ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কুমিল্লায় অবৈধভাবে চলছে ১০৭টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার

অধিকাংশের নেই জনবল-যন্ত্রপাতি
কুমিল্লায় অবৈধভাবে চলছে ১০৭টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার

কুমিল্লা জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মোট ৫৭৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অবৈধভাবে চলছে ১০৭টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তবে বৈধ ৪৬৬টির অনুমোদন থাকলেও অধিকাংশেরই নেই প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি। এদিকে জেলার ২৬টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং চারটি থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নেই। অন্যদিকে মনোহরগঞ্জে ১১টির মধ্যে লাইসেন্স নেই চারটির, লালমাইতে ১১টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ছয়টির, নাঙ্গলকোটে ১৮টির মধ্যে লাইসেন্স নেই সাতটির, মুরাদনগরে ৩৫টির মধ্যে লাইসেন্স নেই চারটির, বরুড়ায় ১৭টির মধ্যে লাইসেন্স নেই পাঁচটির, বুড়িচংয়ে পাঁচটির মধ্যে লাইসেন্স নেই একটির, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১৩টির মধ্যে লাইসেন্স নেই পাঁচটির, তিতাসে ১৮টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৯টির, মেঘনায় ১০টির মধ্যে লাইসেন্স নেই আটটির, দাউদকান্দিতে ৫৯টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ১০টির, লাকসামে ৪০টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৯টির, চৌদ্দগ্রামে ২২টির মধ্যে লাইসেন্স নেই আটটির, চান্দিনায় ২৩টির মধ্যে লাইসেন্স নেই পঁচাটির, হোমনায় ১৮টির মধ্যে লাইসেন্স নেই পাঁচটির এবং আদর্শ সদরে ১৪টির মধ্যে লাইসেন্স নেই একটির। দেবিদ্বারের ৩৮টির মধ্যে সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স আছে। লাইসেন্স নেই এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৩টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকলেও চারটি প্রতিষ্ঠান আবেদনই করেনি। এছাড়া নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে গত কয়েক দিনে জেলার মোট ২৬টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলার হোমনা উপজেলার বেসরকারি চারটি হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন না থাকা, ল্যাব পরিচালনার টেকনিশিয়ান না থাকা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিচালনা করায় গত রোববার দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বেসরকারি হাসপাতালের মালিক জানান, পরিবেশ সনদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সনদ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, আয়কর সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্সসহ বিভিন্ন শর্তপূরণের মাধ্যমে একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স মিলে। তাই অনেকেই এসব শর্তপূরণ করে লাইসেন্স না পেলেও ব্যবসা শুরু করে দেন। তবে অভিযোগ রয়েছে নানা শর্তে লাইসেন্স দেয়া হলেও সরকারি তদারকির অভাবে অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু করা হয়। কিন্তু পরে এসব প্রতিষ্ঠানে দক্ষ প্যাথলজিস্ট, চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা নার্স থাকা বাধ্যতামূলক হলেও অধিংকাংশ প্রতিষ্ঠানে এসব শর্ত পালন হচ্ছে না। কুমিল্লা বেসরকারি ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইস আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের আগে উচিত প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স গ্রহণ, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা আগেই প্রতিষ্ঠান খুলে বসি। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন, আশা করি কুমিল্লার লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের তালিকা এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে, যাদের কাগজপত্র সঠিক আছে ও লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তাদের বিষয়ে হয়তো অধিদপ্তর নির্দেশনা দেবে। অপর দিকে বেশ কিছু অনিয়মের কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত