ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশকে শত্রুমুক্ত করে বিজয়ের দ্বারপ্রাপ্তে

দেশকে শত্রুমুক্ত করে বিজয়ের দ্বারপ্রাপ্তে

মুক্তিযোদ্ধারা যখন প্রিয় দেশকে শত্রুমুক্ত করে বিজয়ের একদম দ্বারপ্রাপ্তে চলে এসেছিলেন ঠিক তখনই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দালালরা বেপরোয়া হয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে, যা ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের আগ পর্যন্ত অব্যাহত রাখে। কিন্তু পুরোপুরি কোণঠাসা পাকিস্তানি বাহিনী শুধু নিশ্চিত হতে চাইছিল যে, আত্মসমর্পণের সময় তাদের হত্যা করা হবে না। কারণ, পাকিস্তানকে বাঁচানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের নির্দেশে রওনা দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর যখন বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র ২৪ ঘণ্টার দূরত্বে গভীর সমুদ্র এসে অবস্থান করছিল তখন ভারতীয় নৌবাহিনীর সহায়তায় সোভিয়েত ইউনিয়নের রণতরীর ২০টি জাহাজ ভারত মহাসাগরে অবস্থান নেয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর যুদ্ধে অংশ নেয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখে। যার ফলে পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত যে বিদেশি সাহায্যটুকু পাওয়ার আশা করেছিল তা নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। আবশেষে পাকিস্তানি সমরাধিনায়ক লে. জেনারেল নিয়াজীর অনুরোধে একাত্তরের ১৫ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে পরদিন সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ভারতীয় বিমান আক্রমণ স্থগিত রাখা হয়। একাত্তরের এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনী চট্টগ্রামে তাদের ঘাঁটি ছেড়ে রাউজান হয়ে শহরের দিকে পালিয়ে যায়। এর ফলে শত্রুমুক্ত হয় রাঙ্গুনিয়া। একই দিনে শত্রুমুক্ত হয় পার্বতীপুর, নীলফামারী, গোয়ালন্দ। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। সরারাত ধরে চলতে থাকে যুদ্ধ। অন্যদিকে বগুড়া ও পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। এ বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে সাবসেক্টর কমান্ডার হিসেবে যোগ দেন মুক্তিবাহিনীর ৭নং সেক্টরে। তার গুণাবলীর কারণে খুল অল্প সময়ে তিনি সবার শ্রদ্ধাভাজন হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর দিনের বেলায় অপারেশনের পরিকল্পনা করতেন আর রাতে গেরিলাদের সঙ্গে অপারেশনে বের হতেন। রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঘাঁটি হানাদারমুক্ত করার যুদ্ধে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত