ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চমেকে যন্ত্রপাতি সংকট

একটি মেশিন সচল হলে বিকল হয় আরেকটি

একটি মেশিন সচল হলে বিকল হয় আরেকটি

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) যন্ত্রপাতি সংকট প্রকট রূপ নিয়েছে। একটি সচল হলে বিকল হয় আরেকটি মেশিন। দীর্ঘ ১২ দিন বিকল থাকার পর ১৬ জানুয়ারি সচল হয় এনজিওগ্রাম মেশিন। বিকল থাকার সময় বহু রোগী সময়মতো চিকিৎসা সুবিধা নিতে পারেনি। সচল হওয়ার পরই অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাবে এনজিওগ্রাম হয়েছে পাঁচ রোগীর, হার্টে রিং পরানো হয়েছে দুই রোগীর, পার্মানেন্ট পেসমেকার (পিপিএম) স্থাপন করা হয়েছে এক রোগীর। এভাবে সেবা অব্যাহত থাকবে বলে চমেক সূত্র জানিয়েছে। তবে নষ্ট থাকা আরো কয়েকটি মেশিন এখনো সচল হয়নি। এতে রোগী ভোগান্তি সহসা কমছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশীষ দে বলেন, চমেকে এনজিওগ্রাম মেশিনটি কেনার সময় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ারেন্টি দিয়েছিল। এটি বিকল হয় ওয়ারেন্টি পিরিয়ডের মধ্যে। তাই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আরেকটি মেশিন কিংবা মেরামত করার কথা ছিল আগে থেকে। এটি বিকল হওয়ার পর কোম্পানির লোকজন এসে অস্থায়ী পিকচার টিউব লাগিয়ে দিয়েছেন। এতে আমাদের কার্যক্রম চলছে। তবে তারা শিগগিরই অরজিনাল পিকচার টিউব স্থাপন করে দেবে বলেছেন। এরপর আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

চমেক সূত্র জানায়, ক্যাথল্যাব বা কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশনের (এনজিওগ্রাম) মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের মাংসপেশি, ভাল্ব (কপাটিকা), ধমনির পরিস্থিতি জানতে এবং হৃদযন্ত্রের রক্তের চাপ বুঝতে রোগীকে ক্যাথল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়। ত্রুটি ধরা পড়লে প্রয়োজনমতো রক্তনালিতে স্টেন্ট বা রিং পরানো, পেসমেকার বসানো, সংকুচিত ভাল্বকে ফোলানোসহ বিভিন্ন অস্ত্রোপচার করা হয়।

জাপানের শিমার্জু ব্র্যান্ডের দুটি এনজিওগ্রাম মেশিনের একটি নষ্ট হয়ে যায় প্রায় আড়াই বছর আগে। বাধ্য হয়ে বাকি একটি মেশিন দিয়ে কাজ চালাতে হতো। কিন্তু কাজের চাপ বাড়ার কারণে হঠাৎ করে গত ৪ জানুয়ারি থেকে একমাত্র এনজিওগ্রাম মেশিনটিও বন্ধ হয়ে যায়। এতে রোগীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। চমেকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিকল হয়ে থাকা অপর মেশিনটি সচল করার প্রক্রিয়া চলছে। দুটি মেশিন একযোগে চললে রোগীদের ভোগান্তি আগের মতো হবে না। এতে দরকারি সময়ে রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।

চমেকের হুদরোগ বিভাগের এক নার্স জানান, এনজিওগ্রাম মেশিন সচল হওয়ায় রোগীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। গত ৪ জানুয়ারি এক রোগীর হার্টের রিং পরানোর সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় এনজিওগ্রাম মেশিন। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। গত বুধবার এনজিওগ্রাম মেশিন সচল হওয়ার দ্বিতীয় দিন চার রোগীর হার্টে রিং পরানো হয়েছে। এছাড়া এনজিওগ্রাম হয়েছে ছয়জনের। এর আগে গত মঙ্গলবার প্রথম দিন এনজিওগ্রাম করা হয় পাঁচ রোগীর, হার্টে রিং পরানো হয় দুই রোগীর এবং পিপিএম স্থাপন করা হয় একজন রোগীর। চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসক জানান, এনজিওগ্রাম মেশিন সচল হওয়ার পর পরই চিকিৎসা সেবা শুরু করা হয়। আমরা জরুরি ইন্টারভেনশনাল কাজসহ সব ধরনের কাজ করতে পারছি। হাসপাতালের ভর্তি অনেক রোগীর হার্টে জরুরি ভিত্তিতে টেম্পোরারির পেসমেকার (টিপিএম) স্থাপন করতে হয়। মাঝখানে মেশিন নষ্ট থাকার কারণে এনজিওগ্রাম করা, রিং পরানো, টিপিএম কিংবা পিপিএম স্থাপনের কাজ আমরা করতে পারিনি। এখন মেশিন সচল হওয়ায় রোগীরা এর সুফল পাচ্ছে। তবে মেশিনের সরবরাহ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আমাদের জানিয়েছে, যেহেতু এখন অস্থায়ী টিউব দিয়ে কাজ হচ্ছে, তাই মেশিনের ওপর যাতে অত্যাধিক চাপ না পড়ে, সেদিকে মনোযোগ দিয়ে করার জন্য অনুরোধ করেছেন। চমেকের সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্যাথল্যাব বা কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশনের (এনজিওগ্রাম) মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের মাংসপেশি, ভাল্ব (কপাটিকা), ধমনির পরিস্থিতি জানতে এবং হৃদযন্ত্রের রক্তের চাপ বুঝতে রোগীকে ক্যাথল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়। ত্রুটি ধরা পড়লে প্রয়োজনমতো রক্তনালীতে স্টেন্ট বা রিং পরানো, পেসমেকার বসানো, সংকুচিত ভাল্বকে ফোলানোসহ বিভিন্ন অস্ত্রোপচার করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত