তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে

বললেন ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি’র পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশের রাজনীতি ধ্বংসের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা শাখা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচন বয়কট করে। কিন্তু এমন নাশকতার ঘটনা বিরল। নেতা নেই, সে লন্ডনে বসে আসে। মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘সে এখন রাজনীতি করছে না, রাজনীতি ধ্বংস করছে। গণতন্ত্র ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। জিয়া এবং খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। হত্যা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি যারা শুরু করেছে, তারাই গণতন্ত্রের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করবে এটাই স্বাভাবিক।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে বাঁচাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া জরুরি। বিরোধী দল নির্বাচনের বাইরে থাকবে তা আমরা চাইনি। তারা এলে নির্বাচন আরো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হতো। কিন্তু তারা নেই, তবুও নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ আছে।’ তিনি বলেন, বিরোধী কিছু দল নির্বাচন বয়কট করেই ক্ষান্ত হয়নি, এখন ভোট বানচাল করতে চাইছে। আর সেটা মিছিল-বিক্ষোভ করে নয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে করা হচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তারা নাশকতা করছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন বন্ধ করতে গণপরিবহনে হামলা হচ্ছে। ট্রেনেও কয়েকবার হামলা করেছে তারা। গাজীপুরে আরো ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারত। তেজগাঁওয়েও মায়ের বুক থেকে সন্তানকে কেড়ে নিয়েছে তারা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ভেবেছিল তারা না থাকলে ভোটার উপস্থিতি হবে না। তবে এটা দুঃস্বপ্ন। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে মানের মাধুরী মিশিয়ে নির্বাচনবিরোধী প্রোপাগান্ডা করছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়কের জন্য আমরাও লড়াই করেছি। তবে বিএনপিই এই ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তাই আমরা এখন আর এটা চাই না। আমরা এটা বাতিল করিনি। এটা বাতিল করেছে বিচার বিভাগ। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা এখন মরে গেছে। এটাকে আবারও জীবিত করার দরকার নেই। গণতন্ত্রের ভালো উদাহরণ পাকিস্তান নয়, কারণ তাদেরও তত্ত্বাবধায়ক সরকার রয়েছে। তাই আমরা গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচন যেভাবে হয়, আমাদের নির্বাচনও তেমন হবে। নির্বাচন চলাকালে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করব। নিজ দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, দায়িত্বশীল নেতারা দায়িত্ব-জ্ঞানহীন কথা বলে। এমপি, মন্ত্রী ছিলেন, তবুও গলা উঁচিয়ে কথা বলেন। তাদের মুখ বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের উদ্দেশ্য আমরা ব্যহত হতে দেব না। অসুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারো বাপ-দাদার সম্পদ নয় সংসদ। তাই এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে। বাধা দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যা ইচ্ছা হয় তাই যারা বলে, তারা জনপ্রতিনিধি নয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ ভোটের পরিবেশ নষ্ট করবে না। নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিলে আওয়ামী লীগে সমর্থন দেবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের সুনাম রক্ষা করতে হবে। নিয়মের মধ্যে থাকতে হবে সব পোলিং এজেন্টকে। দলের পক্ষে কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। প্রভাবিত করবেন না। আমরা এবারের নির্বাচন ভালোভাবে করতে চাই। বদনাম নিতে চাই না। শেখ হাসিনাও এটাই চান। তার এই ইচ্ছাকে আমাদের স্বার্থক করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ তাদের পোলিং এজেন্টদের গতকাল মঙ্গলবার ১০টা সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দুই সেশনে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এই কার্যক্রম পরিচালনায় আছে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ উপকমিটি। সারা দেশ থেকে দলীয় প্রার্থীর মনোনীত পোলিং এজেন্টদের এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নৌকা প্রতীকের প্রতিটি আসন থেকেই পাঁচজন পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণের জন্য চাওয়া হয়েছিল।