ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

নতুন করে সংলাপের সুযোগ নেই ইসির

নতুন করে সংলাপের সুযোগ নেই ইসির

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে নতুন করে সংলাপ বা সমঝাতার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তপশিল ঘোষণার পরও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে বিভিন্ন মহল থেকে রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপের সুযোগের কথা বলা হলেও সংলাপের বিষটি নিয়ে আর ভাবছে না সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

ইসি সূত্র জানায়, তপশিলের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে কয়েকবার সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু অনেক দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। এখন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় ইসির পক্ষে তপশিলের পর সংলাপ আয়োজন করা সম্ভব নয়। ইসির সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে ভোটের ব্যবস্থা করবে ইসি। ইসি চায় সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তবে রাজপথের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জানিয়েছে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। আর সে কারণে শেষ পর্যন্ত যেসব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তাদের নিয়ে নির্বাচন করবে ইসি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাচন কমিশনার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আমরা চাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। কিন্তু কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে, আমাদের পক্ষে জোর করে তাদের নির্বাচনে আনা সম্ভব নয়। তাছাড়া সাংবিধানিকভাবে আমাদের দায়িত্ব আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন করা, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। নির্বাচনে কে আসবে, কে আসবে না- সেটি দলগুলোর ব্যাপার। তপশিলের পর এখন ইসি নতুন করে সংলাপ আয়োজন করবে কি না, এমন প্রশ্নে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের আর সংলাপে ডাকার সুযোগ নেই। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে সংলাপ-সমঝোতা করলে সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা তো চাই নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক।

সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের সংলাপে ৪৪ দলের মধ্যে ২৬টি সাড়া দিয়েছিল। এ দলগুলো নির্বাচনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া ইসির সংলাপ বর্জন করা বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলে নিবন্ধিত ৪৪ দলের মধ্যে ২৮ দল সরাসরি আাগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া তপশিল প্রত্যাখ্যান করা ১৬টি দলের মধ্যে অনেক দল গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলে এবার নির্বাচনে নিবন্ধিত বেশিরভাগ দল অংশ নিবে।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তপশিল ঘোষণার পর সংলাপের আর কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, যারা গণতন্ত্র চর্চা করে, তারা সংলাপ চায় না, এমন কথা বলতে পারে না। কিন্তু একটা সময় আছে। তপশিলের পর কেমনে সংলাপ করবেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, উন্নয়নের রোল মডেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দেশে সন্ত্রাসীদের জায়গা হবে না। দেশের মানুষ অপকর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন ছাড়া অন্ধকার গলি দিয়ে ক্ষমতায় আসা যাবে না। জনগণ তা মেনে নেবে না। জনগণ অন্যায় হরতাল-অবরোধ মেনে নেবে না। জনগণের ভোটে শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন।

তিনি বলেন, যারা মানুষ হত্যা করে, তাদের সঙ্গে সংলাপ হবে না। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে। যারা নির্বাচনে আসবে, তাদের যেমন অভিনন্দন- ঠিক তেমনি যারা বর্জন করবে, তাদেরও অভিনন্দন। সময়মতো নির্বাচন হবে এবং জনগণ ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করবে।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপে যাবে না।

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত এরই মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেটিকে ভারত সমর্থন করে, সেই আশ্বাসও পাওয়া গেছে।

ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচিই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাতিল হলে এর বিরুদ্ধে আপিল ও আপিল নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। প্রচারণার জন্য ২২ দিন সময় রয়েছে।

সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী গত ৩১ অক্টোবর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। চলতি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। যার ফলে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত