ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উন্মুক্ত নির্বাচনে বাংলাদেশ বিশ্বে এক অনন্য মডেল

উন্মুক্ত নির্বাচনে বাংলাদেশ বিশ্বে এক অনন্য মডেল

উন্মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বিশ্বে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। দ্বাদশের ভোটে শান্তিপূর্ণ ও জনগণের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে। যা গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও ৩৮২ জন নির্দল প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। এবার ভোটে অংশ নেওয়ার বিষয়টি অবাধ রেখেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দল মনোনীত প্রার্থীদের পাশাপাশি মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা ভোটে লড়ার সুযোগ পেয়েছে। যা দলীয় রাজনীতির ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। এরআগে দেশের রাজনীতিতে এমন সুযোগ দেননি কোনো দলই। অবশ্য দ্বাদশের ভোটে অংশ নেয়নি কয়েকটি রাজনৈতিক দল। ভোট বিরোধীতায় পূর্ণ ইন্ধন জুগিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। সচেতন জনগণ ভোটমুখি ছিলেন। তারা সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় আস্থা রেখেছেন। সাংবিধানিক ব্যবস্থায় বিএনপির আস্থা না থাকায় জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সঙ্কুচিত করতে চায়। বেশ কয়েক বছর ধরেই সংবিধানের আলোকে ভোটের বিরোধিতা করে আসছে তারা। গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করে সংবিধান বদলের অপচেষ্টায় লিপ্ত বিএনপি-জামায়াত জোট। তবে সংবিধানের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া এবার আদর্শ নির্বাচন করে দেখিছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যেখানেই নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে, সেখানেই ব্যবস্থা নিয়েছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ হয়নি। নির্বাচন কমিশনারদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালনেও কোথাও বাধা দেওয়া হয়নি। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে পার পায়নি ক্ষমতাসীন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারাও। তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে সব ধরনের ব্যবস্থাও নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।’ অবশ্য ইসির এ কতৃত্বের পেছনে ছিলেন বঙ্গবন্ধু তনয়া রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। স্বাধীন ও কতৃত্বপূর্ণ নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এর ফলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনসাধারণের আস্থা বেড়েছে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোট জনমনে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। গাজীপুরে অবাধ-সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক ভোট উপহার দিয়ে জনসাধারণের আস্থা অর্জন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অংশ না নিলেও ভোট নিয়ে জনসাধারণের আগ্রহ ছিল বেশ। দুয়েকটি অপ্রতিকর ঘটনা ছাড়া ৭ জানুয়ারি দেশজুড়ে নির্বিঘ্নে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘নির্বাচনকে উন্মুক্ত করার মধ্যদিয়ে বিশ্বে এক নতুন মডেল উপস্থাপন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দ্বাদশের ভোট উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। শেখ হাসিনা আজকে যা চিন্তা করেন, বিশ্ববাসী তা অনেক পরে অনুধাবন করেন। কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে না আসলেও ভোট উৎসবমুখর পরিবেশে হয়েছে। অবাধ-সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে। যারা ভোট বর্জন করেছে তাদের কোনো জনভিত্তি নেই। তাদের জন্ম হয়েছে সেনা শাসকের পকেট থেকে।’

দ্বাদশের ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের মতে, এবারের নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়েছে। দ্বাদশের ভোট পর্যবেক্ষণে মাঠে ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভারত ও রাশিয়াসহ ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষক। ভোটে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর থেক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অভিনন্দন জানানো অব্যাহত রেখেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২৯৯ আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে দলটি। নিরঙ্কুশ বিজয়ের পেছনে দলটির ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ নির্মাণের ঘোষণা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে- বলে মনে করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। তাদের মতে, আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। তার ফলে জনসাধারণ ব্যালটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনরায় অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেশের মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছে। বিএনপি-জামায়াতের গতানুগতিক রাজনীতির প্রতি দেশের মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। তাদের হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও এর মতো ধ্বংসাত্মক রাজনীতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত