যালারা অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে গর্ভবতী নারীকে আক্রমণ করে। তাহলে কি এরা ইসরাইলের জারজ সন্তান কিনা, সেটাই আমার জিজ্ঞাসা।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখে বলেন, বিএনপি-জামায়াত ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা বন্ধ করা ছাড়া তারা এই অবরোধ করে, আর কি করতে পারবে? সরকার হঠাবে! কীভাবে হঠাবে? এই চোরাগুপ্তা হামলা করে সরকার হঠানো যায় না। মানুষ সঙ্গে না থাকলে আন্দোলন হয় না। ২ থেকে ৪টি চোরাগুপ্তা হামলা করে আর মানুষ মেরে ওরা এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। বিএনপি ও জিয়া পরিবার চায় না যে, মানুষ শিক্ষিত হোক। ওরা চায় না- আমাদের ছেলেমেযেরা লেখাপড়া শিখুক। তাই, আজকে এই নভেম্বর মাস, সামনে ইলেকশন। আগেভাগে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাসম্পন্ন হবে। সে ব্যবস্থা যখন নেওয়া হচ্ছে, বিএনপি দিচ্ছে অবরোধ, হরতাল আর পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করছে। সামনে আসার সাহস নেই। অলিগলি থেকে বের হয়ে বাসের ভেতর, স্কুটারে, অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিচ্ছে। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করছে, এমনকি অন্তঃসত্ত্বা মহিলা যে অ্যাম্বুলেন্সে সেটাও পুড়িয়ে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার সাক্ষরতার হার ৪৪ ভাগ থেকে ৭৬ দশমিক ৬ ভাগে ভাগে উন্নীত করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসী দল আর জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। তাদের কথা এদেশের মানুষ শোনে না। এক সময় এদের কথায় কিছু লোক আস্ফালন করে বেড়ালেও বিএনপির নেতৃত্ব শূন্যতার দিকে ইঙ্গিত করে তাদের নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টার কারণও সামনে আনেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে। যাকে তিনি পরিবারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দয়া করে নিজস্ব ক্ষমতাবলে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছেন। আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক জিয়া ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা-মামলা এবং মানি লন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

তিনি আগামী নির্বাচনে যাকে প্রার্থী করা হবে, তার পক্ষে দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন। এ সময় উপস্থিত লাখো জনতা দুই হাত তুলে সমস্বরে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দেয়।

সভায় আরো বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান প্রমুখ। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত