ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতির উদ্দেশে ভাষণে সিইসি

৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন

৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ভোটের তপশিল ঘোষণা করেন। এদিকে তপশিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনমুখী দলগুলো প্রার্থী বাছাইয়ে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। অনেকে বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল হালনাগাদ করছেন। আগেভাগেই সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১০টি বুথে মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হবে। আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির কথা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম শুরু করবেন। এদিকে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমান সংসদের জাপার এমপিরা নির্বাচনি ব্যস্ততায় সময় পার করছেন। বিএনপি দলীয়ভাবে এই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিলেও দলটির অনেকে নির্বাচনে অংশ নিতে অগ্রহ প্রকাশ করছেন।

তপশিল ঘোষণার সময় সিইসি সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি সংবিধান ও আইনের আলোকে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে একযোগে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাতিল হলে এর বিরুদ্ধে আপিল ও আপিল নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। প্রচারণার জন্য ২২ দিন সময় রয়েছে। নির্বাচনে ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার ও ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী গত ৩১ অক্টোবর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। চলতি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। যার ফলে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। সেই নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপি অংশগ্রহণ করে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। ভবনের সামনে মোতায়েন করা হয় পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার বাহিনী। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরেও পুলিশ বাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। পোশাকধারী নিরাপত্তা বাহিনীর বাইরেও সাদা পোশাকে সরকারের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, তপশিল ঘোষণা হয়েছে এখন শুরু হবে মনোনয়ন ফরম বিক্রি। এর আগে নিজের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে দৌড়ঝাঁপ করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা যেমন দলের অভ্যন্তরীণ চ্যানেলে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি ব্যানার, ফেস্টুন টানিয়ে নিজ নিজ মনোনয়ন প্রত্যাশায় এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। তবে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা না দেওয়ায় দলটির নেতাদের মনোনয়ন প্রত্যাশার প্রচার চোখে পড়েনি।

এদিকে জাতীয় পার্টির এমপিরা নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, বর্তমান সংসদ সদস্য ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রচারণায় আধিক্য দেখা যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে দেওয়াল ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পোস্টার, ব্যানার টানিয়ে প্রচারণা করতে দেখা গেছে নেতাদের। এদিকে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়কেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। তবে এ লক্ষ্যে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলছে। এজন্য দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা না থাকলেও ভেতরে ভেতরে কাজ শুরু করেছে হাইকমান্ড। দলটির নেতারা বলছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত