ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ উপকূল অতিক্রম

ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ উপকূল অতিক্রম

বঙ্গোপসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে অগ্রভাগ খেপুপাড়ার পাশ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করেছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। ঝড়ের বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার ছিল। ঝড়ের কেন্দ্র উপকূল থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। সাগর উত্তাল থাকায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। তবে সন্ধ্যার পর ঘূর্ণিঝড় বিপৎসীমা অতিক্রম করে। যার ফলে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টি হয়। পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা লকক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল জোয়ারে প্লাবিত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গতকাল বরিশাল ও খুলনায় দমকা হাওয়াসহ ভারি বর্ষণ হয়। বিপাকে পড়ে খেটে খাওয়া মানুষ। স্থবির হয় পড়ে জনজীবন। বরিশালে সকাল থেকে ভারি বর্ষণ ও দমকা হাওয়া শুরু হয়েছিল। নগরের সদর রোড, নবগ্রাম রোড, নিউ সার্কুলার রোড পানিতে তলিয়ে যায়। মানুষের চলাচল থমকে যায়। ঝড়টি ক্রমশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় বরিশাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরিশালের বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ভুঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আব্দুর রাজ্জাক ভুঁইয়া বলেন, নৌযান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছিল। তবে বরিশাল নদীবন্দরে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।

এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের নদীবন্দরে এসে ফিরে যায়। ভোলার উদ্দেশে নদীবন্দরে আসা যাত্রী হাফিজা বেগম বলেন, মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলাম। বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়ে নদীবন্দরে এসে দেখি সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ। বাধ্য হয়ে আবার মেয়ের বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। আরেক যাত্রী মো. আবির বলেন, ‘জরুরি কাজে মেহেন্দীগঞ্জের ভাসানচরে যেতে নদীবন্দরে এসেছিলাম। ঘাটে এসে দেখি লঞ্চ চলছে না। মিধিলির প্রভাবে খুলনায় গতকাল সন্ধ্যায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টিপাত ৮ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার ছিল।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি মোকাবিলায় সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত