মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি বৃহস্পতিবার

আমানের জামিন আবেদন খারিজ

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এদিন ঠিক করেন। আদালতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও সগীর হোসেন লিয়ন। এর আগে গত রোববার মির্জা ফখরুল হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

বিএনপির এই মহাসচিবকে গত ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন বিএনপির এই নেতা।

সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। ওই দিন নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরের দিন হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর থেকে দফায় দফায় অবরোধ ও হরতাল পালন করে আসছে বিএনপি ও শরিক দলগুলো।

গত ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এই মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছিলেন। এরপর জামিন চেয়ে গত রোববার হাইকোর্টে আবেদন করেন মির্জা ফখরুল। জামিন আবেদনটি গতকাল হাইকোর্টের কার্যতালিকার ৭৯২ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। পরে সগীর হোসেন লিওন জানান, জামিন আবেদনের বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে আদালত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শুনানির জন্য রেখেছেন।

এদিকে, দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের জামিন আবেদন খারিজ করে লিভণ্ডটু-আপিল শুনানির জন্য আগামী ১০ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে সেদিন আবারও জামিন আবেদন করা হবে বলে জানান আমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। আমানের জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে গতকাল আমানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। আর দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

এর আগে ২০০৭ সালের ২১ জুন অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের বিবরণীতে তথ্য গোপনের দায়ে আমানউল্লাহ আমানকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। অপরাধে প্ররোচনা দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় একই আদালত তার স্ত্রী সাবেরাকেও ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরবর্তীতে এই দম্পতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট তাদের দুর্নীতির অভিযোগ থেকে খালাস দেন।

এরপর ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে তাদের আপিলের ওপর নতুন করে শুনানির নির্দেশ দেন। সম্প্রতি তাদের করা আপিল খারিজ করে বিচারিক আদালতের সাজার রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বিচারক মো. আবুল কাশেমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আমানউল্লাহ আমান। তবে আদালত আমানউল্লাহ আমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আদালত কারা কর্তৃপক্ষকে জেল কোড অনুযায়ী আমানউল্লাহ আমানকে কারাগারে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে আমানউল্লাহ আমানের স্ত্রী একই মামলায় এখন জামিনে রয়েছেন।

অন্যদিকে, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা পৃথক আট মামলায় ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীকে আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাকে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি করেন নিপুণের বাবা অ্যাডভোকেট নিতাই চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন তার ছোট ভাই ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় চৌধুধী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির।

এ বিষয়ে আপিল আবেদন করা হবে কি না, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেবে। রাজধানীর রমনা ও পল্টন থানায় সাতটি এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় দায়ের করা এক মামলায় তাকে জামিন দেওয়া হয়। অ্যাডভোকেট নিতাই চৌধুরী জামিনের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।