ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন কাল

প্রার্থীদের কদরে সিক্ত ভোটার

প্রার্থীদের কদরে সিক্ত ভোটার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে গতকাল সকাল ৮টায়। আগামীকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশে ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রার্থীদের কাছে ভোটারদের কদর অনেক বেড়ে গেছে। প্রার্থীরা ভোটারদের অতি আপনজন হিসেবে শ্রদ্ধার চোখে দেখছেন। ব্যক্তিগত খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। দোয়া চাইছেন। সেই সঙ্গে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন। প্রার্থীদের কাছে ভোটারা এখন অনেক মূল্যবান। কেননা তাদের ভোটের মাধ্যমে একজন প্রার্থী আগামী দিনে জাতীয় সংসদে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

এদিকে ভোট উপলক্ষ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এবার ভোটে প্রার্থীরা দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। প্রার্থীদের কদরে সিক্ত হয়েছে ভোটররা। বিএনপি ভোটে অংশ না নিলেও ভোট উৎসবে কোন ভাটা পড়েনি। প্রার্থীরা ভোটারের কাছে গিয়ে ভোট চেয়েছে।

আগামীকাল জাতীয় সংসদের ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে। নওগাঁ-২ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই আসনের ভোট বাতিল করেছে ইসি।

সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছাবে। অবশ্য চার হাজারের বেশি দুর্গম ভোটকেন্দ্রে বৃহস্পতিবার ব্যালট পেপার চলে গেছে। যাতায়াত পথ বিবেচনায় এসব কেন্দ্রে আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হয়।

ইসির তথ্যানুযায়ী, দ্বাদশ নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭৬ লাখ এবং নারী ৫ কোটি ৮৯ লাখ। আর ট্রান্সজেন্ডার ভোটার ৮৪৯ জন। এবার ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট এক হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৫৩৪ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন। বিএনপিসহ নিবন্ধিত ১৬ রাজনৈতিক দল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ভোট ঠেকানোর আন্দোলনে রয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, প্রায় ৮ লাখ সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী তারা পোলিং কালেকশনের সাথে সম্পর্কিত থাকবেন। ওরা ভোটগ্রহণ করবেন। আরও এক লাখ স্ট্যান্ড বাই থাকবেন। ৯ লাখ আমাদের প্রস্তুত আছে। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সংস্থাগুলো সব মিলিয়ে আনসার ও ভিডিপি, র‌্যাব, বিজিবি সব মিলিয়ে ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মাঠে আছেন। মাঠে থাকবে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত। তো এটি একটি বেশ বড় কর্মযজ্ঞ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রায় ৩ হাজার ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে রয়েছে।

নির্বাচন উপলক্ষ্যে আজ মধ্যরাত থেকে আগামীকাল মধ্যরাত পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে ৫ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত। তবে ভোটারদের চলাচলের সুবিধার্থে প্রাইভেট কার ও গণপরিবহনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে। ইসির অনুমোদনপ্রাপ্ত মোটরসাইকেল ও যান চলাচল এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

এবারের নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক শোকজ, তলব, সতর্ক ও জরিমানার পরও প্রার্থীদের বাগে আনতে পারছে না ইসি। গতকালও কয়েকজন প্রার্থী ও তাদের সমর্থককে শোকজ করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ও সমর্থকদের এ পর্যন্ত ৫৮৯টি শোকজ ও তলব নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে গত বুধবার নির্বাচনি মাঠের নিরাপত্তায় মাঠে নেমেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর মাঠে নামেন পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। তারা নির্বাচনি মাঠে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছেন। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার সদস্যরা গতকাল শুক্রবার মাঠে নামছেন। আজ থেকে মাঠে নামছে ৬৫৩ বিচারিক হাকিমও। এর আগে ভোটের মাঠের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে ইসি। বৈঠকে বাহিনীগুলোর প্রধানরা মাঠের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পুরোটাই ইসিকে অবহিত করেছেন। ইসির পক্ষ থেকেও তাদের সর্বশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত