সংবাদ সম্মেলনে ইসি আলমগীর

অযৌক্তিক কারণে প্রশাসনের কাউকে বদলি করা হবে না

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

অযৌক্তিক কারণে প্রশাসনে কাউকে বদলি করা হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। গতকাল নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, অযৌক্তিক কারণে কাউকে বদলি করব না। তবে যদি যৌক্তিক কোনো কারণ থাকে, অফিসার নিরপেক্ষ নন, তার আচরণ ও কাজে প্রমাণ হয়েছে, তখন বদলি করব। যেমন জামালপুরের একজন জেলা প্রশাসককে আমরা বদলি করেছি, ওই সময় সিডিউল ঘোষণা হয়নি। উনি একটি অনুষ্ঠানে একজন রাজনৈতিক দলের এমপির পক্ষে কথা বলেছেন। তখন তাকে বদলি করেছি। প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য রদবদল করবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, অনেকে নিজেদের ভাবনা থেকে এগুলো বলেন। আইনের ব্যাখ্যাটা হলো আরপিও অনুযায়ী পুলিশের কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার এবং এর নিচে যত কর্মকর্তা আছেন, তারা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া বদলি হতে পারবেন না। সরকার চাইলে এদের বদলি করতে পারবে না। সবাই আমাদের অধীনে এসেছে, এ আইনটি আপনারা কোথায় পেলেন? যদি এটা দেখাতে পারেন তাহলে আমরা এর উত্তর দিতে পারব।

তিনি আরো বলেন, যদি নির্বাচন কমিশনের কাছে মনে হয়, কোনো বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর আচরণ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিপক্ষে, তখন নির্বাচন কমিশন সে বিভাগ বা কর্মকর্তাকে বদলি করতে পারে। রিটার্নিং অফিসার যাদের নিয়ে নির্বাচন করবেন অর্থাৎ প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, এদের জেলার বাইরে বদলি করা যাবে না। পুরো সরকারি আইন ও রাষ্ট্র আমাদের অধীনে এসেছে, এটা আপনাদের কে বলেছে? এটা কোথায় পেয়েছেন। টকশো দিয়ে দেশ চলে না। সংবিধানে আছে, নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য। আরওপিওতে আছে নির্বাচন কমিশন কোনো সংস্থা ও বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য।

রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা রদবদল কেন করব? একটা যৌক্তিক কারণ বা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে। যদি অভিযোগ থাকে, এ কর্মকর্তা নিরপেক্ষ নন বা অমুকের পক্ষে কাজ করছেন, যদি সেই প্রমাণ থাকে; তখন আমরা ব্যবস্থা নেব। এছাড়া এত হাজার হাজার কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে প্রশাসনে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দেশ পরিচালনায় অথবা নির্বাচন পরিচালনায় যে একটা বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে, এ দায়িত্ব কে নেবে? এখন কোন যুক্তিতে আমরা সবাইকে বদলি করব? একটা যুক্তি তো থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, বদলি করলে তাদের টিএ বিল দিতে হবে, এই বিলের টাকাটা কে দেবে? প্রচুর টাকা লাগবে, কয়েকশ’ কোটি টাকা টিএ বিল লাগবে। আপনারা জানেন, একজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে তার ফ্যামিলির যাওয়া-আসার খরচ ও মালামাল পরিবহণের খরচ দিতে হয়। অনেক টাকা দিতে হয়। তারপরে বাসা পরিবর্তন করতে হয়। নতুন অফিসার এসে বলবে বাসায় রং করো, তার একটা খরচ আছে। কারণ, আগের বাসায় তিনি থাকবেন না। এই টাকা কে দেবে? মুখ দিয়ে বদলি বললেই হয় না। বদলি করতে টাকা লাগে। হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই বদলি করব যদি তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে এবং প্রমাণ পাই। বিরোধী দল অভিযোগ করছে সরকার নিজের মতো প্রশাসন সাজিয়ে রেখেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, এই অভিযোগ আমি ১৯৭০ সাল থেকে শুনে আসছি। আমি তখন ছোট ছিলাম, প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র। তখন ইত্তেফাক পত্রিকা পড়েই দেখতাম এসব অভিযোগ। এর পরের যত নির্বাচন বাংলাদেশে হয়ে এসেছে, এ ধরনের অভিযোগ শুনে এসেছি। এ অভিযোগ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে।