ছয় জেলার নির্বাচনি জনসভায় শেখ হাসিনা

নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি আবারও অগ্নিসন্ত্রাসের রূপ নিয়েছে

প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বিশেষ প্রতিনিধি

ভোট ঠেকানোর নামে বিএনপি আবারও অগ্নিসন্ত্রাসের ভয়ংকর রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটি সন্ত্রাসী দল, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল, তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। গতকাল বিকালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ছয় জেলার জনসভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এসব বলেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, নেত্রকোণা, বরগুনা ও রাঙ্গামাটি জেলার জনসভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি জায়গায় আমরা উন্নয়ন করেছি। উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। আজ বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। তারা ভোট ঠেকানোর নামে ২০১৩-১৪ সালে যে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, সেই ভয়ংকর রূপ নিয়ে আবার মাঠে নেমেছে। মাত্র কয়েক দিন আগে রেলে আগুন দিল, ফিশপ্লেট খুলে ফেলল, রেলের বগি পড়ে সেখানে একজন মারা গেল। বাসে আগুন দিচ্ছে, ঘুমিয়ে থাকা হেলপার মারা গেল। ঠিক এভাবে আবার তারা অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। এ দেশের মানুষের ওপর বিএনপি-জামায়াত যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করা যায়।

তিনি বলেন, রেলে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা, একটা মা তার শিশুকে কোলে নিয়ে বসে আছে, সেখানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে কঙ্কাল করেছে, কোনো মানুষের ভেতরে মনুষ্যত্ব থাকলে এ ঘটনা ঘটাতে পারে না। বিএনপির নেতা কে- সেটাই প্রশ্ন, দুইটাই তো সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে আজ খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারপরও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে, তার বোন-ভাই যখন আমাদের অনুরোধ করেছে, আমরা তার সাজা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছি। তারেক জিয়া আমাকে গ্রেনেড হামলা করে মারতে চেয়েছিল, বোমা মেরে মারতে চেয়েছিল, গুলি করেছে, তারপরও তার জন্য আমরা এটুকু মানবিকতা দেখিয়েছি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক এলে মুচলেকা দিয়ে আর কখনো রাজনীতি করবে না বলে নাকে খত দিয়ে বিদেশে পাড়ি দেয়। বিদেশ থেকেও হুকুম করছে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারার। বিএনপির যারা নেতাকর্মী, আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, পাপের ভাগিদার আপনারাই হবেন, তারেক জিয়া হবে না। ও তো ওখানে জুয়া খেলে ভালো আছে আর হুকুম দিচ্ছে। আপনারা নাচেন, কার জন্য নাচেন? জীবনে কোনোদিন সে তো দেশে আসে নাই, মা মরে মরে, তাও তো দেখতে আসে না। এত সাহস থাকলে একবার দেশে এসে দেখুক, এ দেশের মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এদেশের মানুষের জন্যই আমার সংগ্রাম। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। এদেশকে ভালোবাসী, এদেশের মানুষকে ভালোবাসি। এদেশের মানুষের জন্যই আমার সংগ্রাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে বলেই বাংলাদেশ বদলে গেছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর মাত্র ৩ বছরে বাংলাদেশক স্বল্প উন্নত দেশের মর্যাদায় নিয়ে গিয়েছিলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটা আমরা নির্মাণ করেছি। প্রতিটা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। দেশের সব সেক্টরে উন্নয়ন হয়েছে। স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ করেছি। দেশ যখন উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি তখনই বিএনপির আবার ভয়ংকর রূপ দেখা দিয়েছে। বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটি সন্ত্রাসী দল, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল। তাদের থেকে এ দেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার, আমরা সেটি করে যাচ্ছি। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থী বেছে নিতে পারলেই গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত থাকবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে, গণতন্ত্র রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হয়।

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এবারের ভোট উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উন্নতি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সেই ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।

বিএনপির নেতা কে- সেটাই প্রশ্ন। দুজনই তো সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারপরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকতে দেওয়া হয়েছে। যে বিএনপি আমাকে বারবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে, গুলি করেছে, গ্রেনেড হামলা করেছে, বোমা পুঁতে রেখেছিল, তারপরও আমাদের সরকার খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে বাসায় থাকতে সুযোগ দিয়েছে। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে হাওয়া ভবন খুলে দেশের মধ্যে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকে হত্যা করেছে।