টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগের সরকার গঠন

সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় মূলমন্ত্র হোক অর্থনৈতিক কূটনীতি

পাল্টে গেছে নির্বাচন নিয়ে বহির্বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শামীম সিদ্দিকী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে যে গভীর অনিশ্চয়তা ছিল, দৃশ্যত তা কেটে গেছে। দেশি-বিদেশি যড়যন্ত্র মোকাবিলা করে একটি উন্মুুক্ত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের অধীনে সরকার গঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এটি টানা চতুথবারের মতো সরকার। দেশে জাতীয় নির্বাচন করতে দেয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন যেন একটা অনিশ্চয়তা ছিল। বিএনপির নেতৃত্বে দেশের কয়েকটি নাম সর্বস্ব সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েই বসে থাকেনি। নির্বাচন প্রতিহত করার ডাক দিয়ে যখন আগুনসন্ত্রাস শুরু করল, তখন মানুষ অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল। অতীতের মতো ভোটকেন্দ্রে আগুন কিংবা ভোট পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিতদের ওপর নাশকতামূলক হামলার আশঙ্কা থাকায় অনেক ভোটার ভোট কেন্দ্রে যাননি। সে কারণে ভোটপ্রদানের হার ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ ছিল। ভোটাররা শঙ্কামুক্তভাবে ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে হয়তো ভোটার উপস্থিতি আরো বেশি হতো। এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে নির্বাচন কমিশন নায্যতা কিংবা বৈধতা বলতে যা বোঝায়, তা পেয়েছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশেও এত বেশি ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না। দেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের ভোট বর্জনের পর ভোট প্রতিহত করার নিমিত্তে জ্বালাওপোড়াও করার মতো পরিস্থিতিতে মানুষ যেভাবে ভোটকেন্দ্রে গেছেন, সেটা গণতন্ত্রেরই বিজয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করার পরই বিভিন্ন দেশ অভিনন্দন জানাতে থাকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর থেকে আওয়ামী লীগবিরোধী মহলের ধারণা ছিল, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের অযাচিত ‘হস্তক্ষেপে’ নির্বাচন ভন্ডুল হয়ে যাবে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ফলাফল ঘোষণা করা ষ ১ম পৃষ্ঠার পর

সম্ভব হবে না। আর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলেও সরকার গঠন করতে পারবে না। সরকার গঠন হলেও সংসদের অধিবেশন বসতে পারবে না। সংসদ বসলেও কার্যক্রম চালাতে পারবে না। সরকার টিকবে না। দেশের বাইরের একটা ‘অলৌকিক’ ক্ষমতা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। অথচ আখেরে কোনো কিছুই হলো না। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোপীয় কাউন্সিল ছাড়াও বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। এই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে যে যুক্তরাষ্ট্র নানা রকম নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ভিসানীতি ঘোষণা করল, সেই দেশটির ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শেখ হাসিনার নেতৃতাধীন নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। জানিয়ে দিলেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারীত্বমূলক সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে। একটি দেশের রাষ্ট্রদূত অন্য দেশে সেই নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সে কারণে পিটার হাসের বক্তব্যের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিব্যক্তিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বাইডেন প্রশাসনের সায় ছাড়া পিটার হাস এমন মন্তব্য করতে পারতেন না। সে কারণে কূটনৈতিক ভাষায় যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। দ্বাদশ নির্বাচন নিয়েও তারা কোনো প্রশ্নের অবতারণা করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে মার্কিন কংগ্রেসে জো বাইডেনের বিজয় পরবর্তী সত্যায়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করায় তিনি বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে বহির্বিশ্বের কাছে মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার মতো ঝুঁকি নিতে চায়নি। কূটনৈতিক অঙ্গনের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি নেই। বর্তমান সরকার একলা নীতিতে বিশ্বাস করে না। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ কোনো প্রভাবশালী দেশের লেজুড়বৃত্তি করার নীতিতে বিশ্বাস করে না। বিশেষ কোনো বলয়ের মধ্য থেকে দেশ পরিচালনার নীতিতেও বিশ্বাসী না বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ ভূ-রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন এমন অবস্থানে রয়েছে যে কোনো দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। তা না হলে সরকার গঠন করার পরই বিশ্বনেতারা যেভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে থাকেন, তা ছিল রীতিমতো বিস্ময়কর। অবাধ, সুুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে কোনো কূটনৈতিক চাপ ছিল না। তবে আওয়ামী লীগ চতুর্থ মেয়াদে সরকার পরিচালনা করতে এসে সবচেয়ে যে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে, সেটি হচ্ছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা। সেই সঙ্গে বাজার অস্থিরতা। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও আজ অথনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে নেই। বৈশ্বিক মহামারি করোনার পর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের পণ্য সরবরাহ পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। অতপর গত অক্টোবর মাস থেকে চলছে ইসরাইল-হামাস লড়াই। আর এখন ইয়েমেন, ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থানরত ইরান সমর্থিত হেজবুল্লাহগোষ্ঠী ও হুতি বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও আরেকটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। লোহিত সাগরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূণ নৌ-রুটে চলাচলকারী বিদেশি জাহাজের ওপর হুতি বিদ্রোহীদের হামলার কারণে পণ্যবাহী জাহাজগুলো নিরাপদ রুটে চলতে গিয়ে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে বিলম্বে গন্তব্যে দেশ পৌঁছাচ্ছে। সে কারণে পরিবহন ব্যয় ও সরবরাহের নির্দিষ্ট সময় বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাপর্যায়ে পণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে। আর এই বিরূপ পরিস্থিতির সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পণ্যের মূল্যে। পাশাপাশি ডলার সংকট আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতিকে তছনছ করে দিয়েছে। বাংলাদেশও বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিমন্ডলের বাইরে নয়। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাংলাদেশ যে সংকটময় অবস্থার মধ্যে পড়েছে, তা থেকে উত্তোরণের জন্য এই মুহূর্তে একটি জোরাল অর্থনৈতিক কূটনীতি দরকার।

‘বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের নজর ছিল। তবে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মোটাদাগে কোনো মহল কোনো প্রকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার সুযোগ পায়নি। ফলে নির্বাচন নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনের সমালোচনা থেকে বাংলাদেশ উত্তরে গেছে। তবে আগামী দিনে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দরকার একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। বাংলাদেশ কৃষি ও শিল্পবান্ধব একটি দেশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের একটি বিশাল বাজার চাহিদা। এছাড়া বাংলাদেশের অনেক মানুষ বিভিন্ন দেশে বসবাস করায় তাদের কাছে স্বদেশীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য শিল্পজাত পণ্যের চাহিদাও বিশ্বে রয়েছে। বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে সক্রীয় করে তোলার কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও কূটনীতির ওপর জোর দিতে হবে। বাংলাদেশের কোন কোন পণ্যের চাহিদা কেমন, সে সম্পর্কে বিদেশি বন্ধুদের অবহিত হতে হবে। আমাদের পণ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে জানাতে হবে। রপ্তানি বাড়লে আমাদের বৈদেশিক আয়ও বাড়বে। ফলে প্রবাসী আয়ের সঙ্গে পণ্য রপ্তানির আয় যোগ হলে দেশ পরিচালনা করা আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে সহজতর হবে। দেশের সংকটময় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কূটনৈতিক তৎপতার বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার প্রয়োজন। কোভিড মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট ও নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের রপ্তানি বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এতে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই।

বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে দরকার সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের সম্মিলত প্রচেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও অর্থনৈতিক কূটনীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে রপ্তানিকারকদের নিরলস পরিশ্রম আর আন্তরিক প্রচেষ্টা একান্ত প্রয়োজন। একই সাথে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার কর্মপরিবেশের উন্নয়ন, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদনব্যবস্থা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে রপ্তানি বাণিজ্য প্রসারের দিকেও নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশ এরই মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে। এর ফলে স্বল্পোন্নত দেশ থাকা অবস্থায় অনেক অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা আগামী দিনে আর থাকবে না। তাই এখন থেকেই আমাদের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি ও রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জাতীয় রপ্তানিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কৃতি রপ্তানিকারকদের ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি’ প্রদানের মতো স্বীকৃতির পরিধি আরো বাড়াতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ায় বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পিত শিল্পায়নের জন্য ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দ্রুত এবং টেকসই শিল্পায়নে অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় সেবা এবং সময়োপযোগী নীতিমালার মাধ্যমে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় এক নতুন গতি সঞ্চার করবে। ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে অর্থনৈতিক কূটনীতিকে আরো শানিত করতে হবে। উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কার্যকর কূটনৈতিক প্রয়াসের মাধ্যমে বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ ও মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং ভাবমূর্তি সংরক্ষণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতির ভিত্তি হিসাবে পাঁচটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। লক্ষ্যগুলো হলো- বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ বহুমুখীকরণ; রপ্তানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণ; বিদেশে বাংলাদেশি অভিবাসীদের লাভজনক কর্মসংস্থান সৃষ্টি; প্রযুক্তি হস্তান্তর; বিদেশে বাংলাদেশি অভিবাসীদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিতকরণ। এ ক্ষেত্রে বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের কার্যক্রম জোরদার করা দরকার। ৬০টি দেশে বাংলাদেশের ৮১টি কূটনৈতিক মিশন চালু রয়েছে। এছাড়া আরো ১১টি নতুন মিশন স্থাপনের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এসব মিশন প্রধানকে অর্থনৈতিক কূটনীতি সম্পকে সম্যক ধারণা দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগের অন্যতম হলো বিনিয়োগ বৃদ্ধি। শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগের প্রচার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগে যাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসেন সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের শিল্প-কারখানায় কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক আধিক্যের বিষয়টি সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবহিত করতে হবে।

বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে। আমাদের তরুণরা যাতে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি থেকে সম্পূর্ণরূপ উপকৃত হতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো বিকল্প নেই। গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি সফলভাবে স্থানান্তর করার জন্য আমাদের তরুণদের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা এবং উন্নত দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্বের ৪১তম বৃহত্তম, ২০৩৫ সালের মধ্যে ২৫তম বৃহত্তম মর্যাদায় উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী দিনে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরা এগিয়ে নিতে অর্থনৈতিক কূটনীতির পথে হাটতে হবে বাংলাদেশকে। তাহলে আগামী দিনে কোনো অপশক্তি বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান নিতে সাহস পাবে না।