ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ছয় জেলায় ভার্চুয়ালি জনসভায় শেখ হাসিনা

ভোটের জন্য মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাবেন

ভোটের জন্য মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাবেন

নৌকা মার্কায় ভোটের জন্য দলের নেতাকর্মীদের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগে সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকালে তেজগাঁওস্থ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে ছয়টি জেলায় নির্বাচনি জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। এদিন ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর ও শেরপুর জেলা, ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর ও বান্দরবান জেলায় নির্বাচনি জনসভা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দেওয়া ইশতেহার নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের পড়তে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে নৌকায় ভোট চাইতে হবে। নৌকা মার্কায় ভোটের জন্য আপনারা ঘরে ঘরে যাবেন, দুয়ারে দুয়ারে যাবেন, ভোট চাইবেন। যাতে দেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে, আমাদের পুনরায় দেশ সেবা করার সুযোগ দেয়। ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো, এটা আমাদেরই স্লোগান। এই স্লোগান দিয়েই আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি, সংগ্রাম করেছি। সেই কথাটা মনে রেখে যার যার ভোট সে সে চান। জনগণ যাকে ভোট দেবে, সেটাই মেনে নেবেন। সেইভাবেই এই নির্বাচন পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, ভোটারদের অংশগ্রহণেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়ে যাবে। সন্ত্রাসীদের দল বিএনপি তো নির্বাচনে বিশ্বাসই করে না। তাদের দ্বারা কোনো কল্যাণ হবে না দেশে। সেজন্য উন্মুক্ত নির্বাচন করতে দিয়েছি। ভোট চাওয়ার অধিকার যেমন প্রার্থীর আছে তেমনি ভোট দেওয়ার অধিকার জনগণের। এখানে কেউ কারো ওপর কোন বল প্রয়োগ করার চেষ্টা করবেন না। কোন সংঘাত সৃষ্টি করবেন না। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবেন। জনগণ যাকে চাইবে, তাকেই মেনে নেবেন সবাই। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এখন ডিজিটাল যুগ। সকলের হাতেই মোবাইল ফোন রয়েছে, সিসি ক্যামেরা রয়েছে, কাজেই যারাই গোলমাল করবেন, ছবি কিন্তু উঠে আসবে। আর নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হলে কেউ কিন্তু রেহাই পাবে না। এটা মাথায় রাখতে হবে। আর জনগণ ভোট দেবে তাদের সেই ভোট দেওয়ার সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে দিতে হবে এবং যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় সেই ব্যবস্থাটা সবাইকে নিতে হবে। ভোটারদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে উন্নত-সমৃদ্ধ জীবনের ধারা অব্যাহত রাখুন, যেন দেশকে আরো এগিয়ে নেওয়া যায়। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আওয়ামী লীগ আবারও মানুষের সেবা করার সুযোগ পাবে, সেটাই প্রত্যাশা। দেশের বর্তমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে হবে। তাহলেই এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখা যাবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তথা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ আমরা গড়ে তুলব।

এ সময় বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসি দল আর একটি দল (জামায়াত) হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। আর এরা নির্বাচনে না আসলে নির্বাচন অংগ্রহণমূলক হবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। ভোটারদের আগমনে তাদের অংশগ্রহণে এখানে নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আমরা সেটাই চাই। আর সন্ত্রাসী দল তারা নির্বাচনে বিশ্বাসও করে না মানুষ খুন ছাড়া আর দুর্নীতি করা ছাড়া ওদের দিয়ে দেশের কোনো কল্যাণও আসবে না। ওরা মানুষকে কিছুই দিতে পারবে না। বিএনপি-জামায়াতের কাজই মানুষ পোড়ানো আর ধ্বংস করা। এবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র আছে। শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এর পর অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার জন্য জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়ার সংস্কৃতি চালু করেছিল জিয়াউর রহমান। তখন স্বাধীনতাবিরোধীদের সমন্বয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত ধারায় চলতে থাকে দেশ। ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির চক্রান্ত করে ক্ষমতায় এসে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে বিএনপি। তারা এখনো নির্বাচনবিরোধী কাজ করে চলেছে। ট্রেনে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে এমনভাবে পুড়িয়ে হত্যা সহ্য করা যায় না। এরা সবসময় নির্বাচন বানচালের তালে থাকে। কিন্তু নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না, এটাই বাস্তবতা। ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করতে ২০১৩ সাল থেকে বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে। কত মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখনও মানবেতর জীবনযাপন করছে। কত মানুষ স্বজনহারাদের বেদনা নিয়ে বেঁচে আছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে হত্যা, খুন-গুম শুরু করেছিল। একই কায়দায় খালেদা জিয়াও একই কাজ শুরু করে। সে কারণে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে মানুষ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল বলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ দেশের দরিদ্র থেকে শুরু করে সব মানুষের মুক্তি আসবে। এবং এই দেশটা উন্নত-সমৃদ্ধ হবে, ইনশাআল্লাহ। গণতান্ত্রিক সরকার ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আছে বলেই দেশ উন্নত হয়েছে। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা তো এক কদমও এগোতে পারেনি। তারা দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল।

বিদেশে শরণার্থী হিসেবে থাকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি। ১৯৮১ সালে (আওয়ামী লীগের) সম্মেলনে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেন তারা। দেশে ফিরে দায়িত্ব নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করি এবং জনগণের ম্যানডেট নিয়ে ২১ বছর পর সরকারে আসি। দেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার জনগণের সেবক, জনগণের কল্যাণে কাজ করি।

বক্তব্যের শুরুতে বিজয়ের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের বিষয়টি উল্লেখ করে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের বিজয় নিয়ে আসেছে জনগণ। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা এবং ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তিনি।

আলোকিত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত