ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সংসদে প্রধানমন্ত্রী

৪৮ দেশ ও ২৫ সংস্থা অভিনন্দন জানিয়েছে সরকারকে

২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতায় নিহত ১৩ জন
৪৮ দেশ ও ২৫ সংস্থা অভিনন্দন জানিয়েছে সরকারকে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৮টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। এছাড়া ২৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিশ্বের ৪১টি দেশ থেকে ১২৬ জন পর্যবেক্ষক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশে আসেন। সরকারিভাবে ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৪৫ জন এবং স্বাধীনভাবে ৭৯ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক এ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নেন। এছাড়া বিভিন্ন দেশের ১৮ জন নির্বাচন কমিশনার ও তাদের প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৮৪টি সংস্থার ২০ হাজার ৭৭৩ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী এবং ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নেন।

ইসি স্বাধীন তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সব প্রশাসনিক, আর্থিক, আইনি, রেগুলেটরি ও লেজিসলেটিভ এবং নীতি প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে ছয় শতাধিক যানবাহনে ভাঙচুর চালিয়েছে এবং তাদের নাশকতায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। হরতাল ও অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর ২৮ অক্টোবর থেকে এ ধরনের সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে ছয় শতাধিক যানবাহনে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৪টি যাত্রীবাহী বাস, ৪৮টি ট্রাক, ২৮টি কাভার্ড ভ্যান বা মালবাহী লরি বা কনটেইনার, তিনটি সিএনজি, চারটি প্রাইভেট কার ও ১১টি পিকআপ ভ্যান রয়েছে। পাঁচটি ট্রেন হলো- যমুনা এক্সপ্রেস : ঢাকা কমিউটার, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস ও টাঙ্গাইল কমিউটার। এ ছাড়া রয়েছে ১৫টি মোটরসাইকেল, তিনটি লেগুনা, একটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস (মধ্যরামপুরা, ফেনী) ও একটি অটোরিকশা। এ ছাড়া একটি উচ্চ বিদ্যালয়, ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি বসতঘর, একটি বৌদ্ধ মন্দির একটি নৌকাসহ সর্বমোট ৩২৮টি যানবাহন ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

যানবাহন জ্বালিয়ে দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর হরতাল-অবরোধে ড্রাইভার, হেলপার, পুলিশ, বিজিবি, শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বহু লোক নিহত হয়েছেন, আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। বিএনপি ক্যাডাররা অসংখ্য যানবাহন জ্বালিয়ে দিয়েছে। হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতার ঘটনায় সারাদেশে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় নিহত হয়েছেন নয়জন। বিজিবির দুইজন আহত হয়েছেন এবং একটি রিকুইজিশন করা যানবাহনের ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। বিআরটিসি বাস ডিপোর বাস রক্ষা করতে গিয়ে এক আনসার সদস্য ইট পাটকেলের আঘাতে আহত হন। দুই আনসার সদস্য হোসেন আলী ও সুমন আলী বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হন। তাদের বাহিনীর পক্ষ থেকে চিকিৎসা সেবা ও আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, অগ্নি-সন্ত্রাস, নাশকতা, অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড প্রভৃতি অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য দেশে দক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা ও প্রচলিত আইন রয়েছে। হরতাল ও অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন আইনি কার্যক্রম চলমান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত