প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য নেওয়া ঋণের পঞ্চম ও ষষ্ঠ কিস্তির ৩১৫ কোটিরও বেশি টাকা গ্রহণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গতকাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পদ্মা সেতুর জন্য ঋণের পঞ্চম ও ষষ্ঠ কিস্তি হিসেবে ৩১৫, ০৭, ৫৩, ৪৪২ টাকার চেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, সেতু বিভাগের সচিব এম মঞ্জুর হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এবং সেতু ও অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পঞ্চম ও ষষ্ঠ কিস্তিসহ সেতু বিভাগ এই পর্যন্ত ছয়টি কিস্তিতে মোট ৯৪৮, ০১, ১৯, ৫৮৫ টাকা সরকারকে পরিশোধ করেছে। গত ৫ এপ্রিল সেতু বিভাগ সেতু থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমে অর্জিত রাজস্ব থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ৩১৬, ৯০, ৯৭, ০৫০ টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ শুরু করে। এই পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। চলতি বছরের ১৯ জুন মাসে সেতু বিভাগ তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি বাবদ ৩১৬, ০২, ৬৯০৯৩ টাকা পরিশোধ করেছে।
সেতু নির্মাণের জন্য অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নেওয়া হয়। শেখ হাসিনা ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রমত্ত পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের বৃহত্তম এই সেতু উদ্বোধন করেন। জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় পুরো অর্থ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। গত ২০২২ সালের ২৬ জুলাই সরকারের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সংশোধিত ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ঋণ চুক্তি অনুযায়ী ১ শতাংশ সুদসহ ৩৫ বছরে ঋণের টাকা ফেরত দেবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ঋণ পরিশোধের শিডিউল অনুযায়ী প্রতি অর্থবছরে চারটি কিস্তি করে সর্বমোট ১৪০টি কিস্তিতে সুদ-আসল পরিশোধ করা হবে। এছাড়া, সেতুর ডিটেইল ডিজাইনের জন্য এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ১৫ বছর মেয়াদে দুটি ঋণ চুক্তির আওতায় ২ শতাংশ সুদে মোট ১৭ কোটি ৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকার স্পেশাল ড্রয়িং রাইট (এসডিআর) ঋণ নেওয়া হয়েছে। যা বছরে ৪টি কিস্তি করে মোট ৬০টি কিস্তিতে সুদ-আসলসহ মোট ২ কোটি ৮০ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩০ টাকা পরিশোধ করা হবে।