শপথের পর ৩৬ মন্ত্রীর দপ্তর বণ্টন

* শপথ নিলেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা * নতুন ইতিহাস গড়লেন শেখ হাসিনা

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

শপথ নিলেন দ্বাদশের মন্ত্রিসভার সদস্যরা। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নিয়মানুযায়ী প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পরে পর্যায়ক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান।

গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করা হয়। এরপর নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করা হয়।

এ শপথের মধ্যদিয়েই টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিল আওয়ামী লীগ। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পঞ্চম মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন। এছাড়া শেখ হাসিনা অষ্টম বারের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রথম নির্বাচনে অংশ নেন ১৯৮৬ সালে গোপালগঞ্জ-৩ আসনে। সেই থেকে প্রতিবারই জয় লাভ করেছেন এই আসনে। অষ্টম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নতুন ও পুরোনোর সমন্বয়ে গঠিত মন্ত্রিসভায় এবার ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।

মন্ত্রীরা হলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া তিনি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, কৃষিমন্ত্রী আব্দুল শহীদ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান, ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, রেলমন্ত্রীর জিল্লুর হাকিম, পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ডা. দীপু মনি, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় জাঙ্গাঙ্গীর কবির নানক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এছাড়া টেকনোক্রেট কোটায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ডা. সামন্ত লাল সেন।

প্রতিমন্ত্রীরা হলেন- মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বেগম সিমিন হোসেন (রিমি), বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় নসরুল হামিদ বিপু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ মন্ত্রণালয় জুনাইদ আহমেদ পলক, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জাহিদ ফারুক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় মোহাম্মদ আলী আরাফাত, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় মো. মহিববুর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শফিকুর রহমান চৌধুরী, বাণিজ মন্ত্রণালয় আহসানুল ইসলাম (টিটু), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় রুমানা আলী টুশি। বঙ্গভবন সূত্র জানিয়েছে, শপথ অনুষ্ঠানের জন্য দরবার হলে ১ হাজারের মতো অতিথির বসার ব্যবস্থা করা হয়। সামনের সারির চেয়ারগুলোয় বসার জন্য নামের ট্যাগ লাগানো হয়। ফুল দিয়ে সাজানো হয় দরবার হলে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথ মঞ্চ।

একসঙ্গে শপথ নেয়ার সুবিধার জন্য বসানো হয় মাইক স্ট্যান্ড। শপথ অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গভবনের মাঠে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। শপথ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ অতিথিদের দাওয়াতপত্র পাঠানো হয়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও তার ছেলে রেদোয়ান সিদ্দিকী ববি, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের প্রমুখ। উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ। এবারের ভোটে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে দলটি।