ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সন্ত্রাস জালিয়াতি ও অপপ্রচার বিএনপির তিন প্রধান উপাদান

বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সন্ত্রাস জালিয়াতি ও অপপ্রচার বিএনপির তিন প্রধান উপাদান

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির রাজনীতির তিনটি প্রধান উপাদান হচ্ছে- সন্ত্রাস-খুন, জালিয়াতি আর দেশবিরোধী অপপ্রচার।’

গতকাল দুপুরে ‘১৯৯৪ সালে লালবাগ ৭ হত্যাকাণ্ড’ স্মরণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা, মিলাদ ও শীতবস্ত্র বিতরণে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরের সঞ্চালনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আসলে বিএনপি-জামায়াত খুনিচক্র। তারা হত্যার রাজনীতিটাই করে। আজ যারা বিএনপির বড় বড় নেতা মির্জা ফখরুল সাহেব, রিজভী সাহেব সবাই বিএনপি ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলানোর আগে অন্য দল করত। জিয়াউর রহমান মানুষের লাশের ওপর দাঁড়িয়েই বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিল। সুতরাং সেই হত্যা-খুন সন্ত্রাসের রাজনীতি থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারে নাই। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে বিএনপি যেভাবে আগুনসন্ত্রাস চালিয়েছে, ২৮ অক্টোবর সমাবেশের নামে একজন পুলিশ সদস্যকে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে এটি মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। ইসরাইলি বাহিনীর অনুকরণে তারা পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সসহ হাসপাতালের ১৯টি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে যা দেশের ইতিহাসে ঘটেনি।’

জালিয়াতি করতে গিয়ে বিএনপি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভুয়া উপদেষ্টাও বানিয়েছিল উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রথমে দেখা গেল সে ইংরেজি ছাড়া কিছুই বলতে পারে না, পরে দেখা গেল যে ‘গড়গড়িয়ে বাংলা কয়’। আপনাদের মনে আছে যে, কংগ্রেসম্যানদের সই জাল করেছিলো বিএনপি এবং ভারতের মন্ত্রী অমিত শাহ’র সাথে কথা হয়েছে বলে একটা ভুয়া অডিও ছেড়েছিল তারা।

মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে বিএনপি ভরাডুবি নিশ্চিত বুঝেই অংশ নেয়নি এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু পারে নাই। এই নির্বাচনকে বৈধতা না দেওয়ার জন্য সরকারকে বৈধতা না দেওয়ার জন্য বিদেশিদের কাছে চিঠি লিখেছে। কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত রাষ্ট্র নতুন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। বহু রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছে আর দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা শুনতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, ভারত, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতসহ ৮০ জন ডিপ্লোম্যাট উপস্থিত ছিলেন।

এ দিন বক্তব্যের শুরুতে মন্ত্রী ১৯৯৪ সালের ৩১ জানুয়ারি শহীদ শাহ আলম, হাফিজ উদ্দীন, দেলওয়ার হোসেন, আনসারউল্লা গাজী, আনোয়ার হোসেন আনু, নজরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ ইউনুসের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলাম। এটি তারা মেনে নিতে পারে নাই। নির্বাচনের পরের দিন এই হতাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এরপরেও অবদমিত হয়নি বরং এই খুনি চক্রকে রুখে দাঁড়িয়েছিল। সেই বিজয়ের যাত্রাপথ বেয়ে ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। ‘টিআইবি’র অভ্যন্তরে দুর্নীতি আছে কি না, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার’ দুর্নীতি সূচকে দেশের অবস্থান প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘দেশে একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারকে পুরো পৃথিবী অভিনন্দন জানিয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত রাষ্ট্র নতুন সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। এটাকে খাটো করার জন্য কিছু একটা বলতে হবে, সে জন্য ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে না কি দুই ধাপ নেমে গেছে বাংলাদেশ। এখন টিআইবির অভ্যন্তরে কোনো দুর্নীতি আছে কি না, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। এভাবে একপেশে রিপোর্ট দিয়ে সরকারকে খাটো করা যাবে না।’ বাংলাদেশে কিছু প্রতিষ্ঠান আছে তারা অন্যদের ক্রীড়ানক হিসেবে কাজ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা যেখান থেকে ফান্ড পায়, যেভাবে প্রেসক্রিপশন দেয় সেভাবেই কাজ করে। তবে এ ধরনের সংগঠন থাকুক আমরা চাই। আমরা মনে করি সিভিল সোস্যাইটি সংস্থাগুলো সরকারের ভুলত্রুটি তুলে ধরতে পারে, সে জন্য এ ধরনের প্রতিষ্ঠান থাকা ভালো। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠান যখন এক চোখা হয়ে যায়, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিএনপির রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা বলে, রিজভী আহমেদের কথা আর টিআইবির বক্তব্য যখন মিলে যায় তখন বোঝা যায়, ‘ডাল মে কুচ কালা হায়’।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত