ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন

জাতীয় নির্বাচন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে : সিইসি

জাতীয় নির্বাচন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে : সিইসি

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বাইরে থেকেও ‘থাবা’ পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এটিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা (বিদেশি শক্তি) থাবা বিস্তার করে রেখেছে। আমাদের অর্থনীতি, আমাদের ভবিষ্যৎ, অনেক কিছুই রক্ষা করতে হলে এই নির্বাচনটাকে ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল করতে হবে।

গতকাল নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এসব কথা বলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে দেশে এখন যে বিতর্ক, সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে নির্বাচনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। নির্বাচনের ফেয়ারনেসকে উপলক্ষ্য করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিভক্ত হয়ে গেছে, এটি কাঙ্ক্ষিত ছিল না।

যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে আমাদের কমান্ড করতে পারে, আমরা তাদের পাল্টা সেভাবে কমান্ড করতে পারি না’ মন্তব্য করে সিইসি বলেন, ‘আমাকে বাঁচাতে হলে, আমার জনগণকে বাঁচাতে হলে, আমার গার্মেন্টসকে বাঁচাতে হলে, আমার সাধারণ জনগণকে বাঁচাতে হলে, যে দাবিটা আমাদের জনগণের এবং পাশাপাশি বাইরের (বিদেশিদের)... ওরা খুব বেশি দাবি করেনি, ওদের একটাই দাবি- বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার হতে হবে। কোনোরকম কারচুপির আশ্রয় নেওয়া যাবে না।

সিইসি বলেন, নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা চোখে দেখা যায় না। এক্ষেত্রে পাবলিক পারসেপশন জরুরি। জনগণকে বলতে হবে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। সাধারণভাবে জনগণ যদি এটি বলে, তাহলে সেটি হবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে নির্বাচনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। নির্বাচন নিয়ে যে বিতর্ক এখন দেশে, সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এই নির্বাচনের ফেয়ারনেসকে উপলক্ষ্য করে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিভক্ত হয়ে গেছে। এটি কাঙ্ক্ষিত ছিল না। সেজন্যই বলা হয় ক্রেডিবল ইলেকশন। ইলেকশন জিনিসটা কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য, চোখে দেখা যায় না, যাবেও না।

তিনি বলেন, তারপরও বলা নির্বাচন ক্রেডিবল, ফ্রি হয়েছে কি না, ফেয়ার হয়েছে কি না। এই পাবলিক পারসেপসনের কোনো মানদ- নেই। তবুও জনগণকে বলতে হবে নির্বাচন ফ্রি এবং ফেয়ার হয়েছে। সার্বিকভাবে যদি জনগণ বলে থাকেন যে এবারের নির্বাচনটা ফ্রি ফেয়ার এবং ক্রেডিবল হয়েছে, তাহলে এটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আমরা একটা ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল ইলেকশন চাচ্ছি।

৫০ বছরের নির্বাচনি সংস্কৃতির বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমান রাজণৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সিইসি জানান, নির্বাচন নিয়ে দেশ সংকটে আছে; বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সকলকে সমভাবে দায়িত্বশীল হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গণতন্ত্রে আমরা স্থিরভাবে এগুতো পারেনি। সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য সবাইকে সমভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বিচারিক হাকিমদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, সিল মারাটা নির্বাচনের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। পেশিশক্তির ব্যবহার করা, কালো টাকা ব্যবহার করা এবং কারচুপি করা, দীর্ঘদিন ধরে চর্চার মাধ্যমে একটা অপসংস্কৃতির চর্চা হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমরা নিরন্তর চেষ্টা করছি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি- নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশন যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।

সিইসি জানান, ২১ দিনের আগে প্রচারণা করতে পারবেন না। হয়তো সভা করতে পারবে। প্রচারের সময় ডাবল এটেনশন দিতে হবে। এর আগে যে কোনো প্রচারণা রকম করতে পারবেন না। ৩০০টি নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি প্রথমবারের মতো করা হয়েছে।

এতে প্রমাণ হয়েছে সত্যিকার অর্থে আমরা ভিজিল্যান্সটা চাচ্ছি। বিচারকরা যেভাবে সাহসী হয়ে ভিজিল্যান্স করতে পারবেন, অনেকে সেটা করতে পারবেন না। দেশের গণতন্ত্র রক্ষার্থে বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, সাহসিকতা দিয়ে যতদুর পারেন সাহায্য করবেন। আমরা দেখতে চাই ভোটাররা আসছেন। ভোটারতের কেউ বাধা দিচ্ছেন না। আমরা দেখতে তারা ভোটাররা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। লাইনটা যেন চলমান থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যেন দাঁড়িয়ে না থাকে। তারপর তারা ভোট দিয়ে বের হয়ে আসছেন কি না।

তিনি জানান, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তাদের সহায়তা ছাড়া নির্বাচন কমিশন এককভাবে নির্বাচন করে না, করতে পারে না। সকলের আন্তরিক ও সৎ সাহহসিক সহায়তা আমাদের লাগবে। এজন্য আমরা আশা করব, সবাই চোখ, কান খোলা রেখে সৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত