ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল

মামলার জট নিরসনে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা

ভূমি সালিশি বোর্ড গঠনের দিকে ভূমি মন্ত্রণালয়

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

মো. খলিলুর রহমান বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৯ মার্চে সরকার তাকে পদোন্নতি দিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব করেছেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি বেশকিছু যুগোপযোগী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। সেখানে নিজের কাজের অগ্রাধিকার-চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সঙ্গে। সচিবালয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলোকিত বাংলাদেশের নিজস্ব প্রতিবেদক ফারুক আলম।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, ভূমি সংস্কার বোর্ড, ভূমি আপিল বোর্ড, ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও হিসাব নিয়ন্ত্রক (রাজস্ব) দপ্তর রয়েছে। এছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে কমিশনার, জেলা পর্যায়ে কালেক্টর (জেলা প্রশাসক), উপজেলা পর্যায়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি), ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদারগণ) ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রদানে নিয়োজিত রয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত হয়রানি নিরসন ও সংস্থাগুলোর সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিয়মিত কাজ করছে মন্ত্রণালয়টি। একইসঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের একটানা তিন মেয়াদে ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে সাফল্য অর্জনে সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

আলোকিত বাংলাদেশ: ভূমি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অনলাইনভিত্তিক করা হয়েছে। এরপরও মানুষের কাছে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পৌঁছানোর সমস্যাটা কোথায়?

মো. খলিলুর রহমান: সারা দেশে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি ও জনগণের মাঝে সহজেই ভূমি ব্যবস্থাপনা সেবা পৌঁছে দিতে অনেক আগেই ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। তবে এবার ডিজিটালের গণ্ডি পেরিয়ে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়টি। আর এই স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনার পরিধি ও সেবার মান বাড়ানোসহ নানা বিষয় নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। স্মার্ট ভূমি সেবা প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং নাগরিকরা অনলাইনে বিভিন্ন সেবা নিচ্ছে। তবে এখনো যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে, তার মধ্যে প্রধান সমস্যা হলো দেশের অনেক নাগরিক এখনো স্মার্ট ভূমিসেবা সম্পর্কে অতটা সচেতন নন, তাদের মধ্যে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা। সবাই এক রকমভাবে তথ্যপ্রযুক্তিতে অভ্যস্ত নন। ফলে অনেকেই মধ্যস্বত্বভোগকারীর স্মরণাপন্ন হচ্ছেন। আবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ের অফিসগুলো যেমন ইউনিয়ন ভূমি অফিস, সেটেলমেন্ট অফিসগুলোতে জনবলের সংকট রয়েছে। এরইমধ্যে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করছি খুব শিগগিরই আমরা দৃশ্যমান ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পারব।

আলোকিত বাংলাদেশ: ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে এলে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না, জনমনের এই ধারণার যথার্থ রয়েছে কি না?

মো. খলিলুর রহমান: মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের সেবা পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা অর্জনের ওপর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করে। সেদিক থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া একটি চলমান প্রক্রিয়া। অনলাইনে ভূমিসেবা নিতে নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত কোনো অর্থের প্রয়োজন হয় না, কারণ সম্পূর্ণ পেমেন্ট সিস্টেম এখন ক্যাশলেস করা হয়েছে। এরপরও ভূমি সংক্রান্ত কোনো সেবা নিতে গিয়ে মানুষ সচেতনতার অভাবে মধ্যস্বত্বভাগীদের দ্বারস্থ হয়ে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করছেন। আবার অনেক সময় মাঠপর্যায়ে সেবাপ্রদানকারী অফিসগুলো থেকেও ভোগান্তির শিকার হন। এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে নিয়মিতভাবে মনিটরিং ও পরিদর্শন করে সব অনিয়মের বিষয়ে নিয়মিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যদি কোনো নাগরিক হয়রানির শিকার হন, সেজন্য ভুক্তভোগী সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনে বা ১৬১২২ নম্বরে কল করে অভিযোগ করতে পারেন। সেই অভিযোগ অনুযায়ী মন্ত্রণালয় প্রতিনিয়ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ভবিষ্যতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত সিস্টেম চালু হলে আরো কঠোরভাবে মনিটরিং, জবাবদিহিতার সুযোগ তৈরি হবে ও অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে।

আলোকিত বাংলাদেশ: ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বহু বছর ধরে কয়েক লাখ মামলা ঝুলছে। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে?

মো. খলিলুর রহমান: আইন মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী State Acquisition and Tenancy Act সংশোধন করা হয়েছে। ফলে সার্ভে ট্রাইব্যুনালের মামলা বেশি হলে সার্ভে ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি অন্যান্য বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ, সিনিয়র সহকারী জজ, সহকারী জজ এসব মামলা ট্রায়াল করতে পারবেন। এছাড়া ভূমি সংক্রান্ত মামলা ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিধান করা হয়েছে। এতে ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলোর নিষ্পত্তির হার বাড়বে। এছাড়া আপিল ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা জজরা ট্রায়াল করতে পারবেন, এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে আশা করা যাচ্ছে খুব দ্রুতই আইন মন্ত্রণালয় সব জেলায় ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে মামলার জট কমানো সম্ভব হবে।

আলোকিত বাংলাদেশ: ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন কোন পর্যায়ে?

মো. খলিলুর রহমান: State Acquisition and Tenancy Act সংশোধনের পর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সারা দেশে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে যত দিন পর্যন্ত জনবল নিয়োগ হচ্ছে না, তত দিন বর্তমান জনবল দিয়েই আদালত পরিচালনা করা যাবে।

আলোকিত বাংলাদেশ: ভূমি সংক্রান্ত কিছু কিছু বিরোধ আদালতের বাইরে মিটলে সময় ও খরচ দুটোই বাঁচবে? সে ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি সালিশি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেবে কি না?

মো. খলিলুর রহমান: ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে উত্তরাধিকার সূত্রে, বণ্টননামা, বন বিভাগ কিংবা খাসের সঙ্গে ব্যক্তির মালিকানা জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনা লাখ লাখ রয়েছে। ভূমি জরিপের বিভিন্ন স্তর আছে, সেই স্তরগুলো জালিয়াতি কিংবা ভুল হওয়ার কারণে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মানুষ মামলা করছেন। তবে এখন ভূমি অপরাধ ও প্রতিকার আইন কার্যকরের মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে চলে আসা মামলাগুলো সহজেই নিষ্পত্তি হবে। ভূমি সংক্রান্ত প্রাথমিক অভিযোগ সহজেই যাতে নিষ্পত্তি হয় সেজন্য ‘ভূমি সালিশি বোর্ড’ গঠনের প্রয়োজনীয়তা আছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই বোর্ড পরিচালনায় সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামো থাকবে এবং ভূমি সংক্রান্ত প্রাথমিক বিরোধগুলো সহজেই সমাধান হবে। ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার মতোই সালিশি বোর্ডের মাধ্যমে জনগণ সহজেই সুফল পাবেন।

আলোকিত বাংলাদেশ: বর্তমানে দেশে প্রায় ৪০ লাখ মামলার মধ্যে ৬৫ শতাংশ ভূমি সংক্রান্ত? মামলার হার বাড়ছে কেন?

মো. খলিলুর রহমান: ভূমির মূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূমির মালিকানা বিভাজনও বেড়েছে। ভূমি নিয়ে ওয়ারিশদের মধ্যে বিরোধ কিংবা পাড়া প্রতিবেশীর সঙ্গে সীমানা বা মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব ইত্যাদি বেড়েছে। এছাড়া খাস ভূমি বা অর্পিত সম্পত্তি বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি দখল করে জাল দলিল বানিয়ে আদালতে মামলা করছে। এসব কারণেও ভূমি সংক্রান্ত মামলা বেড়েছে। তবে মামলা কমাতে ডিজিটাইজেশনের পাশাপাশি সমন্বয়ের কাজ চলছে। সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয় স্মার্ট কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই সিস্টেমে মাঠপর্যায়ের সব স্তরের অফিসগুলো যুক্ত থাকবে এবং প্রতিটি মামলা মনিটর করা যাবে। এতে মামলার নথি হারানো বা নথি তলবে দীর্ঘসূত্রিতা বা শুনানিতে অহেতুক বিলম্ব, এসব সমস্যার সমাধান হবে। এর ফলে ভূমি সংক্রান্ত সব মামলা সমন্বিতভাবে দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।

আলোকিত বাংলাদেশ: অফলাইন থেকে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগান্তকারী উদ্যোগ। এ ব্যাপারে কিছু বলুন?

মো. খলিলুর রহমান: ভূমি মন্ত্রণালয় বর্তমানে সারা দেশে ডিজিটাল ভূমি জরিপের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সারা দেশে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪১২টি মৌজা ম্যাপ শিটকে ডিজটাইজ করা হচ্ছে। এই ম্যাপের উপরে গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমের স্যাটেলাইট ইমেজ বসিয়ে প্লটভিত্তিক জমির শ্রেণির একটি ডাটাবেইজ তৈরি করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ স্মার্ট নামজারি সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে। এর ফলে কৃষি জমি সংরক্ষণ বা রাতারাতি অবৈধভাবে জমির শ্রেণি পরিবর্তনরোধ করা সম্ভব হবে।

আলোকিত বাংলাদেশ: স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা বলতে কি বোঝানো হচ্ছে?

মো. খলিলুর রহমান: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা হিসেবে বলছেন- পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনা মানুষের হাতের মুঠোয় থাকতে হবে। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে যেন মানুষ ‘এক ক্লিকেই’ ভূমি ও ভূমিসেবা সংক্রান্ত সব তথ্য জানতে পারেন। সেই লক্ষ্য নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় এগিয়ে যাচ্ছে। ভূমি সংক্রান্ত সব সেবা একটি ছাতার নিচে আনার জন্য ল্যান্ড সার্ভিস গেটওয়ে বা LSG প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখানে নাগরিক একটি মাত্র ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ভূমি সংক্রান্ত সব সেবা নিতে পারবেন। স্মার্ট ভূমিসেবার অংশ হিসেবে স্মার্ট নামজারি, স্মার্ট ভূমি উন্নয়ন কর, স্মার্ট ভূমি নকশা, স্মার্ট ভূমি পিডিয়া, স্মার্ট ভূমি রেকর্ড সিস্টেম, স্মার্ট কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রভৃতি চালু হচ্ছে। এরইমধ্যে ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনে মানুষের হয়রানি ও ভোগান্তি অনেকটাই কমেছে, সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে কয়েকগুণ। অফলাইন থেকে অনলাইনে আসার কারণে শুধু ভূমি উন্নয়ন করই বৃদ্ধি পেয়েছে ২৭০ শতাংশ। ডিজিটাল ভূমিসেবা বাস্তবায়নে ভূমি মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশজুড়ে শতভাগ অনলাইনে নামজারি কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে প্রত্যেক মাসে অনলাইনে প্রায় আড়াই লাখ নামজারি আবেদন বা মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। এখন ভূমির মালিক ভূমি অফিসে না এসেই নামজারি সম্পাদন, ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান এবং খতিয়ান গ্রহণ করতে পারছেন।

আলোকিত বাংলাদেশ: ভূমি মন্ত্রণালয়ের সামনের চ্যালেঞ্জ ও লক্ষ্য কি?

মো. খলিলুর রহমান: ভূমি ব্যবস্থাপনা স্মার্ট করতে নিয়মিত কাজ করা হচ্ছে। তবে এই স্মার্ট কার্যক্রম শহর ও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষিত মানুষ সহজে সেবা নিতে পারলেও, সেই তুলনায় স্বল্প শিক্ষিত বা অনগ্রসর মানুষ সেভাবে সেবা নিতে পারছে না। সেজন্য স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা অনলাইনভিত্তিক বিষয়টি গ্রামাঞ্চলের অনগ্রসর বা সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য ভূমিসেবা সহায়তা কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে প্রযুক্তির পাশাপাশি স্মার্ট সেবা গ্রহণ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দিতে হচ্ছে। মানুষ যত বেশি প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং স্মার্ট ভূমিসেবা লাভের পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন হবেন, তত বেশি মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য কমে যাবে। আর লক্ষ্য হিসেবে- ২০২৬ সাল নাগাদ ভূমি নিয়ে নতুন করে মামলা-মোকদ্দমা তেমন একটা দায়ের হবে না, সীমানা বিরোধ হবে প্রায় শূন্য, নাগরিকদের প্রয়োজন ছাড়া ভূমি অফিসে যেতে হবে না, এনআইডি দিয়েই নাগরিকের জমির সব তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়াও যেসব এলাকায় একবার ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হবে, সেখানে ভবিষ্যতে আর জরিপ করার প্রয়োজন পড়বে না।