ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে : প্রধানমন্ত্রী

নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে : প্রধানমন্ত্রী

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দেশবাসীর দোয়া চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা চাই জনগণের এই ভোটের অধিকার অব্যাহত থাকবে এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে। গতকাল ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন বানচালের জন্য যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে তাদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। যারা সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বানচালের চেষ্টা করছে তাদের সম্পর্কে জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। যেসব রাজনৈতিক দলের জনগণের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস নেই এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে সুসংগঠিত নয়, তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। নির্বাচন বানচাল একটি দেশের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হতে পারে।

পাশাপাশি যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকের দিনে আমাদের আহ্বান অনেক কষ্টে অর্জিত এই গণতান্ত্রিক ধারা যেন কেউ ব্যাহত করতে না পারে। ভোটের অধিকার, দেশবাসীর অধিকার। ভোট দিয়ে তারা তাদের পছন্দমতো নেতা নির্বাচন করবে, যারা সংসদে বসবে, আইন পাস করবে, রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।

সরকার প্রধান বলেন, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে জীবন ও সম্পদের ক্ষতির হয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে জীবন ও সম্পত্তি ধ্বংস করা কোন ধরনের রাজনীতি? ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। গণতন্ত্রের এই ধারাবাহিকতার কারণে অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন সম্ভব হয়েছে। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যার মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে তাদের প্রতিহত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আমি দেশের জনগণকে তাদের প্রতিহত করার জন্য অনুরোধ করব। হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরিবেশ ও কর্মকাণ্ড ধ্বংস করা হচ্ছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াত জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আমোদ-ফূর্তি করে। কেউ যদি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে এবং অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে যায়, তাহলে তা তাদের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না।

দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের আগে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা মনোনয়ন ফরম নিচ্ছেন, তারা সবাই যোগ্য, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আগামী নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের কাজ। অনুষ্ঠানের শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়। গোপালগঞ্জ-৩ আসনে শেখ হাসিনার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের ও সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র তোজাম্মেল হক টুটুল, প্রধানমন্ত্রীর আসনের দায়িত্বপ্রপ্ত নেতা শহিদুল্লাহ খন্দকার। এর আগে গণভবন থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন শেখ হাসিনা। পরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে সরকারি গাড়িতে করে বঙ্গভবনে যান তিনি। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রির বুথ পরিদর্শন করেন। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রির জন্য দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আটটি বিভাগের জন্য ১০টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। দলীয় প্রার্থীরা আগামী ২১ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টার মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। আগ্রহীরা দলীয় মনোনয়নের জন্য রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্থাপিত নির্দিষ্ট বুথ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দলীয় কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলা থেকে বিতরণ করা হচ্ছে এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের প্রার্থীদের অফিসের তৃতীয় তলা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় সব বিভাগের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় কার্যালয়ে অতিরিক্ত জনসমাগম ছাড়াই নিজেদের অথবা প্রার্থীর প্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। আবেদনপত্র সংগ্রহের সময় একজন প্রার্থীকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে। ফটোকপিতে মোবাইল নম্বর, প্রার্থীর আগের তিনটি পদ এবং বর্তমান সাংগঠনিক পরিচয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত