ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ময়মনসিংহে ২০০ মণ দুম্বার গোশত বিতরণে অস্বচ্ছতা

ময়মনসিংহে ২০০ মণ দুম্বার গোশত বিতরণে অস্বচ্ছতা

ময়মনসিংহে প্রায় ২০০ মণ দুম্বার গোশত বিতরণে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য সৌদি সরকার থেকে পাঠানো এই দুম্বার গোশত বিতরণে এমন অস্বচ্ছতার ঘটনায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে সচেতন মহলে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা অফিস সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে ৪০০ শত কার্টুন দুম্বর গোশত এই জেলার ১৩টি উপজেলার জন্য বরাদ্দ আসে মন্ত্রণালয় থেকে। পরে ওই দিনই তা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলাগুলোয় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিটি কার্টুনে ২০ থেকে ২৫ কেজি করে গোশত থাকার কথা রয়েছে বলেও জানায় সূত্রটি।

সূত্র মতে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব দুম্বার গোশত দরিদ্র, দুস্থদ্রে এবং এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। তবে এই নির্দেশনা উপেক্ষা করেছেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা- এমন অভিযোগ একাধিক এতিমখানা কর্তৃপক্ষের।

জেলার সদ্র উপজেলার খাগডহর দারুল কোরআন এতিমখানা ও মাদ্রাসার পরিচালক মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম জানান, আমরা দুম্বার গোশত পাইনি। কবে কখন কারা তা বণ্টন করেছে, তা আমিসহ অনেকেই জানেন না।

ময়মনসিংহ নগরীর দিঘারকান্দা আল মানার এতিমখানা ও মাদ্রাসার পরিচালক মুহাম্মদ সাইয়েদুর রশিদ বলেন, দুই বছর ধরে আমি এই প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত সুপার পদে দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠানের এতিমরা এবার এবং গত বছরও দুম্বার গোশত পায়নি। একই অবস্থা সদর ও ত্রিশাল উপজেলাসহ জেলার ১৩টি উপজেলাতেই। আর এ কারণেই দুম্বার গোশত দরিদ্র ও দুস্থদ্রে মধ্যে বিতরণ না করার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। তিনি তার ব্যক্তিগত আইডিতে পোস্ট করে বলেন, উপজেলা পরিষদে গরিব অসহায় দুস্থদের জন্য আসা দুম্বার গোশত মুহূর্তেই হাওয়া। পৌরসভাসহ উপজেলার সব ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত গরিব অসহায়দের এই সামান্য বিষয়টিও দুর্নীতির বাহিরে নয়। গরিব অসহায়দের জন্য বরাদ্দ দুম্বার গোশত সুষ্ঠু বণ্টন না করে অন্যদের দিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অনেকেই অভিযোগ করছেন। গারিবের হক গরিবকে বণ্টন না করায় তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার শাহ আলামিয়া আল-আমিন মোহাইমিনুল ইসলামিয়া এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শামসুল আলম খান বলেন, এই এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মালেক সরকার উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় গত বছর উপজেলার ২১টি এতিমখানা দুম্বার গোশত পেয়েছিল। কিন্তু এইবার তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার পর কেউ দুম্বার গোশত পায়নি। ইউএনওকে (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ফোন করলে তিনি বলেন, আমি জানি না, বলেই তিনি তড়িগড়ি করে ফোন রেখে দেন। পরে পিআইওকে ফোন করলে তিনি জানান, ইউএনও স্যার এবং সংসদ সদস্য বণ্টন করেছেন, আমি জানি না। শুনেছি এবার ৩২ কার্টুন গোশত এসেছিল। তবে এই ঘটনার বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করেও ফুলবাড়ীয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং পিআইও’র বক্তব্য জানা যায়নি। এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছানুয়ার হোসেন বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলাগুলোয় দুম্বার গোশত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কে, কোথায়, কীভাবে তা বণ্টন করেছে, আমার জানা নেই। আপনি উপজেলাগুলোয় খোঁজ নেন। কিন্তু বারবার ফোন করলেও দুম্বার গোশত বণ্টন করা হয়েছে জানালেও তারা বণ্টনের তালিকা দিতে পারবে না বলেও জানিয়েছেন জেলার একাধিক পিআইও।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত