চট্টগ্রামে হবে পাঁচ প্রকল্পের উদ্বোধন-মোড়ক উন্মোচন

* ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী * মাত্র ২০ মিনিটে পৌঁছা যাবে বিমানবন্দর * পরিপূর্ণতা পাবে বাণিজ্যিক রাজধানী

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সাইফুদ্দিন তুহিন, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামবাসীর জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। টানেল উদ্বোধনের স্বল্প সময়ের ব্যবধানে চালু হচ্ছে বড় তিনটি প্রকল্প। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত উড়াল সড়ক বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়েই বেশি আলোচনা। আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ উড়াল সড়ক উদ্বোধন করবেন। একই দিন প্রধানমন্ত্রী আরও দুটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়ন করা অন্য দুই প্রকল্প হচ্ছে নগরীর চন্দনপুরা থেকে কালামিয়া বাজার পর্যন্ত সংযোগ সড়ক বাকলিয়া এক্সেস রোড এবং ডিটি-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক। এক্সপ্রেসওয়েসহ তিন প্রকল্প উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আজ পতেঙ্গায় সুধী সমাবেশ হচ্ছে। আর সুধী সমাবেশের আয়োজন করেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএ। চট্টগ্রামে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানীতে পরিণত হচ্ছে বলে মনে করছেন নগরবাসী। এদিকে আজ চট্টগ্রাম নতুন নির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল বা পিসিটির উদ্বোধন করা হবে। পাশাপাশি বে টার্মিনাল মাস্টার প্ল্যানের মোড়ক উন্মোচন করা হবে। বন্দর কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

টানেল উদ্বোধনের পর আরো তিন প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে লোকজনের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্বোধনী আয়োজনের প্রস্তুত প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবীসহ এক হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেখানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। গণভবন থেকে যুক্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য একাধিক মাল্টিমিডিয়া স্ক্রিন স্থাপন করা হয়েছে।

এলিভিটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, মোট তিন প্রকল্প উদ্বোধন হবে। এর মধ্যে বড় প্রকল্প হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা উড়াল সড়ক। এটির পাশাপাশি আরো দুটি প্রকল্প উদ্বোধন হবে। আর পতেঙ্গায় গিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। সুধী সমাবেশের মতো অনুষ্ঠান হবে। এর চেয়ে বেশি কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজনের পরিকল্পনা নেই। এক হাজার অতিথির তালিকা আমরা করেছি। তাদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় ভেন্যুর আশপাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানবাহন চলাচল সীমিত রাখতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হলেও কিছু অংশের কাজ এখনো বাকি। তাই এটি পুরোপুরি খুলছে না। তবে এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামোর কাজ ৮৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত আছে। এর মধ্যে বাকি অংশের কাজ শেষ হবে। এরপরই পুরোপুরি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তবে মূল অবকাঠামো দিয়ে আপাতত সীমিত আকারে যানবাহন চলবে।

চলতি বছরের মাঝামাঝিতেই এক্সপ্রেসওয়ের শতভাগ সুফল পাবেন চট্টগ্রামবাসী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসন করতে ‘চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি’ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ১১ জুলাই।

২০১৮ সালের নভেম্বরে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ আরও ২ বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫৪ ফুট প্রশস্ত চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে আছে ২৪টি লুপ ও র‌্যাম্প এবং ৩৯০টি পিলার। নগরীর যানজট নিরসন ও বিমানবন্দর থেকে মূল শহরের যোগাযোগ সহজ করতে এ প্রকল্প ভূমিকা রাখবে।