দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

হরতাল-অবরোধ মোকাবিলায় রাজপথে নেই বঞ্চিতরা

প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাহাত হুসাইন

বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী ৭ জানুয়ারি হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন বর্জন করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের একদফার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও তার মিত্ররা। নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে টানা কর্মসূচি পালন করছে দলগুলো।

নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর আন্দোলনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে বিএনপি ও তার মিত্ররা। হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দিচ্ছে তারা। এদিকে নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ দখলে রাখতে আগেভাগেই ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে দলটির মনোনয়নপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশের পর বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলায় পিছুটান দিয়েছে মনোনয়ন বঞ্চিতরা। রাজপথ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন তারা। অনেকে আবার নিজ দলের প্রার্থীকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন মোকাবিলায় নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। বঞ্চিতদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। আর যারা নৌকার টিকিট পেয়েছেন, তারা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত।

বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের মাঠের তৎপর তেমন দেখা যাচ্ছে না। নৌকার দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের পর দলের মধ্যে বিভেদ বেড়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থাকছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। কিন্তু নির্বাচন পর্যন্ত কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল দলটি। আন্দোলনের নামে কেউ যাতে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকদের সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থানে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছিল; সেই নির্দেশনা এখন কার্যত উপেক্ষিত।

অবরোধ-হরতালের প্রতিবাদে আগের মতো রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও অলিগলিতে দেখা নেই আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি ও তার মিত্ররা। এর আগের দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে ভোটবিরোধী দলগুলো। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠে থাকলেও তেমন একটা দেখা যায়নি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পরই যেন পাল্টে গেছে পুরো চিত্র। সব মিলিয়ে নির্বাচনি ব্যস্ততায় সময় পার করছে আওয়ামী লীগ।

ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৬টি থানা ও ৬৪টি ওয়ার্ডের দুয়েকটিতে বিএনপির হরতাল মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের সতর্ক দেখা গেলেও বাকিগুলোয় ছিল নির্বাচনি আমেজ। সবাই নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত। দক্ষিণে আওয়ামী লীগের ২৪টি থানা ও ৭৫টি ওয়ার্ডেও একই চিত্র দেখা গেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, বিএনপির আন্দোলন ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে আসছে। জনগণ তাদের জীবন-জীবিকার জন্য বিএনপির হরতাল-অবরোধ মানছে না। নেতাকর্মীরা এখন ভোটমুখী। নৌকার পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে কাজ করছে। তবে মনোনয়ন না পাওয়ায় অনেকের মনে ক্ষোভ-দুঃখ থাকতে পারে; যা আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, বিএনপি নাশকতার নামে নির্বাচন বানচাল করতে চায়। তারা জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চায়। তারা দেশকে একটি অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। আমরা তাদের এই সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং জনগণের জানমাল রক্ষায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমরা সতর্ক পাহারায় আছি।