ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনি জনসভায় শেখ হাসিনা

ভোটে প্রমাণ হবে দেশে গণতন্ত্র আছে

বিএনপির একমাত্র গুণ জ্বালাওপোড়াও মানুষ খুন
ভোটে প্রমাণ হবে দেশে গণতন্ত্র আছে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা ভোটার তারা সবাই কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন- বাংলাদেশে গণতন্ত্র রয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আজকে আমরা ২০২৪-এ পা দিয়েছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই বাংলাদেশে এত উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’ গতকাল বিকালে নারায়ণগঞ্জের ইসদাইর এলাকায় এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে নির্বাচনি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ ১৫ বছর পর নারায়গঞ্জে নির্বাচনি জনসভায় যান আওয়ামী লীগ সভাপতি। বিকাল ৩টায় তিনি নারায়ণগঞ্জ গিয়ে পৌঁছান। নির্বাচনি প্রচারের শেষ দিনে এই জনসভার আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। বিকাল পৌনে ৪টায় বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য চলাকালে আসরের আজান শুনে বিরতি দেন তিনি। আজান শেষ হলে ফের বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। এই ভোটের অধিকার আপনার মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার আমরা সংরক্ষিত করেছি। বিএনপি ভোটে জিততে পারবে না বলেই দেশের মানুষকে নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করতে চায়। দেশের ক্ষমতা দখল করে জনগণের ভোটের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল জিয়াউর রহমান। এখন আবার তারা একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে। আগামী ৭ তারিখ নির্বাচন, সারাদেশে সব মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সাংবিধানিকভাবে আপনার অধিকার প্রয়োগ করবেন।’ তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পরে আর নির্বাচনে আসতে চায় না, ভয় পায়। এজন্য তারা নির্বাচন বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বন্ধ করার জন্য বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ থেকে তারা অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে। ৩ হাজারের ওপর তারা মানুষ পুড়িয়েছে। তার মধ্যে ৫০০ মানুষ মারা গেছে। ৩ হাজার ৮০০’র বেশি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। জ্বালাওপোড়াও, মানুষ খুন এটাই হচ্ছে বিএনপির একমাত্র গুণ। এটাই তারা পারে। আর কিছু পারে না। মানুষকে কিছু দিতে পারে না।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। নির্বাচন যাতে না হয়, সেই চক্রান্ত এখনো চলছে। যেহেতু নিজেরা নির্বাচন করে জিততে পারবে না, তারা দেশের মানুষকে বঞ্চিত করতে চায় ভোটের অধিকার থেকে। মিলিটারি ডিকটেটররা যখন একে একে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন আবার তারা সেই একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে।

ভোটের অধিকার রক্ষায় সরকারের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে (বৃহস্পতিবার) ৪ তারিখ। ৭ তারিখে নির্বাচন। আমি দেশের সবাইকে অনুরোধ করব, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটের অধিকার আপনাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার মিলিটারি ডিকটেটররা কেড়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করেছিল। এই আমরা আওয়ামী লীগ সেখান থেকে জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, প্রতি রাতে কার্ফিউ অবস্থা- সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘মানুষ সামনের দিকে যায় আর বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে দেশ পেছনের দিকে যায়। আমরা ক্ষমতায় থাকতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছিলাম বিএনপি ক্ষমতা এসে তা পিছিয়ে দিয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে সরকার গঠন করে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিদ্যুৎ ব্যবহারের সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুতে আমরা ভর্তুকি দিয়ে থাকি। ১২ থেকে ১৩ টাকা উৎপাদন খরচ হলে আমরা পাঁচ-ছয় টাকা নিয়ে থাকি। আপনারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে আরো সতর্ক সাশ্রয়ী হবেন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘স্বাধীনতার যুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ বড় ভূমিকা পালন করেছে। যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। নারায়ণগঞ্জ হবে স্মার্ট সিটি। নারায়ণগঞ্জকে আমরা স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলব। নারায়ণগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করে দিচ্ছি। দেশের মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলেই এটা আমরা করতে পেরেছি, আপনাদের সেবা করতে পেরেছি। সারাদেশে আমরা উন্নয়ন অগ্রগতি করেছি। নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করে আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি আমরাও পারি।’

তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সাল থেকে সরকার গঠন করে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবু, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত