ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আ. লীগের স্মার্ট কৌশলে বিএনপি ধরাশায়ী

আ. লীগের স্মার্ট কৌশলে বিএনপি ধরাশায়ী

বদলে গেছে ক্যালেন্ডারের শেষ পাতা। সেই সঙ্গে বদলেছে বছরও। বিদায় নিয়েছে ২০২৩ সাল। ঘরে এসেছে আরেকটি নতুন বছর। বিদায়ি বছরের শুরু থেকেই সরগরম ছিল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। দ্বাদশের ভোটকে কেন্দ্র করে মাঠ দখলের লড়াইয়ে নামে বিএনপি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামে তারা। নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, রাষ্ট্র সংস্কারসহ বিভিন্ন দফা-ওয়ারি কর্মসূচি দেয় বিএনপি ও তার মিত্ররা। বিএনপির আন্দোলন ঘিরে নৈরাজ্য ও নাশকতা হতে পারে- দাবি করে পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকে আওয়ামী লীগ। জনগণের জানমাল রক্ষায় সতর্ক পাহারা আর শান্তি সমাবেশের মধ্যদিয়ে রাজপথে সজাগ থাকে দলটির নেতাকর্মীরা।

দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ইস্যুতে বরাবরই সবর ছিল কূটনৈতিক পাড়া। আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মসূচিতে বরাবই নজর ছিল উন্নয়ন সহযোগী ও বন্ধু-প্রতীম রাষ্ট্রগুলোর। দেশের নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতিও ঘোষণা করে। এছাড়া জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও এ নিয়ে নানামুখী তৎপর ছিল। দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেন বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। যদিও কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সাধারণত নীরব থাকে রাশিয়া। তবে বিদায়ি বছরে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দেশটি।

বছরের শুরু থেকেই বিএনপির নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের কাছে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। বিএনপিপন্থি ‘মায়ের ডাক’ নামের একটি সংগঠনের নেতার বাড়িতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সমালোচনায় পড়েন তিনি। ভোটের তপশিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত বেশ তৎপর ছিলেন তিনি। তপশিল ঘোষণার পর পিটার ডি হাসের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বিদেশি তৎপরতা শীতল হয়ে আসে। সদস্য না হয়েও ব্রিকস ও জি-টুয়েন্টির শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পান শেখ হাসিনা। সেখানে বিভিন্ন যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এছাড়া বিদায়ি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসেন রাশিয়ার পরাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

বছরজুড়ে মাঠের রাজনীতিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা চাঙা থাকলেও গেল ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিএনপি। সরকার পতনের আন্দোলনের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় তাদের। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কৌশলী অবস্থানের কারণে ধরাশয়ী হয় বিএনপি। বিএনপির অদূরদর্শিতায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা এখনো শ্রীঘরে। বিএনপির আন্দোলনে জনসাধারণ সাড়া দেয়নি বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীনরা।

১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন (ইসি)। প্রথম রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার মধ্যদিয়ে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন সিইসি। নতুন বছরের ৭ জানুয়ারি সারাদেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটে ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও আসেনি বিএনপি। তবে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে ভাইস চেয়ারম্যান পদধারীসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ নেতা নির্বাচনে অংশ নেন। ভোটে অংশ নিয়ে চমক দেখান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেই নৌকার প্রার্থী হন। বিএনপির জোট শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক শেষমেষ ভোটের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেন। ভোটে আওয়ামী লীগ আর মাঠে বিএনপি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত