দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

কাঙ্ক্ষিত পর্যবেক্ষক পাচ্ছে ইসি

* নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে আমরা বাধ্য : সিইসি * গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় ইইউ

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক পাওয়া বিষয়ে সব সঙ্কা কেটেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। এরইমধ্যে ৯০ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আগ্রহ প্রকাশ করে ইসিতে আবেদন করেছ। আগামী ৭ ডিসেম্বর আবেদন করার শেষ সময়। আর এরমধ্যে হয়তো আরো কয়েকশ’ বিদেশি পর্যবেক্ষক আবেদন করতে পারেন বলে মনে করছে সাংবাবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বৈঠক করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এই বিষয়টা আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের স্পষ্ট করে বুঝিয়েছি।

সিইসি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলিসহ ৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন। এটাকে আমরা বলি ইইউ ডেলিগেশন। তারা আগেও একাধিকবার এসেছেন। তাদের একটা এক্সপার্ট ইলেকশন পর্যবেক্ষণ টিম আসবেন বলে জানিয়েছেন। এরইমধ্যে চারজন এসেছেন। তারা দীর্ঘ সময় আমাদের নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছেন। আমাদের প্রস্তুতিটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটা তারা জানতেন না। তারা আজো (গতকাল) আসেন। এর মধ্যে আমাদের কি কি অগ্রগতি হয়েছে সে অগ্রগতিগুলো আমরা তাদের জানিয়েছি। আমরা আগের মতোই স্পষ্ট করে জানিয়েছি, নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার, পিসফুল এবং ক্রেডিবল যাতে হয়, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

প্রশাসন নিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি, আমাদের কমিশনাররা বিগত দুই সপ্তাহ ধরে বাইরে বাইরে ঘুরেছেন এবং তারা জনগণ ও প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবহিত করেছেন। যাতে করে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিকে সমন্বিত করে যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনটা নিশ্চিত হয়। তারা আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এটা আমরা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনো মতবিরোধ থাকে, বিভেদ-বিভাজন থাকে সেখানে কোনোভাবেই আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারি না বলে জানান তিনি।

ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় ইইউ। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক বিস্তারিত মতবিনিময় হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তার টিম খোলামেলা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছি। আমরা আশাকরি গণতান্ত্রিক গ্রহণযোগ্য ও অংগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। পুরো বিশ্বও এটি দেখতে চায়।

এ সময় তিনি কোনো প্রশ্ন নিতে চাননা বলেও মন্তব্য করেন। তবে সাংবাদিকরা ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে হোয়াইটলি বলেন, না। ধন্যবাদ।

এর আগে, ইইউ’র প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিকাল ৩টায় নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য চার কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব মিশন ব্রেন্ড স্পাইনার, সংস্থাটির পলিটিক্যাল অফিসার সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন, সুইডেনের অ্যাম্বাসেডর আলেকজান্ডার বার্গ ফন লিন্দ্রে, ডেনমার্কের অ্যাম্বাসেডর ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মুলার, স্পেনের অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিতেজ সালাস, ইতালির অ্যাম্বাসেডর আন্তোনিও অ্যালেসান্দ্রো, কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অ্যাম্বাসেডর ইরমা ফেন ডুয়েরেন, ফ্রান্সের ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেম ডে কারড্রেল ও জার্মান অ্যাম্বাসির একজন প্রতিনিধি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।