ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইসির নির্বাচনি অ্যাপ উদ্বোধন

ঘরে বসে হবে প্রার্থী হওয়ার স্বপ্নপূরণ

ঘরে বসে হবে প্রার্থী হওয়ার স্বপ্নপূরণ

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ উদ্বোধন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ কারণে ঘরে বসে এখন অনলাইনে মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। ফলে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাড়বে এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না চাইলেও তাদের অনেক নেতা দেশ-বিদেশ থেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন অনেক নেতা। নতুন অ্যাপের ফলে যে কোনো স্থান থেকে প্রার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মনোনয়ন ফরম পূরণ করতে পারবেন। ফলে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, মনোনয়ন সাবমিশন করতে গিয়ে শোডাউন করা হয়। এই শোডাউন কালচার বা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। যদিও সংস্কৃতিতে সংকটও হয়ে থাকে। এই সংকটে নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ হতে পারে। অনেক সময় সংঘাতও হতে পারে। মনোনয়ন সাবমিশন করতে গিয়ে অনেকে বাধাপ্রাপ্তও হয়। মনোনয়ন সাবমিশন করার পর চাপ প্রয়োগ করা হয় নমিনেশন প্রত্যাহার করার জন্য। এই যে অনাচারগুলো ভোটে হয়, কিন্তু অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে এই অনাচারগুলো কমে আসতে পারে। অনলাইন সাবমিশনের ফলে নির্বাচনব্যবস্থা আরো সহজ ও পরিশুদ্ধ হতে পারে।

অনলাইনে মনোনয়নপত্র সাবমিশন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, এটা ব্যবহার খুবই সহজ। আমরা বেশ কয়েকটি উপনির্বাচনে অনলাইনে সাবমিশন ব্যবহা করেছি, এটা কঠিন কিছু না। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। এটা অনেক আধুনিক হবে।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, প্রযুক্তির যে পরিবর্তন ৫০ থেকে ৬০ বছরে যা হয়েছে, এটা অবিস্মরণীয়। প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেকে মেলাতে যদি না পারি, তবে পিছিয়ে যাব। তিনি বলেন, আমার একটা অভিজ্ঞতা বলি। ৯৭ থেকে ৯৮ সালে আমি যখন কম্পিউটার ইউজ করতে শুরু করি। আমরা দেখছি, বিভিন্ন দেশ ও বিশ্বব্যাংক থেকে প্রতিনিধিরা আসতেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্যিকভাবে যাতে কম্পিউটারগুলো কেনা হয়। এর ফলে আমাদের প্রযুক্তি শেখাচ্ছে আর বলা হচ্ছে অনলাইন শপিং। অনলাইন শপিং বলতে বুঝতে পেরেছি কম্পিউটারে শপিং করা যাবে। কিন্তু সন্দেহে ছিলাম, এটা কীভাবে সম্ভব। আমি হয়তো এক কেজি গরুর মাংস ও রসগোল্লা কিনব; কিন্তু কীভাবে এটা সম্ভব। এটা কীভাবে আসবে- প্রিন্টার দিয়ে, না তার দিয়ে, না অন্যভাবে। লজ্জায় এই বিষয়ে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করি নাই লজ্জায়। তারের ভেতর দিয়ে দুই কেজি মাংস কীভাবে আসবে তা বুঝতে পারি নাই। কিন্তু ধীরে ধীরে এখন শিখে গেছি। আমি এখন অনলাইনে আমার সব ইউটিলিটি বিলগুলো পে করি।

তিনি আরো বলেন, বিগত ৫ থেকে ৭ বছর অনলাইন ব্যবহার করি এটা খুবই সহজ এবং স্বস্তিদায়ক। অনলাইন আমাদের জীবনকে সহজ করে দেয়। নির্বাচনের যে অ্যাপ উদ্বোধন করা হলো এটা স্বচ্ছতা প্রতিপাদনে খুব সহায়তা করবে। ভোটে দুই ঘণ্টা পরে আমি কি পেলাম, চার ঘণ্টা পরে কি পেলাম তা জানতে পারব। এই অ্যাপ স্বচ্ছতা সৃষ্টিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কাজেই একটু কষ্ট করে আমাদের শিখে নিতে হবে। কীভাবে আমরা ব্যবহার করব।

অনলাইন ভোটিং প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, এখনও ঘরে বসে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা পৃথিবীতে কোথাও চালু হয়নি। তবে বর্তমানে ভারত ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটিং চেষ্টা করছে। ওরা সফল হলে আমরাও প্রবর্তন করতে পারব। তবে কবে চালু হবে, তার নিশ্চিয়তা এখন দিতে পারছি না।

এদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার জন্য আরো অন্তত দুদিন অপেক্ষার কথা জানান, নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

তিনি বলেন, কমিশন বলেছেন, নভেম্বরের প্রথমার্ধে তপশিল ঘোষণা হবে। সুতরাং প্রথমার্ধের (১৫ নভেম্বর পর্যন্ত) দিন যেহেতু সামনে আছে, আপনারা অপেক্ষা করুন। এর আগে গত ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরার পর এখন তপশিল ঘোষণার বাকি রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত