ইসি আলমগীর

মানুষ ভোটকে অনেক উৎসাহের সঙ্গে দেখছে

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন পরিবেশ নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগী বলেন, ‘নির্বাচনি পরিবেশ অনেক ভালো আছে। আমি ১৪টি জেলা ঘুরে আসলাম। এমন কিছু দেখি নাই, যা দেখি মিডিয়ায় দেখি। স্বাভাবিক জীবনযাপন দেখেছি। মানুষ ভোটকে অনেক উৎসাহের সঙ্গে দেখছে। নানা রকম মিছিল দেখেছি। সভা করতে দেখেছি। কিন্তু‘ আমি কোনো নির্বাচনের বিপক্ষে কোনো অনুষ্ঠান বা কথা আমি দেখিনি। গতকাল নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ কী চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা ক্ষমতাসীন দল ও তার স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ইতিবাচক অর্থে উত্তেজনামূলক হবে।

তিনি বলেন, আমেরিকা নির্বাচনে তো র‌্যাব-পুলিশ থাকে না। এবার যেহেতু একটা দল আসছে না, তাদের পক্ষ থেকে নির্বাচন বাতিলের একটা হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেটার একটা চ্যালেঞ্জ আছে। এগুলোকে মোকাবিলা করে কীভাবে নির্বাচন করা যায়, এবং ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে আসে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে আনন্দমুখর পরিবেশ আছে।

মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তারা যেন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিশেষ করে যারা ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন, তারা যেন নিরপেক্ষতা, সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন; সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে যেন নিজের অবস্হান না দেখান, সেটা বলা হয়েছে।

বড় পক্ষের নতুন কর্মসূচি, প্রার্থীরা তো আছেই, আপনারা কতটুকু শঙ্কিত- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রার্থীরা এ বিষয়ে খুব একটা শঙ্কা দেখান নাই। তারা আরো উপদেশ দিয়েছেন যে, কমিশন যাতে শঙ্কিত না হন। আমাদের তারা আরো সাহস দিয়েছেন, তারা তো শঙ্কিত নন-ই। আমরা মোটেই শঙ্কিত নই।

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, সেজন্য যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন। ঢাকা মহানগর, জেলা ও আশপাশের কয়েকটি জেলার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এটা একটি সমন্বয় সভা বলা যেতে পারে। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, সেখানে কোনো সহিংসতা যাতে না হয় এবং তৃতীয় পক্ষ যাতে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে এবং সমস্যা সৃষ্টি করলে যে ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে সে বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।

নির্বাচন প্রতিহতে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যান্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে পুলিশ, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্টেকহোল্ডারদের একমুখী সমস্যা থাকে, সেটা হলো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের আচরণবিধি মানতে বাধ্য করা এবং নির্বাচনে সহিংসতাপূর্ণ পরিবেশ এড়িয়ে সুষ্ঠু ভোট আয়োজন করা। এবারের জাতীয় নির্বাচনে আরেকটি অতিরিক্ত বিষয় যুক্ত হয়েছে সেটি হচ্ছে, নাশকতা, আতঙ্ক ও শঙ্কা সৃষ্টি করার মতো পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। একটি বা দুটি রাজনৈতিক দলের আহুত কর্মসূচি সামনে রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি- এসব সমস্যা ও শঙ্কা মোকাবিলা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনি পরিবেশ গড়ে তোলার মতো অবস্থান এবং সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে।

রেলের নাশকতার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, একটি নাশকতা নয়, একাধিক নাশকতার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিভিন্নভাবে জ্বালাওপোড়াও, অগ্নিসংযোগের ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে। এর বেশিরভাগই পুলিশ উদ্ঘাটন করতে এবং তাদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। বাকি যারা আছে, তারা আইনের আওতায় চলে আসবে বলে আশা করি। এগুলো যাতে ঘটাতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রেন ও বিভিন্ন স্থাপনার নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে। টেন ও ট্রেন লাইনের নিরাপত্তায় আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

ভোটকেন্দ্রে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসির যে সমস্ত আদেশ-নির্দেশ রয়েছে তা মেনে চলার জন্য সবাই বদ্ধ পরিকর ও সেটি মানতে বাধ্য। যারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করছে তারা ইসির এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। ভোটের আগের দিন নির্বাচনি সামগ্রী ভোটকেন্দ্রে পৌছে যাবে। কেবল ব্যালট পেপার সকালে পৌঁছানো হবে। দুর্গম, হাওর, চরাঞ্চলগুলোতে ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইসির সিদ্ধান্ত রয়েছে এবং সেইভাবে সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি আশা করি, এতে কোনো সমস্যা হবে না। সবার সম্মিলিত প্রয়াস থাকলে সামনে যে নির্বাচনি যুদ্ধ, সেটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারব।

নির্বাচনে পুলিশের নিরপেক্ষতা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থী ও সমর্থকরা প্রচার চালাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত আমি বলব, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রয়েছে এবং সেইভাবে তারা কাজ করছে। নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেইভাবে কাজ করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। কোথাও কোনো সমস্যা বা সরকার বা অন্য কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের মুখোমুখি হয়নি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চলছে। ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে পুলিশের পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোট উৎসবমুখর করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য যারা রয়েছেন, তারা এরই মধ্যে অনেকখানি করতে সক্ষম হয়েছেন। নাশকতা ও চোরাগুপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে- এই ধরনের নাশকতা উপেক্ষা ও মোকাবিলা করে পুলিশ ও জনগণ একসাথে হয়ে ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হবে।