ঢাকায় আজ খাওয়াবে সোয়া ৫ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা জেলার ছয়টি উপজেলায় ৫ লাখ ২৬ হাজার ২৪০ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে আজ।

এক্ষেত্রে ৬ থেকে ১১ বছর বয়সি ৭৪ হাজার ৮২ শিশুকে নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ৪ লাখ ৫২ হাজার ১৫৮ শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ কার্যক্রম। গতকাল ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. ইয়াসমিন নাহার। স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মহসিন মিয়ার সঞ্চালনায় এ সময় অন্যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেডিক্যাল অফিসার ডা. রিজওয়ানা পারভীন, ডা. কাজী মো. ওমর ফারুক, জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা শাহানা পারভীন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল শিশুদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ার প্রকোপ কমায়, অন্ধত্ব দূর করে। এজন্য শিশুদের বাড়ির পাশের কেন্দ্রে গিয়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। তবে অসুস্থ শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।

ঢাকার ছয়টি উপজেলার মধ্যে ধামরাই, দোহার, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, সাভার ও সাভার পৌরসভা এলাকায় এ ক্যাম্পেইন চলবে। ছয় উপজেলার মোট ১ হাজার ৭৪৩টি স্থায়ী ও ১২৫ অস্থায়ী কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানো হবে। এতে নিয়োজিত থাকবেন ৩ হাজার ৪৮৬ জন স্বেচ্ছাসেবক। এছাড়া পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এ কাজে সরাসরি অংশ নেবেন।

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন চলাকালে এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর পাশাপাশি জন্মের পরপর নবজাতককে শালদুধ খাওয়ানো, ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো; শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বার্তা প্রচার করা হবে।

এদিকে চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলায় ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ৮ লাখ ২৭ হাজার শিশুকে আজ ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৩ উপলক্ষ্যে জেলাজুড়ে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি চলবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জেলার ১৫টি উপজেলার ২০০টি ইউনিয়নের ৬০০ ওয়ার্ডের ১৭টি স্থায়ী, ১৫টি ভ্রাম্যমাণ ও ৪ হাজার ৮০০টি অস্থায়ীসহ মোট ৪ হাজার ৮৩২টি কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এরই মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সি ৯৬ হাজার ৭৯০ শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লাখ আই.ইউ) এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ৭ লাখ ৩০ হাজার ৮৩৫ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লাখ আই.ইউ) খাওয়ানো হবে। রোববার নিজ কার্যালয়ে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৩ উপলক্ষ্যে এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সব ধরনের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। ভরা পেটে এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। তবে কোনো অসুস্থ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।

ডা. ইলিয়াছ বলেন, পরিবারের রান্নায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্যতেল ব্যবহার শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকারী। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ খাবার খেতে দিতে হবে। শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের বুকের শালদুধ পান করাতে হবে এবং ৬ মাস বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু দেওয়া যাবে না। শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণ মতো ঘরে তৈরি পুষ্টিসমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়াতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো শিশু যেন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো থেকে বাদ না যায়, সেদিকে সবাইকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। সবার আন্তরিক সহযোগিতা পেলে এ কর্মসূচি সফল হবে। পাশাপাশি ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন নিয়ে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।