শিগগিরই প্রশাসনে পদোন্নতি

বিবেচনায় আসছে অতিরিক্ত সচিব

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ফারুক আলম

ফের প্রশাসনে পদোন্নতি আভাস মিলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে শিগগিরই নিয়মিত ১৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হবে। পদোন্নতির জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) বৈঠক অব্যাহত রয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি বিবেচনায় নিয়েছে সরকার। আগামী মাসের মধ্যেই পদোন্নতি-সংক্রান্ত আদেশ জারি হতে পারে। এছাড়া মার্চের মধ্যে বেশ কয়েকজন সচিব অবসরে যাচ্ছেন। সেখানেও পদোন্নতি আসতে পারে।

জনপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগমুহূর্তে ১১ নভেম্বরে প্রথম প্রজ্ঞাপনে ২৩১ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত ৯ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর আগে ১২ মে নিয়মিত ১৭ ব্যাচসহ বঞ্চিত ১১৪ জন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিদেওয়া হয়। সেপ্টেম্বরে ২২ ব্যাচসহ বঞ্চিত উপসচিব পদমর্যাদার ২২১ কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পান।

পদোন্নতিবঞ্চিত কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, প্রশাসনের বিধিমালা অনুযায়ী যোগ্যতা থাকার পরও পদোন্নতিবঞ্চিত হলে দপ্তরের কাজে মনোবল ভেঙে যায়। নিজের অজান্তেই মনে হতাশা ভর করে বসে। পরিবার ও সহকর্মীদের কাছে ছোট ছোট মনে হয়। তাই গত বছরগুলোতে যাদের পদোন্নতি আটকে রাখা হয়েছে, এবার তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে পদোন্নতি দেওয়া প্রয়োজন। এতে প্রশাসনের কাজের গতি বাড়বে।

সূত্র মতে, অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিতে কিছুদিন ধরেই প্রক্রিয়া চলছে। পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করতে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সভাও হয়েছে। এবারের অতিরিক্ত সচিব পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ১৮ ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় আনা হচ্ছে। পদোন্নতিযোগ্য নিয়মিত মাত্র ১৪২ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। বঞ্চিতসহ মোট ২৫৪ কর্মকর্তা পদোন্নতির বিবেচনায় আনা হয়েছে। যদিও অতিরিক্ত সচিব বা উপসচিবের পদ শূন্য নেই, তারপরও নির্বাচনের আগে সরকার দুই স্তরে পদোন্নতি সম্পন্ন করতে সব কার্যক্রম শুরু করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশি ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় দক্ষ জনপ্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামীর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী জনপ্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই এখন প্রশাসনিক সংস্কার করতে হবে। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রীদের কাজের গতি বাড়ছে। প্রশাসনকে আরো দায়িত্বশীল ও নিজেদের চিন্তা-চেতনা সামনে রেখেই মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তা সাজানো হচ্ছে। বিদ্যমান বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ দপ্তর ও সংস্থাগুলোর কাজ এবং ক্যাডার সার্ভিসগুলোরও পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। বেসরকারি খাতের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকেও প্রশাসনিক সংস্কারে আমলে নিয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মিলিয়ে অতিরিক্ত সচিবের অনুমোদিত পদ আছে ১৪০টি। এই পদে কর্মরত আছেন ৩২২ জন কর্মকর্তা। যুগ্ম সচিবের অনুমোদিত পদ ৩৩২টি। কর্মরত আছেন ৯১৯ জন। উপসচিব পদে অনুমোদিত পদ ১ হাজার ৪২৮টি। কর্মরত আছেন ১ হাজার ৭১১ জন। এরই মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করায় ১৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ নিয়ে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপসচিব এবং যুগ্ম সচিব পদেও পদোন্নতিদেওয়া হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, শিগগিরই মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর অধিদপ্তর, সংস্থা ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামোয় আমূল সংস্কার আনা হবে। দীর্ঘদিন থেকেই সাংগঠনিক কাঠামোতে কোনো সংস্কার আনা যায়নি। কিন্তু এবার গুরুত্ব সহকারে সংস্কারের বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, নিয়ম অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পদোন্নতি যোগ্যদের সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন তাদের আমলনামা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে পদোন?তির বিচেনায় আনা হবে।