ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর

চার দফা অবরোধে সারা দেশে ১৩৭ যানবাহনে আগুন

চার দফা অবরোধে সারা দেশে ১৩৭ যানবাহনে আগুন

বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা নাশকতা, সংঘর্ষের পর চার দফা অবরোধের মধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে ৯৪ বাসসহ ১৩৭ যানবাহনের অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১৫৪টি অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ঢাকায় বেশি হলেও অগ্নিকাণ্ড কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনা শূন্য ছিল সিলেটে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানানো হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক ১৫৪টি আগুন, ঢাকা সিটিতে বেশি। দেশের ২৫টি জেলায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ৩৯ জেলায় কিছুই ঘটেনি। আর জেলার হিসেবে সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা গাজীপুরে। এই সময়ে দিনের চেয়ে রাতেই বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। গড়ে দিনে পাঁচটি করে বাস পোড়ানো হয়েছে। এসব আগুনের ঘটনায় সারা দেশে পাঁচজন আহতের তথ্য পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের মধ্যে দুইজন ফায়ার সার্ভিস (২৮ অক্টোবর মারধরের শিকার)। পোড়ানো হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের একটি পানিবাহী গাড়িও।

গতকাল সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক সারা দেশে মোট ১৫৪টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি, ১৩ নভেম্বর ৭টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক অগ্নিকাণ্ডে মোট ১৩৭ যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বাস ৯৪টি, মাইক্রোবাস তিনটি, প্রাইভেট কার দুটি, মোটরসাইকেল আটটি, ট্রাক ১৩টি, কাভার্ড ভ্যান আটটি, অ্যাম্বুলেন্স একটি, পিকআপ দুটি, সিএনজি দুটি, নছিমন একটি, লেগুনা একটি, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি একটি, পুলিশের গাড়ি একটি। এর বাইরে বিএনপি অফিস পাঁচটি, আওয়ামী লীগ অফিস একটি, পুলিশ বক্স একটি, কাউন্সিলর অফিস একটি, বিদ্যুৎ অফিস দুটি, বাস কাউন্টার একটি, শোরুম দুটি পুড়ে যায়। তালহা জানান, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক গড়ে দিনে পাঁচটি করে বাস পোড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে দেখা গেছে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায়, এছাড়া দেশের ২৫টি জেলায় আগুনের ঘটনা ঘটে। তবে ৩৯ জেলায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক কোনো অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ ফায়ার সার্ভিস পায়নি। দেশের সকল বিভাগে উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও সিলেট বিভাগে কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৮২টি, ঢাকা বিভাগে ৩৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৯টি, বরিশাল বিভাগে ছয়টি, রংপুর বিভাগে ছয়টি, খুলনা বিভাগে দুটি, ময়মনসিংহ বিভাগে একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে সিলেট বিভাগে উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক অগ্নিকাণ্ডের কোন সংবাদ পায়নি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। গাজীপুরে ১৫টি, চট্টগ্রামে আটটি, নারায়ণগঞ্জ ছয়টি, বগুড়া পাঁচটি, মানিকগঞ্জ চারটি, ফরিদপুর চারটি, লালমনিরহাট চারটি করে আগুনের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক দিনের বেলা থেকে রাতে (সন্ধ্যা ৬টা-সকাল ৬টা) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটেছে। ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত দিনে ৬১টি ও রাতে ৯৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আরো দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমে সারাদেশে পাঁচজন (ফায়ার সার্ভিস ২+৩ সাধারণ) আহত উদ্ধার করা হয়। নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত