ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জিএম কাদের

বর্তমান সংসদে ভারসাম্য রক্ষা হয়নি

বর্তমান সংসদে ভারসাম্য রক্ষা হয়নি

সংসদ সদস্যদের সংখ্যার বিচারে বর্তমান সংসদে ভারসাম্য রক্ষা হয়নি এমন মন্তব্য করে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, আসন সংখ্যার বিচারে এবার সংসদে শতকরা ৭৫ ভাগই ক্ষমতাসীন দলের। স্বতন্ত্র ২১ ভাগ। তারাও প্রায় সরকার দলীয়। ৩-৪ ভাগ শুধু বিরোধীদলীয় সদস্য। তিনি বলেন, ‘এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। এ সংসদ কখনও নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না।’

গতকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথমদিনে স্পিকার নির্বাচনের পর নতুন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। জিএম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। স্পিকারের দায়িত্ব প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তারা দলীয় আনুগত্যে স্পিকার হলেও বাহ্যিকভাবে চেষ্টা করতেন নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করার। আমি আপনার কাছে প্রত্যাশা করছি, আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখবেন।’ স্পিকারের ডান দিকে সরকার দলের আসন এবং বাম পাশে বিরোধীদলের আসন উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দুপক্ষই সামান হবে। একটা হলো সরকারি দল, আরেকটা হলো বিপক্ষ। তারা সংখ্যায়ও কাছাকাছি থাকবে। তাহলে তাদের মধ্যে সমানে সমানে লড়াই হবে। নিজেদের মতামতকে প্রধান্য দিয়ে তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়াঝাটি হবে। সংসদে জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত হবে। এটাই ছিল সংসদ তৈরি করার উদ্দেশ্য।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘জাতীয় সংসদ দলমত সবার মিলনস্থল। সেখানে সরকারি দল এক পক্ষ, সরকারের বিপরীত দল আরেক পক্ষ। নির্বাচন পরবর্তী আসন সংখ্যায় শতকরা ৭৫ ভাগই সরকার দলের। ২১ ভাগ স্বতন্ত্র। তারাও প্রায় সরকার দলীয়। ৩-৪ ভাগ শুধু বিরোধীদলীয় সদস্য। এখানে আসন বণ্টনে ভারসাম্যের যতই সিমিট্রিক্যাল হলেও আসন বণ্টন সিমিট্রিক্যালের অভাব হয়েছে। তাই এটাকে সম্পূর্ণভাবে সুন্দর বলা যাবে না।’

লাল ও সবুজের জাতীয় পতাকার কথা উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘শুধু লাল নয়, শুধু সবুজ নয়। যদি সরকারি দলকে লাল বলি তাহলে এ সংসদ সম্পূর্ণ লালময়। সবুজটা শুধু ছিঁটেফোঁটা। এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বর্তমান সংসদ জাতিকে কতটুকু প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে, তা আশঙ্কার বিষয়। ভালোভাবে বললে বলতে হবে বিতর্কের বিষয়। দুই অংশের কর্মকাণ্ডের ব্যবধান কমাতে পারলে, অর্থাৎ সংসদে সরকার ও বিরোধীদের কর্মকাণ্ডের ব্যবধান কমাতে পারলে যতটা কমবে, ততুটুকু সংসদ কার্যকর হিসেবে গণ্য হবে।’ তিনি বলেন, ‘এ আশঙ্কা অবাস্তব নয়, যদি বলি এ সংসদ কখনেও নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না। সরকারবিরোধীরা যত বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বা করবেন, ততটুকু হ্রাস পাবে।’ সংসদকে কার্যকর ভূমিকায় পরিচালিত করতে কিছু দাবি তুলে ধরেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘বিরোধীদের মতামতকে সংসদে তোলার সুযোগ দেবেন। সংসদের ভারসাম্যের ত্রুটি কমানোর প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।’ তাই স্পিকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত