আসন কমছে ১৪ দলের জোট শরিকদের

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাহাত হুসাইন

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জোটবদ্ধভাবে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে ভোটের সিদ্ধান্ত হলেও শরিক দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা হয়নি এখনো। চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৪ দলের শরিকরা আসন বাড়িয়ে নিতে দাবি-দাওয়া চলিয়ে যাচ্ছে। এবার ২৫টি আসনে নৌকা চায় আওয়ামী লীগের জোট শরিকরা। তবে শুধু মাত্র ১৪ দলের যোগ্য প্রার্থীরাই এবার নৌকা পাবেন।

জানা গেছে, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ ভোটে ১৪ দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের কাছে ২৫টি আসনে নৌকা মার্কা দাবি করা হয়েছে। ২৫ আসন দাবি করলেও এবার কম আসনে শরিকদের নৌকা দেবে আওয়ামী লীগ। জোট শরিকদের মধ্যে পাঁচটি দলের প্রধানকে এবার ছয়টি আসনে নৌকা মার্কা দেওয়া হবে বলে ভোটের মাঠে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

১৪ দলীয় জোট শরিকদের মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) একটি করে আসনে নৌকা মার্কা পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। আর জাতীয় পার্টি (জেপি) এবার দুটি আসনে নৌকা পেতে পারেন। তবে জোটের আসনের সমীকরণ হবে রাজনৈতিক মেরুকরণের ওপর। এছাড়া ১৪ দলীয় জোট শরিকদের মধ্যে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), গণতন্ত্রী পার্টি ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ- এই দলগুলোর বিষয়ে ভোটের মাঠে তেমন কোনো আওয়াজ নেই। কোন দলকে কত আসনে ছাড় দেবে এবং কোন কোন আসনে ছাড় দেবে এই সিদ্ধান্ত এখনও আওয়ামী লীগের হাতে। তবে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া চট্টগ্রাম-১ আসনের এমপি হওয়ার জন্য জোট প্রধানের কাছে আশা প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে এরই মধ্যে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন জোটপ্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কমিটির সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম। ১৪ দলীয় জোট শরিকরা নিজেদের পক্ষে বেশি আসনে নৌকা মার্কা বাগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগের কাছে পৃথক পৃথক তালিকা দিয়েছে। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) রেজাউর রশীদ খান এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলামের নৌকা প্রতীক পাওয়া অনেকটা চূড়ান্ত। তবে এবার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুতফুল্লাহ এবং ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের একেএম রেজাউল করিম তানসেন এবং শিরীন আখতারের নৌকা প্রতীক পাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত। শিরিন আখতারকে যদি জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী করা না হয়, পরে সংরক্ষিত নারী আসনে তাকে এমপি করা হতে পারে- এমন আলোচনা রয়েছে রাজনীতির মাঠে।

১৪ দলীয় জোটের একাধিক শরিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কাছে বেশি আসন চাইলেও জোটের স্বার্থে সব ধরনের ছাড় দিতে প্রস্তুত তারা। বর্তমান সংসদে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব আছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরীকত ফেডারেশন ও জেপির। সংরক্ষিত নারী আসনসহ মোট ১০টি আসনে তাদের প্রতিনিধি রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আমরা আমাদের প্রত্যাশার কথা জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুকে জানিয়েছি। তিনি জোটনেত্রী শেখ হাসিনাকে বিষয়টি জানাবেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, জোটগতভাবেই ভোট করবে ১৪ দল। কিছু আসনে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবে জোটের নেতারা। আর কিছু আসনে নিজ দলের প্রতীকে ভোট করবে শরিক দলগুলো। জোটের আসন বিন্যাস ও প্রার্থী চূড়ান্তের বিষয়ে জানতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।