ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শরিকদের ভাগ্য নির্ধারণ ‘১৭ ডিসেম্বর’

শরিকদের ভাগ্য নির্ধারণ ‘১৭ ডিসেম্বর’

বছর পেরোলেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটের বাকি আর মাত্র ২৫ দিন। দেশের ভোটে প্রখর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বিদেশিরা। বিশেষ করে জাতিসংঘ ও উন্নয়ন-সহযোগী দেশগুলো নজর রাখছে দ্বাদশের ভোটে। সংবিধানের আলোকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মানের করতে কাজ করছে সরকার। প্রতিযোগিতামূলক ভোটের কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পাশাপাশি এবার ভোটে রয়েছে দলটির ডামি প্রার্থীও।

এবারের ভোটযুদ্ধে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। তবে বিএনপিহীন ভোটে অংশ নিয়েছে ২৯টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ভোট এগিয়ে এলেও জোট শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেনি আওয়ামী লীগ। এবার দুটি আসন বাকি রেখে ২৯৮টি আসনে নৌকার প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে চলছে দরকষাকষি। ১৪ দলের পাশাপাশি ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আসন সমঝোতা চায় জাতীয় পার্টিও। আসন বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও করেছে দলগুলো। জোটবদ্ধ ভোটের মাঠে চলছে নানা সমীকরণ। কয়েক দফার বৈঠকেও আসন বণ্টন হয়নি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে জোট শরিকদের। ১৭ ডিসেম্বরে মধ্যেই সবকিছু স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, জোটগতভাবেই দ্বাদশের ভোটে লড়বে আওয়ামী লীগ। জোটের আসন বিন্যাস ও প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এদিকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিনও ১৭ ডিসেম্বর। সব মিলিয়ে জোট শরিকদের ভাগ্যনির্ধারণ হবে ১৭ ডিসেম্বর। এদিনই জানা যাবে আওয়ামী লীগের শরিকদের মধ্যে কারা কারা নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পাচ্ছেন, আর কোন কোন আসনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে।

জানা গেছে, সহজে জয় পেতে ৪০টি আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করতে চায় জাতীয় পার্টি। এ নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে চুপিসারে কয়েক দফা বৈঠকও করেছে দলটি। সমঝোতা হলে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট করবে জাতীয় পার্টি। সমঝোতার আসনগুলো থেকে প্রত্যাহার করা হবে নৌকা। আসন বণ্টন হলেও এবার ভোটে মাঠে বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থীরা। সহজে জয় ঠেকাতে; বছরের শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটের কথা বলে আসছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এবার কেউ বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে পারবেন না। প্রয়োজনে ‘ডামি প্রার্থী’ দাঁড় করানো এবং ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ রাখার ঘোষণাও দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার পর বেশির ভাগ আসনেই নৌকা মার্কার বিপরীতে লড়ছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এছাড়া কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ কৌশল নিয়েছে দলটি।

আওয়ামাী লীগের দলীয় প্রার্থী, ১৪ দলীয় জোট নেতারা ও জাতীয় পার্টি স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রত্যাহার চায় বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতার সঙ্গে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর বৈঠকে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীদের প্রত্যাহারের বিষয়টি ওঠে। দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটের মাঠ থেকে তুলে দেওয়ার বিষয়টি একেবারে নাকচ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জোটের শরিকদের আপত্তি এবং দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে অস্বস্তি থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো বিকল্প নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের সুযোগ নেই।

আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের মাঠে থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নানা কারণেই এবারের সংসদ নির্বাচন গুরুত্ব বহন করছে। বিএনপিহীন ভোটে পাখির চোখ করে আছে বিদেশিরা।

নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য দফায় দফায় রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ উন্নয়ন সহযোগীরা।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি জোট বা সমঝোতা করে ভোটে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ২০০৮ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচন ছিল জোটবদ্ধ। আর ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট যখন ভোট বর্জন করে, ওই সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে জাতীয় পার্টিতে ছিল বিভক্তি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত