ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মধ্যস্থতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার

‘সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি’র কাছাকাছি হামাস-ইসরাইল

গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার ছাড়াল
‘সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি’র কাছাকাছি হামাস-ইসরাইল

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরাইলের তীব্র লড়াইয়ের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় জিম্মি মুক্তির আলোচনায় শেষ পর্যন্ত অগ্রগতির লক্ষণ দেখা গেছে। কয়েক সপ্তাহের পরোক্ষ আলোচনার পর গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল হারজোগ ইঙ্গিত দিয়েছেন হামাসের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, এ সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জিম্মি মুক্তি পাবেন বলে আশা করা যায়। গত ৭ অক্টোবর সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গাজার ক্ষমতাসীন সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। ওই দিন স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইসরাইলে ঢুকে শত শত ইসরাইলিকে হত্যা এবং ২৪২ জনের বেশি ইসরাইলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে হামাস। এই হামলার পর গাজায় তীব্র আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। প্রথমে বিমান হামলা চালানো হয়, পরে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলাও শুরু করা হয়। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন গাজা উপত্যকা থেকে হামাসকে নির্মূল করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।

ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলছে, গত মাসের শেষের দিকে ইসরাইলি ট্যাংক ও সৈন্যরা গাজায় হামলা চালিয়ে গাজা শহরের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্বের বিশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ৩ দিনের বিরতির বিনিময়ে ৫০ জিম্মিকে মুক্তির চুক্তিতে রাজি হামাস দেড় মাসে ইসরাইলে ১ হাজারের বেশি গোলা ছুড়েছে হিজবুল্লাহ।

তবে হামাস ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গাজা শহরের কিছু অংশ, জাবালিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এবং বিচ শরণার্থী শিবিরসহ ঘনবসতিপূর্ণ উত্তরাঞ্চলে গেরিলা ধাঁচের যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে হামাস যোদ্ধারা।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত মাইকেল হারজোগ এবিসি নিউজের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরাইল আশাবাদী যে ‘আগামী কয়েক দিনে’ হামাসের হাত থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জিম্মি মুক্তি পাবে।

এর আগে, গত ১৫ নভেম্বর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা উপত্যকায় ৩ দিনের বিরতির বিনিময়ে ৫০ জিম্মিকে মুক্তির শর্তে ইসরাইল-হামাসের মধ্যে এক চুক্তিতে পৌঁছাতে চান কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা। আলোচনার বিষয়ে অবগত কাতারের এক কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির ওই সময় গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতির সাধারণ রূপরেখায় রাজি হয়েছে। কিন্তু ইসরাইল এখনও এই চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছে। গত রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, জিম্মিরা কখন মুক্ত হতে পারেন, তা বলার মতো অবস্থায় আমি নেই।

গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার ছাড়াল : গাজায় ইসরাইলি হামলায় মরদেহের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিনই সেখানে হতাহতের ঘটনা সামনে আসছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। খবর বিবিসির।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পরই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। প্রতিদিনই সেখানে হামলা চালিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে। এ থেকে বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ২ হাজার মানুষ চাপা পড়েছে বলেও আশঙ্কা।

এদিকে ইসরাইলের হামলায় গাজায় আর কত বেসামরিক নাগরিক নিহত হবে এই প্রশ্ন রেখেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভলকার তুর্ক। গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিশু, নারী ও পুরুষদের মুখে যে যন্ত্রণা, আতঙ্ক এবং ভয় তৈরি হয়েছে, তা সহ্য করার মতো নয়।

হাসপাতালের নিচে টানেল ইসরাইলের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার প্রধান হাসপাতাল আল-শিফার অভ্যন্তরে টানেলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে ইসরাইলি বাহিনী। কিন্তু ইসরাইলের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুর্শ।

তিনি জানান, ইসরাইলিরা গত ৮ দিন ধরে হাসপাতালটিতে অবস্থান করলেও এখন পর্যন্ত কিছুই খুঁজে পায়নি। ইসরাইল বহু আগে থেকেই দাবি করে আসছিল যে, গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালের নিচে হামাসের কমান্ড সেন্টার ও টানেল রয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এই দাবি বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত