সংরক্ষিত মহিলা আসনে যোগ্যদের খুঁজছে আ.লীগ

প্রথম অধিবেশনে থাকছে ফাঁকা

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাহাত হুসাইন

বছরের শুরুতেই মিটেছে দ্বাদশের ভোট। ৩০ জানুয়ারি বসছে সংসদের প্রথম অধিবেশন। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টায় নতুন-পুরাতন এমপিদের পদচারণায় মুখর হবে জাতীয় সংসদ। সংসদের প্রথম অধিবেশনে ফাঁকা থাকছে সংরক্ষিত মহিলা আসন। জানুয়ারি পেরিয়ে ফেব্রুয়ারিতে সংরক্ষিত ৫০ নারী আসনে ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিয়মানুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিদের নির্বাচিত করতে হবে। সংরক্ষিত মহিলা আসনে যোগ্যপ্রার্থীদের খুঁজতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ।

জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়নবঞ্চিত নারী নেত্রী; দলের জন্য যাদের ত্যাগ রয়েছে। এছাড়া সাবেক ছাত্রনেত্রী, শিক্ষক, উদ্যোক্তা, অভিনেত্রী, শিল্পী, ব্যবসায়ী, দলের জন্য নিবেদিত অন্যান্য কর্মী বিশেষ করে মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ নেত্রীরা প্রাধান্য পাবে। নৌকা পেয়েও যারা জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতায় ছাড় দিয়েছেন কিংবা ভোটে হেরেছেন, সেসব নারী নেত্রীও সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন। এক্ষেত্রে ১৪ দলের দুই-একজন নারী নেত্রীও এগিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ নির্মাণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে দশম ও একাদশে বঞ্চিত জেলা থেকে সংরক্ষিত আসনে অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের মতে, যারা দলের ও সরকারের দুর্দিনে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, বিভিন্ন সময়ে দলের জন্য অবদান রেখেছেন, সহযোগী সংগঠনে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন- এমন জনপ্রিয় নারী নেত্রীরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। এছাড়া ১৪ দলের দুই-একজন প্রাধান্য পেতে পারেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মোট আসন পেয়েছে ২২৩টি। প্রতি ৬ আসনে একজন করে সংরক্ষিত মহিলা এমপি নির্বাচিত করার বিধান আছে। সে হিসেবে আওয়ামী লীগ পাবে ৩৭টি আসন। জাতীয় পার্টি ১১ এমপির বিপরীতে আসন পায় ২টি। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোট করলে পাবে ১০টি আসন। তবে একটি করে আসন জেতায় ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও কল্যাণ পার্টি সংরক্ষিত কেনো আসন পাবে না।

সংরক্ষিত আসনের বণ্টনের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘সংরক্ষিত আসনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেওয়া হবে, কোটা অনুযায়ী দলগুলো আসন বরাদ্দ পাবে। স্বতন্ত্রদের বিষয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ ফরিদুন্নাহার লাইলী, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরুজা বারী এবং সাবেক হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সাবিনা আক্তার তুহিন, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমা আক্তার লাবণ্য, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রোকেয়া সুলতানা, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে হেরে যাওয়া দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, সানজিদা খানম, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপিদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নাটোর-৪ আসনের প্রয়াত এমপি আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী কুহেলী কুদ্দুস মুক্তি, যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপিকা অপু উকিল, যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলিও চান সংরক্ষিত আসনের সদস্য হতে। নাট্য তারকাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন, তারিন জাহান, তানভীন সুইটি, রোকেয়া প্রাচী। সিনে তারকাদের মধ্যে অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার। এছাড়া সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অভিনেত্রী তারানা হালিম, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ। অনেক জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেত্রীরাও সংরক্ষিত ৫০ আসনে নৌকার মনোনয়নে এগিয়ে রয়েছেন। উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ১০ জানুয়ারি শপথ নেন। আর পরের দিন ১১ জানুয়ারি শপথ নেন মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা।