ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাড়ছে শীতের তীব্রতা

আসছে শৈত্যপ্রবাহ

আসছে শৈত্যপ্রবাহ

গরমের আভাস কাটিয়ে সারা দেশে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। এবার শীতের সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে মাসজুড়েই শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে।

সংস্থাটি বলছে, দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা এখন দিনের বেশিরভাগ সময় কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে। সারা দেশের ন্যায় রাজধানী ঢাকাতেও শীত বাড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইঙ্গিত অনুযায়ী আজ বুধবার থেকে দেশের কয়েক জেলায় শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। সেই সঙ্গে আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী গতকাল সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাজধানী ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামীকাল থেকে কয়েকটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আজ থেকে দেশের কয়েকটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। সেইসঙ্গে গত কয়েক দিনের তুলনায় সারা দেশেই শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। এছাড়া আগামী কয়েক দিন কুয়াশাও থাকবে।

শীতের তীব্রতার সঙ্গে কুয়াশার দাপটে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এসব এলাকায় স্বল্প আয়ের মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। তীব্র শীতের মধ্যে রিকশা চালানোসহ দিনমজুরির কাজ করা মানুষ বেশি ভুগছেন। ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, তাপমাত্রা আরো কমে আজ থেকে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

এদিকে, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর গুলিস্তান, বঙ্গবাজার ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ফলে বিক্রি বেড়েছে গরম কাপড়ের। দোকানগুলোতে বেশি বিক্রি হচ্ছে সোয়েটার, জ্যাকেট, কোট, হুডি, জুতা, মোজা, ব্লেজার, ক্যাপ ও মাফলারসহ বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড়। পণ্য ও গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে তাদের গরম কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ প্রতিবারের চেয়ে এবার দাম কিছুটা বাড়তি। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্রেতার সমাগম হচ্ছে ফুটপাতে। ফুটপাতে ছোটদের পোশাকের চাহিদাই বেশি চোখে পড়ছে। সেইসঙ্গে বিক্রি হচ্ছে বড়দের পোশাকও।

বায়তুল মোকাররম মসজিদসংলগ্ন গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে অস্থায়ী দোকান ঘুরে দেখা গেছে সাশ্রয়ী মূল্যে কোট, ব্লেজার কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। কোট কিনতে আসা ক্রেতা রাব্বি জানান, গত বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি। গত বছর যে কোট ১২০০ টাকায় কেনা গেছে সেগুলো এবার ২ হাজারের নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

এছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকে ক্রেতারা খুচরা বা পাইকারি দামে শীতবস্ত্র কিনতে গুলিস্তানের পাইকারি বাজারে ভিড় করছেন। গরমের কাপড় কিনতে এসে মো. নাজির মিজী বলেন, বছরের বেশিরভাগ কেনাকাটা গুলিস্তান থেকেই করি। দাম অন্যান্য জায়গার থেকে কম এবং এখানে অনেক পণ্য রয়েছে। আমি গরম কাপড় কিনতে এসেছি। একজন বিক্রেতা জ্যাকেট ২ হাজার ২০০ টাকা চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি ৮০০ টাকায় কিনেছি। আরেক ক্রেতা গাজীপুরের বাসিন্দা নুরুজ্জামান বলেন, এখানে কেনাকাটার সুবিধা হলো দর কষাকষির মাধ্যমে আপনার বাজেট অনুযায়ী কেনাকাটা করা যায়। তুলনামূলক কম দামে মানসম্পন্ন গরম কাপড় কেনা যায়।

আব্দুর রহমান নামের এক বিক্রেতা বলেন, শীতবস্ত্রের এখন প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এবার বিক্রি ভালো হয়েছে। সবুজ নামের এক খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখন অনেক ক্রেতা গরম কাপড় কিনতে আসছেন। আমার দোকানে প্রতিদিন ৪০-৫০টি জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভ্যানে করে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় শীতবস্ত্র বিক্রি করতে দেখা গেছে। নিউমার্কেট এলাকায় অস্থায়ী দোকানের মালিক ফরিদউদ্দিন বলেন, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ তার দোকানে ভিড় করছেন।

এছাড়া বাজারে এসেছে বিভিন্ন ধরনের কম্বল। নানা ডিজাইনের এসব কম্বল পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে। তবে রপ্তানিযোগ্য কম্বলের দাম চাওয়া হচ্ছে চার থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে। কম্বলের দোকানে ক্রেতার আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, কম্বলের দাম বেশি বলছেন বিক্রেতারা।

এছাড়া গুলিস্তানের বাজারে বৈদ্যুতিক কেটল, হিটার ও ফ্লাক্সসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের বিক্রিও বেড়েছে। অলিভ অয়েল এবং ক্রিমের মতো শীতকালীন প্রসাধনীগুলোর চাহিদা বেড়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত