হোয়াইক্যংয়ের ওপাড়ে গুলি ও মর্টারশেলের বিকট আওয়াজ

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্তের নাফ নদীর ওপাড়ে গত শুক্রবার সারাদিন ও রাতে কোনো গোলাগুলি শব্দ শোনা যায়নি। তবে শনিবার ভোরে আবার শোনা গেছে গুলি ও মর্টারশেলের বিকট আওয়াজ। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল।

এর মধ্যে ঘুমধুম সীমান্তের ওপাড়ে নতুন করে কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও সীমান্তের এপাড়ে তৈরি হয়েছে অবিস্ফোরিত ‘রকেট লঞ্চার’ আতঙ্ক। যেখানে গতকাল সকালেও অবিস্ফোরিত দুটি রকেট লঞ্চার পাওয়া গেছে।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানিয়েছেন, গতকাল ভোরে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কানজর পাড়া সীমান্তের নাফ নদীর ওপাড়ে গুলি বর্ষণ, মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। যতদূর জানা গেছে গতকাল ভোরে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কুমিরখালী এলাকায় সংঘর্ষে গুলি বর্ষণ ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। এতে সীমান্তে এপাড়ের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং এলাকায় কয়েকটি গুলিও এসে পড়েছে।

তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত এটা বন্ধ ছিল। গতকাল ভোরে পর পর শব্দ শোনা গেছে। এখন বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি শব্দ শোনা যাচ্ছে।

তবে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত ওপারে নতুন করে কোনো গোলাগুলির শব্দ শুনা যায়নি। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এপাড়ে গুলি এসে পড়েছিল বলে জানিয়েছেন ঘুমধুমের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ।

তিনি জানান, এ পরিস্থিতিতে ঘুমধুম সীমান্তে একের পর এক অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল শনিবার সকালেও নতুন করে দুটি অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার পাওয়া গেছে, যা লাল পতাকা দিয়ে ঘিরে রেখেছে বিজিবি। এর আগে আরো দুটা রকেট লঞ্চার পাওয়া গিয়েছিল, যা পরে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বান্দরবানের ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডের খেত-খামার, কৃষি জমিতে মিলছে মিয়ানমারের ছোড়া এসব রকেট লঞ্চার। অবিস্ফোরিত এসব গোলা নিয়ে খেলা করছে সীমান্তের বাসিন্দা ও শিশুরা। ফলে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

গতকাল সকালে কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে রকেট লঞ্চালের গোলা পাওয়া রাজিয়া বলেন, কৃষি জমিতে কাজ করছিলাম। তখন দেখি শিশুরা লম্বা লোহার রডের মতো একটি জিনিস নিয়ে খেলছে। তখন তাদের কাছ থেকে এটি নিয়ে বাসা চলে আসি। পরে স্বামী বলে এটি অস্ত্র। তার পরপরই বিজিবিকে এটি হস্তান্তর করি।

সীমান্তের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, গোলাগুলো কত মারাত্মক, তা কেউ জানে না। মূলত এটা যে বিস্ফোরক তাও জানে না সীমান্তের অনেক বাসিন্দা ও শিশুরা। যদিও মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা ও গুলিতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশি এক নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত আটজন।

এদিকে উখিয়ার পালংখালীর পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী।

উখিয়া সীমান্তে মরদেহ উদ্ধার

উখিয়ার রহমতের বিল সীমান্ত এলাকা থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে মরদেহটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। গতকাল দুপুরের দিকে রহমতের বিল সীমান্ত থেকে মরদেহটি বিজিবির সহায়তায় উদ্ধার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন। তিনি বলেন, রহমতের বিল সীমান্ত থেকে একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহটির নামণ্ডপরিচয় পাওয়া যায়নি। পরিচয় শনাক্তকরণে কাজ চলছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতের দিকে রহমতের বিল সীমান্ত এলাকায় মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ। পরে বিজিবি পুলিশকে খবর দেয়। পরের দিন মরদেহটি উদ্ধার করতে গেলে ওপার থেকে গোলাগুলি হওয়ায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ফিরে আসে পুলিশ।