ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী

২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। গতকাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কি না, এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে অংশ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বৈঠকের পরই নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা এলো।

ইসি সূত্র জানায়, ভোট সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর করতে তৎপর ইসি। ভোটে অংশগ্রহণমূলক করতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসি। এবার ২ হাজার ৭০০ বেশি প্রার্থী অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে অনেক প্রার্থী বাছাইয়ে বাদ পড়ে যান। এর মধ্যে থেকে গতকাল সোমবার ইসি আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিনে বাছাইয়ে বাদ পড়া ৫১ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বিতীয় দিনে ৯৯ জনের আপিল শুনানি হয়। শুনানিতে ৫১ প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর প্রার্থিতা ফেরত পাননি ৪১ জন। সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি বা পেন্ডিং রয়েছে সাতজনের। এ নিয়ে দুই দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ১০৮ জন। এর আগে রোববার ৫৭ জনের প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হয়। প্রথম দিনে ৫৭ জন প্রার্থিতা ফিরে পান। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫৬১টি আপিল জমা পড়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন। ইসি ঘোষিত তপশিলল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোট হবে ৭ জানুয়ারি। এদিকে নির্বাচনে অংশ নিতে আর কোনো বাধা থাকল না চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে ইসি। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন মাহি। তবে যাচাই-বাছাইয়ের সময় ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর ‘ভুয়া’ পাওয়ার অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে তিনি বলেন, নৌকা না পেলেও ভোটাররা আমাকে নৌকার মাঝি হিসেবে দেখতে চায়। টেনশনে ছিলাম যে আমি ন্যায়বিচার পাবো কিনা। কারণ, আমি আমার জায়গা থেকে সৎ ছিলাম। আজ সেটারই আসলে প্রতিদান পেয়েছি। আমি শতভাগ বিশ্বাস করতে শুরু করেছি যে এই নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে। কারণ, সেখানে আমার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। আমার এলাকার লোকজনই আমাকে মোটামুটি জোর করে বলেছে আপনাকে নির্বাচন করতে হবে। কারণ, তারা জানে আমি মাঝি, যদিও আমি নৌকা পাইনি। তারা আমাকে নৌকার মাঝি হিসেবেই দেখতে চায়। আমি যাতে বিপুল ভোটে জিতে নৌকার মাঝি হই, এটা তারা খুব করে চায়।

১৯ কর্মকর্তার বদলির প্রস্তাবে সম্মতি : পরিদর্শক থেকে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হওয়া ১৯ কর্মকর্তার বদলির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে ইসি। ইসির উপসচিব মো. মিজানুর রহমান এ সংক্রান্ত চিঠি জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ১৯ জন ‘পুলিশ পরিদর্শক’ হতে ‘সহকারী পুলিশ সুপার’ পদে পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করায় পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারির আগে প্রস্তাবিত কর্মস্থলে বদলি বা পদায়নের লক্ষ্যে অনাপত্তি প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ১৯ জন সহকারী পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রস্তাবিত কর্মস্থলে বদলির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন অনাপত্তি প্রদান করেছে। অন্যদিকে সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে কি না, এ বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসি। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়ালের নেতৃত্বে এ বৈঠক হয়।

ইসি সূত্রে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য ভোটের মাঠে কাজ করবে। তাদের মধ্যে আনসার সদস্য ৫ লাখ ১৬ হাজার জন, পুলিশ ও র‌্যাব এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ড ২ হাজার ৩৫০ জন ও বিজিবি সদস্য থাকবেন ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত