ঢাকা ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সরকারের সহযোগিতা পেয়ে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে : সিইসি

ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশ
সরকারের সহযোগিতা পেয়ে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সরকারের সহযোগিতা পেয়েছিলাম বলে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সহজ হয়েছে। গতকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের চাপ কেমন জানতে চাইলে সিইসি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনকে সম্ভব, সেটা আমরা আগেও বলেছি। কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকে। সেক্ষেত্রে আমরা দেখেছি দলীয় সরকারের অধীনে, সরকারের যে পলিটিকাল উইল অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার, সেটা ছিল। সেই সাথে সরকারের তরফ থেকে আন্তরিকতা ছিল। নিশ্চয়তা বিধান করার কথা ছিল, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যে সহযোগিতা করার কথা ছিল, সে সহযোগিতা পেয়েছিলাম বলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সহজ হয়েছে, আমরা করতে পেরেছি।

আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বোঝা যাবে ফলাফলের পরে। এটা আপনারা (গণমাধ্যম) বলবেন, আমরা না।

ভোট পড়ার হারের বিষয়ে সিইসি বলেন, এখনো নিশ্চিত করে ভোট কাস্টের পারসেন্টিজের বিষয়টা বলা যাচ্ছে না। এমনিতে আমরা যেটা পেয়েছি ৪০ শতাংশের মতো ন্যাশনাল ওয়ারি। তারপরে ড্যাশবোর্ডে ১০০% ইয়েটা (ভোটের হার) আসেনি। এন্ট্রি হয়নি। তারপরও বিষয়টি ব্যত্যয় হতে পারে। তারপর এটাকে গুন করতে হবে ওই বিভাজক দিয়ে ৪০% যে ফলাফলটা আসছে, এটি এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য। তবে এটা কিছুটা ব্যত্যয় হতে পারে আরো তথ্য আসার পরে এই পার্সেন্টেজ বাড়তেও পারে, নাও পারে। এই নির্বাচন নিয়ে স্বস্তির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বড় জিনিসটা হচ্ছে, মোটামুটিভাবে নির্বাচনে আমাদের যে একটা শঙ্কা ছিল, ভোটার উপস্থিতি হয়তো আরো অনেক কম হবে।

এটার কারণ হচ্ছে একটি জাতীয় নির্বাচনে বড় একটি পক্ষ নির্বাচন বর্জন করে পরোক্ষভাবে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে থাকে পরোক্ষভাবে। তার কিছু সিম্পটম হয়তো ওটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। কিন্তু কয়েকটি কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতদিন একটি ট্রেনে আগুনের মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। অনেকের মনেই এগুলো দেখে এক ধরনের শঙ্কা জাগ্রত হতে পারত যে নির্বাচনটা সহিংস হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি অনেক ভোটার স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের চেষ্টা করেছে।

সিইসি বলেন, ২৯৯ আসনে নির্বাচন হয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে সর্বক্ষণ খোঁজখবর রেখেছিলাম। আমি কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরেছি। আমার সহকর্মীরাও ঘুরেছে। আমরা যেগুলো দেখেছি, পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ছিল। আমরা পরে টিভিতে দেখেছি। সহিংসতার ঘটনা গুরুতর কিছু ঘটেনি। এজন্য কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করতে হয়েছে। একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে হয়েছে। একটি বিষয় স্বস্তিদায়ক নির্বাচনি সহিংসতায় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। কিছু আহত হতে পারে। তবে কিছু জায়গায় অনিয়ম হয়েছে। কিছু জায়গায় সিল মারা হয়েছে। কিছু ফলস নিউজও এসেছিল। চেক ক্রস চেক করে নিশ্চিত হওয়ার পর রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সিইসিসহ অনান্য নির্বাচন কমিশনাররা সারাদেশে চষে বেড়ানোয় ভোট নিয়ে আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মিটিংয়ের সময় তাদের (প্রার্থীরা) অনাস্থার কথা বলেনি। তারা কিন্তু প্রশাসন ও পুলিশের ব্যাপারে খুব সামান্য দু-চারটি অভিযোগ ছাড়া অধিকাংশই আমাদের বলেছেন প্রশাসনের আচরণে আমরা পক্ষপাতিত্ব দেখছি না। আর যাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পেয়েছি, তাদের উইথড্র করেছি।

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনটা কতটা স্বস্তিদায়ক ছিল? জানতে চাইলে সিইসি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনকে সম্ভব সেটা আমরা আগেও বলেছি। কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকে। সেক্ষেত্রে আমরা দেখেছি দলীয় সরকারের অধীনে, সরকারের যে পলিটিক্যাল উইল অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার সেটা ছিল। সেই সাথে সরকারের তরফ থেকে আন্তরিকতা ছিল। নিশ্চয়তা বিধান করার কথা ছিল, প্রকাশ্যে বলা হয়েছিল নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে যে সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন ছিল, সেই সহযোগিতা পেয়েছিলাম বলে এটাকে বলা হয় সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়েছে।

আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বোঝা যাবে ফলাফলের পরে। এটা আপনারা বলেন। জনগণ কী বলেন। গণমাধ্যমে কীভাবে উঠে আসে। ওর ওপর নির্ভর করবে, আমরা বলতে পারব নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তো গ্রহণযোগ্য হয়েছে এখনো বলিনি। ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর চূড়ান্ত মূল্যায়নটা যখন হবে। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত