নির্বাচনি আমেজে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ

আজ নৌকার মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাহাত হুসাইন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর পরই সারাদেশে উজ্জীবিত হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ভোটের লড়াইয়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে দলটি। এরই মধ্যে ভোটকে স্বাগত জানিয়ে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় আনন্দ মিছিল করছে নেতাকর্মীরা। সারাদেশের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ঢাকায় আসারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদিকে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি তপশিল প্রত্যাখ্যান করেছে। সংবিধানের আলোকে ভোটে অংশ না নেওয়ার কথায় অনড় রয়েছে। বিএনপি নেতারা সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার করার কথা বলছে।

জানা গেছে, তেজগাঁওস্থ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে আজ নৌকার মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। এর আগে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা করবেন তিনি। আগামীকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দলীয় মনোনয়নেরপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার কাজ পুরোধমে চালু হবে। এবার অনলাইন মনোনয়নপত্র বিতরণ করবে দলটি। মনোনয়নপত্রের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। অটটি বিভাগের জন্য মাট ১০টি বুথ থাকবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য দুটি বাড়তি বুথ বানানো হয়েছে। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বুথগুলোর জন্য এরই মধ্যে আলাদা আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে ১৪টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপকমিটিগুলো হলো, দপ্তর উপ-কমিটি, নির্বাচন কমিশন সমন্বয়কবিষয়ক কমিটি, নির্বাচন সম্পর্কিত আইন সহায়তা উপকমিটি, সংস্কৃতি ও সামাজিক ক্রীড়া উপকমিটি, পেশাজীবী সমন্বয়ক উপকমিটি, মিডিয়া উপকমিটি, বিদেশি মিশন উপকমিটি, প্রচার উপকমিটি, লিয়াজোঁ উপকমিটি, পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ উপকমিটি, আইটিবিষয়ক উপকমিটি, ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটি, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সমন্বয় উপকমিটি এবং অর্থ উপকমিটি।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় কাজ শুরু করেছেন। পোস্টার-ব্যানারে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন তারা। যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তৃণমূলের কর্মী ও জনসাধারণের সঙ্গে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় চাইছেন নৌকায় ভোট।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, তপশিল ঘোষণার পর থেকে গ্রামগঞ্জ-শহরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনি আমেজ শুরু হয়েছে। তপশিলকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে মিছিল করেছে। নির্বাচন কেউ প্রতিহত করতে পারবে না।

নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপশি বিএনপির হরতাল-অবরোধ নিয়েও সর্তক রয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। সূত্র জানায়, সারাদেশে নির্বাচনি জোয়ার তুলতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপির চোরাগুপ্তা হামলা থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের আরো বেশি সতর্ক অবস্থা পাহারা দিতে বলা হয়েছে। দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়াও নিদের্শনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি আমরা শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ চলমান রাখব। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘাটানো বিএনপি-জামায়ায়াতের পুরোনো অভ্যাস। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের অভায়রণ্য বানাতে দিতে পারি না। এজন্য বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিবৃত করতে আমরা জিরো টলারেন্স নীতির অবলম্বন করব।

আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, বিএনপি দেশবিরোধী কার্যক্রম করে। তারা অবরোধ-হরতাল ডেকেছে, কিছুই তো হলো না। তাদের অবরোধ কার্যকর হচ্ছে না। বিএনপি-জামায়াত দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চায়। তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, এটি তাদের বিষয়। বাংলাদেশে সংবিধান আছে, সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন। বিএনপির সঙ্গে দেশের মানুষের কোনো সর্ম্পক নেই। বিএনপি হচ্ছে দেশের জন্য আপদ আর জামায়াত হচ্ছে বিপদ। তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না।

দলটির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদকক সুজিত রায় নন্দী আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপশি সারাদেশের জনগণ ভোটের উৎসবে শামিল হতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের মানুষ বিএনপির জ্বালাওপোড়াও ও আগুন সন্ত্রাসের সমর্থন করে না। বিএনপি হচ্ছে অনুন্নয়ন আর সর্বনাশের সমার্থক। তাদের সহিংতার জবাব দেশের মানুষ দেবে।