ঢাকা ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দুরুল হুদা হত্যা

স্ত্রীর প্রেমিক গ্রেপ্তার

স্ত্রীর প্রেমিক গ্রেপ্তার

আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর দুরুল হুদা (৪২) হত্যাকাণ্ডের পলাতক আসামি মতিউর রহমান মতিনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-৪ ও র‌্যাব-৫ এর যৌথ আভিযানিক দল তাকে গ্রেপ্তার করে।

গতকাল বিকালে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। এর আগে গত রোববার রাতে নওগাঁর নিয়ামতপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার মতিউর রহমান মতিন নওগাঁর নিয়ামতপুর থানাধীন বালাহান্দা এলাকার বাসিন্দা। সে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত বলে জানা যায়।

র‌্যাব জানায়, গত ২০ নভেম্বর আশুলিয়ার পলাশবাড়ি বাতানটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে দুরুল হুদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের স্ত্রী খাতিজা (২৮) একই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে পোশাক কারখানা থেকে বাসায় ফিরে নিজের স্বামীর মরদেহ দেখতে পেলে তার আর্তনাদে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন এবং ঘরের ভেতর প্রবেশ করে দেখতে পায় যে, দুরুল হুদার হাত-পা বাঁধা এবং মুখে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো নিথর দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। পরে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি থানা পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবকে অবহিত করলে র‌্যাব-৪ এর একটি অভিযানিক দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা স্ত্রী খাতিজা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, নিহত দুরুল হুদা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার উত্তর ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্ত্রীসহ আশুলিয়া পলাশবাড়ির বাতানটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিনি একটি কীটনাশক কারখানার প্যাকিংম্যান হিসেবে কাজ করতেন এবং তার স্ত্রী আসামি খাতিজা খাতুন স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। একই পোশাক কারখানায় চাকরি করার সুবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মতিউর রহমান মতিনের সঙ্গে নিহতের স্ত্রী খাতিজা খাতুনের পরিচয় হয় এবং পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের মাঝে বিবাহবহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে দুরুল হুদা ও তার স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই তুমুল ঝগড়া-বিবাদ হতো। পরবর্তীতে নিহতের স্ত্রী খাতিজা খাতুন ও গ্রেপ্তার আসামির যোগসাজশে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিহতের স্ত্রী গত ১৯ নভেম্বর রাতের খাবার শেষে ভিকটিম দুরুল হুদাকে তার নিয়মিত ঔষধের পাশাপাশি কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়, যার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী অচেতন হয়ে পড়লে আসামি মতিউর বাসায় প্রবেশ করে। নিহতের স্ত্রী খাতিজা খাতুনসহ হাত-পা বেঁধে ও মুখ পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং ভিকটিমের মুখমণ্ডল ও মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মেঝেতে ফেলে রাখে।

পরবর্তীতে গ্রেপ্তার মতিউর রহমান ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে নওগাঁ জেলায় নিজ এলাকায় আত্মগোপন করে। পরে র‌্যাব-৪ ও র‌্যাব-৫ এর যৌথ আভিযানিক দল তাকে নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত